বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

এলডিসি-উত্তর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শুল্ক কাঠামো সংস্কার জরুরি

  •    
  • ২৬ অক্টোবর, ২০২২ ২১:০২

ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাবে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় শিল্প সুরক্ষায় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বর্তমানে চলমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কাঠামোতে উল্লেখজনক হারে পরিবর্তন আনতে হবে।’

এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের রাজস্ব ও শুল্ক কাঠামোর আমূল সংস্কার জরুরি। একই সঙ্গে নীতিমালা সহজীকরণ, দক্ষতা উন্নয়ন, বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে পিটিএ ও এফটিএ স্বাক্ষর এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সংস্থাগুলোতে নিজেদের অন্তর্ভুক্তি অপরিহার্য।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বুধবার এক কর্মশালায় এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।

‘প্রতিযোগিতামূলক শুল্ক কাঠামো : প্রেক্ষিত স্বল্পোন্নত দেশের উত্তরণ’ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে ডিসিসিআই।

এতে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের যুগ্ম প্রধান মশিউল ইসলাম। আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য শীষ হায়দার চৌধুরী, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ফারহানা আইরিছ ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব ড. নিয়োমুল ইসলাম।

ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণের পর আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা হারাবে। সেক্ষেত্রে দেশে উৎপাদিত পণ্য বহির্বিশ্বে রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রায় ৮ থেকে ১৬ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। আর তা আমাদের রপ্তানির সক্ষমতাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করবে।

‘স্থানীয় শিল্পের সুরক্ষায় পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বর্তমানে চলমান নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক কাঠামোতে উল্লেখজনক হারে পরিবর্তন আনতে হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে ভ্যালু এডিশন নিশ্চিত করতে হবে।’

মূলপ্রবন্ধে মশিউল ইসলাম বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। আর সর্বোচ্চ রপ্তানিকৃত ২০টি পণ্যের মধ্যে ১৮টিই শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা ভোগ করেছে। এলডিসি উত্তরণের পর আমাদের উদ্যোক্তারা এ সুবিধা প্রাপ্তি হতে বঞ্চিত হবেন।

এ অবস্থায় বৈশ্বিক বাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বেসরকারি খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে এখনই কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। এ লক্ষ্যে বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে দ্রুততম সময়ে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর (এফটিএ) এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ব্লকগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিতকরণ একান্ত অপরিহার্য।

আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণ ও স্থানীয় শিল্পায়নকে বেগবান করতে দেশের সার্বিক রাজস্ব এবং শুল্ক কাঠামোর আমূল সংস্কার ও অটোমেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও পরিবর্তিত বৈশ্বিক বাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশে একটি ‘ন্যাশনাল ট্যারিফ পলিসি’ প্রণয়নের প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানান।

শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘বাস্তবভিত্তিক শুল্ক কাঠামো প্রণয়নে দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতকে একযোগে কাজ করতে হবে। কোভিড মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণের পরিস্থিতিকে জটিল করেছে।’

তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য সহযোগী দেশগুলোর সঙ্গে এফটিএ ও পিটিএ স্বাক্ষরের লক্ষ্যে সরকার বেশকিছু গবেষণা পরিচালনা করেছে এবং বিষয়টি নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব কাজ করছে। আমাদের জিডিপিতে করের অবদান মাত্র ৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এলডিসি উত্তরণের পর রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকারকে আরও অধিক হারে ভ্যাট ও কর আহরণের ওপর নজর দিতে হবে।’

যুগ্ম সচিব ফারহানা আইরিছ বলেন, ‘শুল্ক কাঠামো সহজীকরণের পাশাপাশি আমাদেরকে রপ্তানির পরিমাণ বাড়ানো ও পণ্য বহুমুখীকরণের ওপর নজর দিতে হবে। কারণ বর্তমানে আমাদের রপ্তানি ও আমদানির মধ্যে বিশাল ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি জানান, ভুটান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরের লক্ষ্যে সরকার গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

ড. নিয়োমুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে দেশের মোট রাজস্বের ৩৪ শতাংশ আসে আমদানি শুল্ক থেকে এবং এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে আমদানি শুল্ক উল্লেখজনক হারে কমাতে হবে। সে ক্ষেত্রে ভ্যাট ও আয়করের ওপর প্রাধান্য দিতে হবে।’

তিনি জানান, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ৬টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হার কমানো হয়েছে এবং আরও ৬০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক কমানোর লক্ষ্যে এনবিআর কাজ করছে। তবে এ ক্ষেত্রে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা যেন ব্যাহত না হয় সে বিষয়েও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।

এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় স্থানীয় শিল্পের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

কর্মশালাটি সঞ্চালনা করেন ডিসিসিআইর ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি আরমান হক।

এ বিভাগের আরো খবর