বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পিপিপির কাজে গতি বাড়ানোর তাগিদ সালমান এফ রহমানের

  •    
  • ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ১৭:১২

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আজকে আমাদের যে পাওয়ার জেনারেশন ক্যাপাসিটি আছে, তার ৫৪ শতাংশ বেসরকারি খাতের। বেসরকারি খাতকে আনতে চাইলে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বিদ্যুৎ খাতে যেভাবে কাজ হয়েছে, আমি মনে করি, পিপিপি অথরিটিতেও এভাবে কাজ করার সুযোগ আছে।’ 

দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে ও টেকসই রাখতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে বেসরকারি খাতের সঙ্গে মিলিয়ে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান।

বলেছেন, পাবলিক-প্রাইভেট পাটর্নারশিপ (পিপিপি) ছাড়া আমাদের উপায় নেই।

এফবিসিসিআই মিলনায়তনে ‘দ্য রোল অফ পিপিপি ইন এচিভিং ভিশন-২০৪১’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় শনিবার তিনি এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। সভায় মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সিইই নাসের এজাজ।

প্যানেল আলোচনা করেন পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ, পিপিপির উপদেষ্টা মোহাম্মদ হাসান হায়দার, এফবিসিসিআই প্যানেল উপদেষ্টা ড. শামসুল হক এবং এফবিসিসিআই পরিচালক প্রীতি চক্রবর্তী।

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘পিপিপি অথরিটি করার পর যেসব প্রজেক্ট হয়েছে, আপনারা (ব্যবসায়ী) সেগুলোর কথা বলেছেন, এটা অনেক আগে থেকেও হয়েছে। স্বাধীনতার সময় আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল জিরো রিজার্ভ। আমরা জিটুজি প্রক্রিয়ায় আমদানি করতাম।

‘ঠিক সে সময় বঙ্গবন্ধুর সাথে আমি দেখা করেছিলাম এবং বলেছিলাম যেহেতু আমাদের সমস্যা, আমরা বেসরকারি খাতে মুভ করছি না কেনো। উনি বলেছিলেন তোমরা এটা করতে পার, কিন্তু ৬০ পার্সেন্ট ট্র‍্যাডিশনাল এবং নন-ট্র‍্যাডিশনাল ৪০ শতাংশ রপ্তানি করতে হবে। উনি এটা বিশ্বাস করেছিলেন, দেশকে এগিয়ে যেতে হলে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে নিতে হবে।’

একই ধারবাহিকতায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কাজ করেছেন বলে জানান তিনি। বলেন, ‘তিনি ৯৬ সালে বেসরকারি এয়ারলাইনসকে লাইসেন্স দেন। আমি যেটা বলতে চাই, আজকে যে ডেভেলপমেন্ট হয়েছে, এর মূল কারণ অনেকগুলো। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমাদের বিদ্যুৎ। বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানের পরই আমরা আমাদের অর্থনৈতিক গ্রোথটা করতে পেরেছি।’

দেশে উৎপাদিত বিদ্যুতের বেশির ভাগই বেসরকরি পর্যায় থেকে উৎপাদন হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সালমান এফ রহমান বলেন, ‘আজকে আমাদের যে পাওয়ার জেনারেশন ক্যাপাসিটি আছে, তার ৫৪ শতাংশ বেসরকারি খাতের। বেসরকারি খাতকে আনতে চাইলে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে হবে। বিদ্যুৎ খাতে যেভাবে কাজ হয়েছে, আমি মনে করি, পিপিপি অথরিটিতেও এভাবে কাজ করার সুযোগ আছে।’

তবে এ ক্ষেত্রে দুটো সমস্যার কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘পিপিপি অথরিটির কাজ হলো প্রজেক্ট খোঁজা। প্রস্তাব আসার পর পিপিপির কাজ হলো সে অনুযায়ী কাজ করা। বিশেষ করে যতগুলো পিপিপি আসতেছে, যারা প্রস্তাব দিচ্ছে, তারা বলছে আমি যদি পাই এটা আমি করব। যখন, তারা কাজ পায়, তখন তারা ফাইন্যান্সিং খুঁজে বেড়াচ্ছে, ইনভেস্টর খুঁজে বেড়াচ্ছে। এটা একটা সমস্যা।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা ফাস্ট ট্র‍্যাক করে নিতে হবে। যে প্রস্তাব দেবে, তার কাছে এভিডেন্স দিতে হবে। যে ইক্যুইটিও আমার কাছে আছে, লোনও আমার কাছে। তাহলে আর সমস্যা হবে না। বাস্তবিক অর্থেই পিপিপির অনেক সুযোগ আছে। এখন যখন আমাদের রিজার্ভ কমে আসছে, যে ইকোনমিক কন্ডিশন গ্লোবালি এ অবস্থায় আমাদের পিপিপির প্রজেক্টের দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

‘দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে টেকনোলজি। আমরা দেখেছি কাগজকলমে দেখা যায় তাদের সক্ষমতা আছে। কনট্রাক্ট দিয়ে দেয়ার পর দেখা যায়, তাদের সক্ষমতা নেই। প্রুভেন টেকনোলজি দেখাতে হবে এবং যেটা বললাম ফাইন্যান্সিং তোমার কাছে আছে।’

অবশ্য এসব ক্ষেত্রে ঋণখেলাপিকে বড় সমস্যা হিসেবে তুলে ধরেছেন তিনি। বলেছেন, অন্যান্য দেশে সমাধান আছে। কেউ যদি খেলাপি করে, তাকে একটা এক্সিট দিতে হবে। কোম্পানিকে টেকওভার করে রি-স্ট্রাকচার করেন। যে শাস্তি পাবে, তাকে শাস্তি দেন। কিন্তু, কোম্পানিটাকে রি-স্ট্রাকচার্ড করতে হবে।

সালমান বলেন, ‘খেলাপি দুই ধরনের। এক ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়। আরেকটা হলো আসলেই সে খেলাপি। এ জন্য আমরা ব্যাংকিং আইন পরিবর্তনের চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পিপিপি অথরিটির সঙ্গে বসব। দেখি এই আইনে সবকিছু করা যায় কি না। না হলে এই আইনও সংশোধন করব।’

প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, ‘শত চেষ্টা করেও আমরা ট্যাক্স নেটটা বড় করতে পারছি না। যারা একবার ট্যাক্স নেটে ঢুকে গেছে তাদের ওপরই আমরা বাড়াচ্ছি। নতুন কাউকে ইনক্লুড করতে পারছি না। যদি কোম্পানি ছোট হয়, কম ট্যাক্স দেবে, বড় হলে বেশি দিতে হবে। কিন্তু ট্যাক্স সবাইকেই দিতে হবে।’

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমও বক্তব্য দেন এ সময়। তিনি বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মেলবন্ধন ঘটে বঙ্গবন্ধুর আমলে। তখন পিপিপি বলা হতো না।

বারডেম হাসপাতাল, মেঘনা পাওয়ারপ্ল্যান্ট, হরিপুর পাওয়ারপ্ল্যান্টসহ নানা প্রকল্পের উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রাইভেট খাতকে আমরা ড্রাইভিং সিটে বসাব। বছর অনুযায়ী কোন বছর কত বিনিয়োগ হবে৷ ২০০৯-১০ সালের দিকে প্রথম পিপিপি বাজেট আসে।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সময় ছিল সরকারি বিনিয়োগ ৮৫ শতাংশ আর বেসরকারি বিনিয়োগ ১৫ শতাংশ। পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে সরকারি বিনিয়োগ ১৫ শতাংশ, আর বেসরকারি বিনিয়োগ ৮৫ শতাংশ হয়েছে।

শামসুল বলেন, ‘পিপিপিতে পাইপলাইনে থাকা ৭৭টা কোম্পানির আকার ৩৬ বিলিয়ন ডলার। এসডিজি অ্যাকশন প্ল্যান করার সময় প্রাইভেট সেক্টর ৪২ শতাংশ, পাবলিক সেক্টর ৩৫ শতাংশ এবং পিপিতে রাখা হয়েছে ৫.৯ শতাংশ। পিপিপিকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে ১৭টা মন্ত্রণালয়, ২৬টা এজেন্সি। আমরা পিপিপিতে খুব ভালোভাবেই যাব।’

তিনি বলেন, ‘পিপিপি বাস্তবায়নে আমাদের মতো দেশের লাগে ২৪ মাস আর উন্নত দেশে লাগে ১৪ মাস। আমাদের প্রাইভেট সেক্টরকে আরও কীভাবে গুরুত্ব দেয়া যায় সেটা দেব।’

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঝিলমিল প্রকল্প, পূর্বাচলে পানির সংযোগের কথা উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার ওরিয়ন গ্রুপ করেছে। এটাকে আমরা আরও বাড়াব। ১.৫ শতাংশ মোট জিডিপির পিপিতে আসুক, এটা আমরা প্রস্তাব রেখেছি। বাংলাদেশের সবচেয়ে গৌরবের বিষয় হলো, আমরা সড়ক ইনফ্রাস্ট্রাকচারের আওতায় এনেছি সমস্ত এলাকায়। আমরা পিপিপিতে যাব, কারণ সরকারের পক্ষে একা বিনিয়োগ করা সম্ভব নয়। কাজেই সবচেয়ে বেশি দেখতে হবে কীভাবে প্রাইভেট সেক্টরকে আরও বেশি সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর