বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্থনৈতিক অঞ্চলে রাজউকের সমান ভ্যাট চায় বেজা

  •    
  • ২৩ অক্টোবর, ২০২২ ২২:৪৫

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘আমরা এনবিআর-কে বলেছি যে আমাদের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে যে ভ্যাট নেয়া হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। রাজউকের যদি ৪ শতাংশ ভ্যাট হয় তাহলে আমরা কেন ১৫ শতাংশ দেব। এখন তারা না মানলে আমরা কী করতে পারি।’

দেশে আবাসনের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভ্যাট আদায় করছে ৪ শতাংশ হারে। আর অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দপ্রাপ্তদের ভ্যাট দিতে হচ্ছে ১৫ শতাংশ হারে। বিষয়টি অসামঞ্জস্যপূর্ণ উল্লেখ করে এই দুই খাতে ভ্যাটের হারে সমতা আনার পক্ষে মত দিয়েছেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন।

রোববার বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা) ও ইকোনমিক রিপোটার্স ফোরাম (ইআরএফ) যৌথভাবে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এমন অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।

ইআরএফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বেজা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এনবিআর-কে বলেছি যে আমাদের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে যে ভ্যাট নেয়া হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। আমরা ভূমি উন্নয়ন সংস্থা। আমরা ভূমির উন্নয়ন করে শিল্পের জন্য জমি দেই। রাজউকের যদি ৪ শতাংশ ভ্যাট হয় তাহলে আমরা কেন ১৫ শতাংশ দেব।

‘আমরা অনেক বার বলেছি। এখন তারা যদি না মানে তাহলে আমরা কী করতে পারি। আমরাও সরকারি সংস্থা, তারাও সরকারি সংস্থা। তবে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

সভায় বেজার কার্যক্রম ও অগ্রগতি বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ফারুক।

বুধবার ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৫০টি শিল্প ও অবকাঠামো উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন-২০২২’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে বেজা।

বেজা চেয়ারম্যান জানান, এই ৫০টি অবকাঠামোর মধ্যে ২৯টি শিল্প-কারখানা। এছাড়া রয়েছে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল ও সাবরাং ট্যুরিজম পার্কের প্রশাসনিক ভবন, বিএসএমএসএন-এর ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ শেখ হাসিনা সরণি, ২৩০ কেভি গ্রিড লাইন এবং সাব-স্টেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো।

অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর অগ্রগতি তুলে ধরে শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে পরিকল্পিত শিল্পায়নের জন্য যাত্রা শুরু করেছে বেজা। ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী ১০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন করেন।

‘বর্তমানে ৯৭টি অর্থনৈতিক অঞ্চল অনুমোদন পেয়েছে। এর মধ্যে ৬৮টি সরকারি আর ২৯টি বেসরকারি। এগুলোর মধ্যে ২৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চলে উন্নয়ন কাজ চলমান।

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগর, শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চল, মহেশখালী অর্থনৈতিক অঞ্চল ও সাবরাং ট্যুরিজম পার্কে এখন পর্যন্ত প্রায় ২২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। এছাড়া ১২টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে।’

তিনি জানান, সরকারি ও বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২৯টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক শিল্পোৎপাদন শুরু করেছে এবং আরও ৬১টি শিল্প নির্মাণাধীন। এই অঞ্চলগুলোতে জাপান, চীন, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, আমেরিকা, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, নরওয়েসহ বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে।

বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে ১৪ কারখানা

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাচ্ছে ১৪টি কারখানা। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে এই প্রথম ৪টি শিল্পের বাণিজ্যিক কার্যক্রম উদ্বোধন হবে। এর মধ্যে রয়েছে ভারতের এশিয়ান পেইন্টস, জাপানের নিপ্পন, বাংলাদেশ ম্যাকডোনাল্ড ও টিকে গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সামুদা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।

শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রথম উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ‘ডাবল গ্লেজিং’-এর কারখানা। এছাড়া আরও ৯টি শিল্প ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ পিভিসি কারখানা।

বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে ১৪টি শিল্পে ইতোমধ্যে প্রায় ৯৬৭ দশমিক ৭৩ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং আগামীতে ব্যবসা সম্প্রসারণে আরও ৩৩১ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

ইউসুফ হারুন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে ২৯টি শিল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করতে যাচ্ছেন সেগুলোতে শিল্প-কারখানা স্থাপনে এখন পর্যন্ত বিনিয়োগ হয়েছে প্রায় ৬১০ মিলিয়ন ডলার। আরও বিনিয়োগ হবে প্রায় ১৯২২ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার। এসব শিল্পে ইতোমধ্যে ৬ হাজার ৪০৭ জনের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং আরও ৩৮ হাজার ৬৫৮ জনের কর্মসংস্থান হবে।

অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সমস্যার সমাধান হবে

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইউসুফ হারুন বলেন, ‘অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগকারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে বিদ্যুৎ ও গ্যাস দেয়া হচ্ছে। বৈশ্বিক কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তবে আগামী দিনে রূপপুর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হলে এর সমাধান হবে।

এলএনজির দাম বৃদ্ধির কারণে এখন কিছুটা সমস্যা হলেও আগামী দিনে গ্যাস দেয়া সম্ভব হবে। পানির চাহিদা পূরণে বেশ কয়েকটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

অর্থনৈতিক ফান্ড সংগ্রহ করাটা চ্যালেঞ্জ

৯৭টি অনুমোদিত হলেও সবগুলোর কাজ কেন শুরু করা হচ্ছে না- এমন প্রশ্নে ইউসুফ হারুন টাকার সমস্যার কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘সব প্রকল্প একসঙ্গে করার সুযোগ নেই। নেত্রকোনা ইকোনমিক জোনের জন্য আমরা ডিপিপি তৈরি করেছি। এখানে শুধু জমির দামই আসবে ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এই টাকাতো আমাদের যোগাড় করতে হবে।

‘সরকার চাইলেই এই টাকা বেজাকে দিতে পারবে না। এটা আমাদের দাতাদের কাছ থেকে আনতে হবে। বিশ্বব্যাংক, জাইকার মতো প্রতিষ্ঠান আমাদের সাহায্য করতে পারে।

‘ফান্ড সংগ্রহ করাটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ। আমরা প্রায়রিটি অনুযায়ী এগুচ্ছি। আপাতত ২৮টি করেছি। যেখানে খাস জমি বেশি রয়েছে সেখানে আমরা আগে অর্থনৈতিক অঞ্চল করব। বাকিগুলো ধীরে ধীরে করা হবে।’

ইআরএফ সভাপতি শারমীন রিনভীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বেজার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) হাসান আরিফসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম।

এ বিভাগের আরো খবর