পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২২টি কোম্পানি একই দিন লভ্যাংশ ঘোষণা করল। এই কোম্পানিগুলোর বেশিরভাগের লভ্যাংশই হলো ১০ শতাংশ। নূন্যতম লভ্যাংশের ঘোষণাও এসেছে কোনো কোনো কোম্পানির পক্ষ থেকে।
গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে এই ঘোষণা আসে। সোমবার ঢাকা ও চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে বিজ্ঞপ্তি আকারে এই সিদ্ধান্ত প্রকাশ হবে। সেদিন শেয়ারদরের কোনো মূল্যসীমা থাকবে না।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ
এই কোম্পানিটি ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি লভ্যাংশ পাবে ১ টাকা ২০ পয়সা।
কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৫৫ পয়সা। আগের বছর আয় ছিল ১ টাকা ৪৫ পয়সা। সে বছর লভ্যাংশ দেয়া হয় ১০ শতাংশ বা শেয়ার প্রতি এক টাকা।
জিপিএইচ ইস্পাত
আয় কমে যাওয়ার পর কোম্পানিটি লভ্যাংশ প্রায় এক তৃতীয়াংশ করেছে। এবার তারা ৫.৫ শতাংশ নগদ ও সমপরিমাণ বোনাস মিলিয়ে ১১ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি পাবেন ৫৫ পয়সা। আর প্রতি ২০০ শেয়ারে পাবেন ১১টি শেয়ার। আগের বছর লভ্যাংশ ছিল ২০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস।
আগের বছর কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় ছিল ৪ টাকা ১৮ পয়সা, যা এবার নেমে এসেছে ৩ টাকা ৪২ পয়সায়।
কেপিসিএল
এই কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ আর উদ্যোক্তা- পরিচালকদের জন্য ৮ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি এক টাকা আর উদ্যোক্তারা পাবেন ৮০ পয়সা করে।
২০১০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর এক যুগে শেয়ার প্রতি সর্বনিম্ন ৩ পয়সা আয় হয়েছে কোম্পানিটির। আগের বছর শেয়ার প্রতি ৮৭ পয়সা আয় হয়েছিল। লভ্যাংশ দেয়া হয়েছিল ১ টাকা ২৫ পয়সা।
এস্কয়ার নিট
২০১৯ সালে তালিকাভুক্তির পর সর্বনিম্ন ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে বস্ত্র খাতের কোম্পানিটি। আগের তিন বছর লভ্যাংশ এসেছিল ১৫ শতাংশ।
লভ্যাংশ কমালেও কোম্পানিটির আয় বেড়েছে। গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ৩৬ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ২ টাকা ২০ পয়সা।
দেশ গার্মেন্টস
শেয়ার প্রতি আয় অনেকটা কমে গেলেও কোম্পানিটি লভ্যাংশ বাড়িয়েছে। এবার তারা বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ বা শেয়ারপ্রতি এক টাকা করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আগের বছর ছিল অর্ধেক।
এবার কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৫ পয়সা যা গত বছর ছিল ৪০ পয়সা।
লুব রেফ
জ্বালানি খাতের এই কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির পর টাকা দ্বিতীয় বছর ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করল
কোম্পানিটির আয় এবার অনেকটাই কমে গেছে। গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরে শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ১৩ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ৩ টাকা ৪১ পয়সা।
বিডিপেইন্টস
এসএমই মার্কেটে তালিকাভুক্তির পর এই প্রথম লভ্যাংশ ঘোষণা করল কোম্পানিটি। তারা শেয়ার প্রতি দেবে এক টাকা বা ১০ শতাংশ নগদ।
কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ১৬ পয়সা। আগের বছর পুঁজিবাজারে আসার আগে কোম্পানিটির আয় ছিল শেয়ারপ্রতি ৯৭ পয়সা।
একমি পেস্টিসাইডস
ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানটি লভ্যাংশ দেবে ৫ শতাংশ, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা।
গত বছরের নভেম্বরে লেনদেন শুরুর দিন ওই বছরের ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া কোম্পানিটি এবার শেয়ার প্রতি আয় করেছে ১ টাকা ৫১ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ২ টাকা ১২ পয়সা।
আরডি ফুড
আয় বাড়লেও কোম্পানিটি লভ্যাংশ কমিয়েছে। পরিচালনা পর্ষদ ৫ শতাংশ নগদ বা শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ১৮ পয়সা। আগের বছর এটি ছিল ৬৪ পয়সা। সে বছর ৩ শতাংশ নগদ ও ৩ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়েছিল কোম্পানিটি।
ডেফোডিল কম্পিউটারস
আয় সামান্য কমে যাওয়ার পর কোম্পানিটি লভ্যাংশও কিছুটা কমিয়েছে। এবার তারা ৫ শতাংশ নগদ, অর্থাৎ শেয়ার প্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে এবার ৬৭ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৭০ পয়স। সে বছর বিনিয়োগকারীদেরকে শেয়ার প্রতি ৬০ পয়সা বা ৬ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়া হয়।
আলিফ ম্যানুফেকচারিং
কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার প্রতি পাবে ২০ পয়সা।
কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৫৮ পয়সা। আগের বছর এই আয় ছিল ৪৪ পয়সা। তখনও ২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়।
গোল্ডেন হার্ভেস্ট
লোকসান কমার পাশাপাশি কোম্পানিটি লভ্যাংশও কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এবার তারা ২ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ২০ পয়সা লভ্যাংশ দেবে, যা আগের বছর ছিল ৫০ পয়সা।
এই লভ্যাংশ পাবে কেবল সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। উদ্যোক্তা পরিচালকরা কোনো লভ্যাংশ নেবেন না।
কোম্পানিটির এবার শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪৭ পয়সা। আগের বছর শেয়ারপ্রতি ৭২ পয়সা লোকসান দিয়েও এবারের প্রস্তাবিত লভ্যাংশের চেয়ে শেয়ারপ্রতি ৩০ পয়সা বেশি বিতরণ করেছে কোম্পানিটি।
অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ
বিপুল পরিমাণ লোকসান থেকে মুনাফায় ফিরেছে কোম্পানিটি। অর্ধবার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশের দিন ১ শতাংশ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশকেই চূড়ান্ত লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচনা করেছে কোম্পানিটি।
কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২০ পয়সা। আগের বছর লোকসান ছিল ৫ টাকা ৮ পয়সা।
উসমানিয়া গ্লাস
লোকসানের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ব এই কোম্পানিটি আগের তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এবার লভ্যাংশ না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কোম্পানিটি ২০১৭ সাল থেকেই টানা লোকসানে আছে। আগের বছরের তুলনায় লোকসান এবার অনেকটাই কমেছে।
এবার শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ৬৬ পয়সা। আগের বছর এই লোকসান ছিল ৬ টাকা ৬৬ পয়সা।
তুংহাই নিটিং
বস্ত্র খাতের লোকসানি এই কোম্পানিটি গত পাঁচ বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও লভ্যাংশ দেবে না।
আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪২ পয়সা। আগের বছর এই লোকসান ছিল ২৯ পয়সা।