চেক নগদায়নের আগে শেয়ার কেনা যাবে না, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির এমন নির্দেশের জন্য পুঁজিবাজারে সব পক্ষের ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সদস্য ও ব্রোকারেজ হাউসের মালিকদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী।
জুনে অর্থবছর শেষ করা একঝাঁক কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণার পর সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার বড় দরপতনের পর নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এটা ডিভিডেন্ড মৌসুম, বিভিন্ন কোম্পানির ভালো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করছে। এখন মার্কেটে পজিশন নেয়ার সময়। কিন্তু বাজারের কিছু অমীমাংসিত ইস্যুর কারণে এমনটা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘চেক নগদায়ন না করে শেয়ার কেনা যাবে না, বিএসইসির এমন নির্দেশনার কারণে বাজার, বিনিয়োগকারী ও ব্রোকার তিন পক্ষই বঞ্চিত হচ্ছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান নির্দেশনা তুলে নেয়ার কথা জানিয়েছিলেন। কী করবেন, কতক্ষণে করবেন জানি না।
বিএসইসি এমন নির্দেশনা দিয়েছে চেক দেয়ার পর ব্যাংকে তা জমা না দিয়ে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনার ৩৭টি ঘটনা ধরা পড়ার পর। এক টাকা বিনিয়োগ না করেও একটি চক্র এই কৌশলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রশ্নে লালী বলেন, ‘ব্রোকার বা অন্য কেউ অনৈতিকভাবে চেক দিয়ে বিনা পুঁজিতে ব্যবসা করার সুযোগ নিচ্ছে, এই আশঙ্কা থেকে চেক নগদায়ন না করে শেয়ার কেনা বন্ধ রাখা যৌক্তিক নয়। সেটা ঠিক করতে হবে। তাই বলে মাথাব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলা যাবে না।’
তার দাবি, চেক ইস্যু বিনিয়োগকারীর জন্য ক্ষতির কারণ হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ধরা যাক, কোনো বিনিয়োগকারীদের আজকে এক কোটির চেক দিয়ে বললেন যে, ১২০ টাকা দরে এডিএন টেলিকমের শেয়ার কেনেন। চেক নগদায়ন না হলে কেনা যাবে না বলার পরে তিনি তাতে সম্মতি দিলেন। এতে দুই দিন সময় লেগে যাচ্ছে। দুই পর দেখা গেল, ঐ শেয়ারের দাম বেড়ে ১৩৫ টাকা হলো। তখন ওই বিনিয়োগকারী দেখছেন যে দুই দিন আগে কিনতে পারলে ১৫ টাকা কমে কেনা যেত, তখন তিনি আর ওইটা কেনেন না, অপেক্ষা করেন। এতে যেটা হলো, মার্কেট এক কোটি টাকা বিনিয়োগ থেকে বঞ্চিত হলো। অন্যদিকে বিনিয়োগকারী ১৫ টাকা লাভ করতে পারলেন না। ব্রোকারও কমিশন থেকে বঞ্চিত হলো।’
তিনি বলেন, ‘অ্যাজ পার ল যখন চেক রিসিভ করা হয় তখন ইট ইজ অ্যাজ গুড অ্যাজ মানি। যদি বাউন্স করে তখন তো আইনত সাজার ব্যবস্থা রয়েছেই। পৃথিবীর সকল জায়গায় লিগ্যাল টেন্ডার হলো এটাই।’
বিএসইসির দুইটি নির্দেশনা পরস্পরবিরোধী হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে জানান রশিদ ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসের কর্ণধার লালী। তিনি বলেন, ‘তাহলে বিনিয়োগকারী এক কোটি টাকা বস্তায় নিয়ে আসুক। সেখানেও তো বাধা রয়েছে। রেগুলেটর একবার বলছে, সাড়ে আট লাখ টাকার বেশি নগদ ব্রোকারে নেয়া যাবে না আবার চেকেও করা যাবে না। দুই দিকে থেকে হাত বেঁধে দেয়া হচ্ছে, তাহলে বাজার কী আকাশ থেকে আসবে (ভালো হবে)?’