আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘আমরা তো একটি কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। দিন যত যাচ্ছে, পরিস্থিতি ততই খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কতো হবে-সেদিকে না তাকিয়ে অর্থনীতির সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের সূচক মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতেই সরকারের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। তানাহলে দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য কিন্তু আরও বেড়ে যাবে; সমাজে অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।’
বৃহস্পতিবার নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে সরকারকে এই পরামর্শ দিয়েছেন ড. আহসান এইচ মনসুর। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিউজবাংলার বিজনেস এডিটর আবদুর রহিম হারমাছি।
প্রশ্ন: দুই বছরের বেশি সময়ের করোনাভাইরাস মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় কেমন চলছে বাংলাদেশের অর্থনীতি? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় প্রতিদিনই আশঙ্কার কথা বলছেন, অনিশ্চয়তার কথা বলছেন। খরচ কমানোর আহ্বান জানিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করছেন। আপনার কাছে সার্বিক পরিস্থিতি কেমন মনে হচ্ছে? কোন পথে যাচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি?
আহসান এইচ মনসুর: বাংলাদেশ কোনো ব্যতিক্রম দেশ নয়। সারা পৃথিবীতে সংকট চলছে। এর মধ্যে কিছু দেশ কম খারাপ। আর কিছু দেশ বেশি খারাপ অবস্থায় আছে। কেউ স্বস্তিতে নেই। কাউকে দোষারোপ করব না। নিজের ঘর গোছাতে হবে। অন্যের ঘর দেখে লাভ নেই। বিশেষ করে এই আপৎকালীন আমাদের কিছু কাজ করতে হবে। আমাদের সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মূল্যস্ফীতি। আমাদের দেশে জেঁকে বসেছে। ভালোভাবেই বাড়ছে। সামনে খুব একটা ভালো হবে আশা করা কঠিন। সরবরাহ বাড়লে মূল্যস্ফীতি কমবে। কিন্তু সেখানে সমস্যা আছে। যদি আমন ধান ভালোভাবে ঘরে আসে, সেটা ভালোহবে। বোরোর জন্য আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। ২০২৩ সালের প্রথম দিকে আসবে বোরো ধান। সে জন্য আমাদের দরকার জ্বালানি, বিদ্যুৎ আর সার। কিন্তু এ তিনটি জিনিস নিয়ে আমাদের টানাপোড়েন আছে। এগুলো আমাদের বাইরে থেকে আনতে হয়। আর এগুলোর দাম বেড়ে গেছে। আমন ধানে শুধু সার লাগে। এ ছাড়া শীতকালীন সবজি উৎপাদন আর বাজারজাতকরণে মনোযোগ দিতে হবে। আমাদের আলুর হিমাগার আছে। অন্যকিছুর নেই। আমাদের হিমাগার লাগবে। যদিও তারপর সমস্যা থেকে যাবে। আমাদের ডিমান্ড সাইডটি দেখতে হবে। গত বছর আমাদের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট হয়েছে ১৮ বিলিয়ন ডলার। আর কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিট মানে হচ্ছে আমরা সরকারি খাত-ব্যক্তি খাত মিলিয়ে বাইরে থেকে ঋণ হিসেবে নিয়েছি। আমরা যদি ১৮ বিলিয়ন করে ঋণ নিই। তাহলে তো সেটি আমাদের জন্য টেকসই হবে না। আমাদের জন্য খুব বেশি হয়ে যায়। আমাদের আমদানি কমাতে হবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে আমাদের রপ্তানি আর রেমিট্যান্স কমে আসছে। সেপ্টেম্বরে খারাপ এসেছে। অক্টোবরেও খারাপ আসছে। এটি যদি ধারাবাহিকভাবে চলে, তাহলে কিন্তু আমাদের সমস্যা আরও বড় হবে।
প্রশ্ন: প্রায় এক বছর ধরে ডলারের বাজার অস্থির। নানা পদক্ষেপ নিয়ে বাগে আসছে না। সমস্যা আসলে কোথায়? কীভাবে সমাধান হবে?
আহসান এইচ মনসুর: বিনিময় হার সব দেশেই সমস্যা। আমাদের দেশে একটু বেশি খারাপ। ডলারের দাম বেশ বেড়েছে। কারণ আমারা অনেক দিন ধরে আটকে রেখেছিলাম ডলারের দাম। ডলারের দাম কিন্তু এখনো স্থিতিশীল নয়।এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না। আমাদের রিজার্ভ কম। সরকারি হিসাব থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে হয় ২৮ বিলিয়ন। এর থেকে প্রতি মাসে যদি আরও ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার চলে যায়, তাহলে আমরা চাপে পড়ে যাব। এভাবে রিজার্ভ যদি ২৩ বিলিয়নে নেমে আসে, তাহলে কিন্তু স্বস্তি আর থাকবে না। তখন কিন্তু আমাদের স্পেকুলেটিভ প্রেসারে ধরে ফেলতে পারে। বাংলাদেশ দুর্বল,বাংলাদেশের রিজার্ভ কম। বাংলাদেশের সামর্থ্য কমে আসছে ইত্যাদি ইত্যাদি। এ জায়গাটিতে বাংলাদেশের যাতে যেতে না হয়, সেটিনিশ্চিত করতে হবে। যে করেই হোক, করতেই হবে। এক্সচেঞ্জ রেট এখন যে জায়গায় আছে অর্থাৎ ১ ডলার কিনতে এখন যে ১০৫ বা ১০৬ টাকা লাগছে, সেটি কিন্তু রিজার্ভ থেকে প্রতিদিন যে প্রচুর ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিক্রি করছে বলেই পাওয়া যাচ্ছে। ডলার বিক্রি না করলে হয়তো এটি ১১৫ টাকা হয়ে যেত। এখন একটি সাপোর্ট দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এটি সাসটেইনেবল না। সরকার চিরকাল রিজার্ভ বিক্রি করে এক্সচেঞ্জ রেট ধরে রাখতে পারবে না।
তাই আমাদের ডলারের দাম স্থিতিশীল করতে হবে। আমাদের সুদের হার বাড়াতে হবে। আমাদের টাকার মানকে বাড়তে দিতে হবে। আমরা যদি আইএমএফের সঙ্গে আলোচনাটা চালিয়ে যেতে পারি। ঋণটা ঠিকঠাক মতো পাই। তাহলে আমরা আগে থেকেই একটি ভালো জায়গায় থাকতে পারব।
প্রশ্ন: তাহলে কি আপনি বলতে চাচ্ছেন আইএমএফের ঋণ পেলে সরকার কি সুবিধাজনক অবস্থায় থাকবে? অর্থনীতিতে চাপ অনেকটা কমে আসবে?
আহসান এইচ মনসুর: অবশ্যই। আইএমএফের মূল কাজ হচ্ছে ক্রাইসিস ঠেকানো। আইএমএফের ঋণ একটি আস্থার সৃষ্টি করে। বিশ্বব্যাংক তখন পাশে থাকবে। বিশ্বব্যাংক তখন ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে।এডিবি এগিয়ে আসবে। জাইকা আসবে। সবাই এগিয়ে আসবে। তখন তারা সবাই তাদের সাপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে আসবে। আমাদের শুধু ব্যালান্স অব পেমেন্ট আর বাজেট সাপোর্টটি নিতে হবে। যাতে সরকার ব্যালান্স অব পেমেন্টে আর বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারে কোনো ক্রাইসিস ছাড়া।
একটি দিক দিয়ে কিন্তু আমরা এখনো স্বস্তিদায়ক অবস্থায় আছি। দেশে কিন্তু খাদ্যের কোনো সংকট নেই। দাম বেশি এটিই সমস্যা। এ অবস্থায় আমরা যদি বাজারটিকে ভালোভাবে মনিটর করে দামটিনিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি আর ফ্যামিলি কার্ডসহ সরকার গরিব মানুষকে কম দামে খাবার সরবরাহের যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি যদি আর বাড়ানো যায় তাহলে মূল্যস্ফীতি লাগামের মধ্যে রাখা যাবে। একটি বিষয় সরকারের নীতিনির্ধারকদের ভালোভাবে মনে রাখতে হবে, মূল্যস্ফীতি সহনীয় রাখাই কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এটি যদি আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি, অন্য সমস্যা মোকাবিলা করা সহজ হবে।
প্রশ্ন: কিন্তু দেশে মূল্যস্ফীতি তো বেড়েই চলেছে। আগস্ট-সেপ্টেম্বর দুই মাসেই মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের বেশি। সরকার চলতি অর্থবছরে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ধরেছে। এই উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে সঙ্গে নিয়ে সেটি অর্জন করা কি সম্ভব?
আহসান এইচ মনসুর: প্রথমেই আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, সাড়ে ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবার কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে রাখার যে লক্ষ্য বাজেটে সরকার ধরেছে, সেটিও সম্ভব নয়।
তাই লক্ষ্যটি এখন প্রবৃদ্ধি থেকে সরিয়ে নিতে হবে। মনোযোগ দিতে হবে মূল্যস্ফীতি কমানোর দিকে। আর এক্সচেঞ্জ রেটকে স্থিতিশীল করার দিকে। এখন সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিকে খেয়ালরাখতে হবে। আমার প্রথম লক্ষ্য হবে, আমাদের এক্সচেঞ্জ রেটের ওপর চপ কমানো। রিজার্ভ বাড়ানো। আমাদের বাজেট বাস্তবায়ন করতে হবে। মূল্যস্ফীতিটাকে যদি বহুলাংশে কমিয়ে আনতে পারি। অর্থাৎ ৬-৭ শতাংশের মধ্যেও যদি আনতে পারি। তাহলেও কিন্তু একটি অর্জন হবে। সেদিকটাতেই আমাদের মেইন ফোকাস করতে হবে। এরপর প্রবৃদ্ধি আমার যা-ই হোক ঠিক আছে। আমাদের ফোকাস এখন প্রবৃদ্ধি না। প্রবৃদ্ধি এখন কমে গেলে সমস্যা নেই। কিন্তু ম্যাক্রো কমে গেলে সমস্যা। ম্যাক্রো যদি খারাপ থাকে কর্মসংস্থান হবে
না। বিদেশিরা বিনিয়োগ করতে আসবেন না। যেকোনো মূল্যে স্থিতিশীলতা আনতে হবে।
প্রশ্ন: সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে শিল্প স্থাপনের প্রধান উপাদান ক্যাপিটাল মেশিনারি বা মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিও কমছে। এতে দেশে বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
আহসান এইচ মনসুর: আমাদের এখনকার যে ক্যাপাসিটি আছে, সেটি কিন্তু আন্ডার ইউটিলাইজড। অর্থাৎ আমি তো আরও ৩০ শতাংশ বিক্রি করতে পারি। আমাকে বুঝতে হবে এই সংকটের মুহূর্তে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবেন কি? আমি হলে করতাম না। আমার এখন ফোকাস ম্যাক্রো। এই দুটি পরিস্থিতি যদি এখন স্বাভাবিক হয়।
সব বিনিয়োগকারী এখন চিন্তা করবেন আমি আরেকটি নতুন হোটেল এখন বানাব কেন। এখনকার হোটেলগুলো খালি। আমি এখন বিনিয়োগ নিয়ে চিন্তিত হব না। কারণ আমার ক্যাপাসিটির কিন্তু কোনো অভাব নেই। আমি চাইলে এখন ৪০ শতাংশ বেশি রপ্তানি করতে পারব। কিন্তু পারছি না, কারণ ডিমান্ড নেই। সমস্যা যখন চাহিদা। তখন বিনিয়োগ চিন্তা না। বিনিয়োগ তো এখন সম্ভব না। আমি তখনই বিনিয়োগ করব, যখন আমার পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে যাবে। এই জায়গা থেকে পরিবর্তন হলে আমি লাইন বাড়ানোর চেষ্টা করব। তাই বিনিয়োগ নিয়ে আমি চিন্তিত নই। তবে এটি পরিবর্তন হতে সময় লাগবে না। বাইরের অর্থনীতি পরিবর্তন হলে এটিও পরিবর্তন হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: ডলারের দাম কমাতে আর কী পদক্ষেপ নিতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক?
আহসান এইচ মনসুর: আমাদের ডলারের একটি রেটে যেতে হবে। আমাদের দেশে অনেকগুলো রেট। এখনই একটি রেটে যেতে হবে। মার্কেট ইউনিফাইড হওয়া দরকার। এক্সপোর্টাররা বলছেন আমাদের কম দিচ্ছে,ইম্পোর্টাররা বলছেন আমাদের কাছ থেকে বেশি নিচ্ছে। এ সমস্যাটি হতো না। আমাদের মুদ্রাবাজার এখনো আনস্টেবেল। আইএমএফের ঋণ এলে, রপ্তানি বাড়লে, রেমিট্যান্স বেশি এলে এক্সচেঞ্জ রেট ঠিক হতে পারে।
সুদের হার ঠিক করা উচিত। যে ঋণ নিচ্ছে, সে বিনা পয়সায় নিচ্ছে। কারণ মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৯ শতাংশ। যারা টাকা দিচ্ছে তারা তো লুজার। আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমরা দিয়ে দিচ্ছি। যারা ঋণ গ্রহণকারী তাদের কাছে তারা আবার খেলাপিও হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে যারা ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছে, তারা বড়লোক হচ্ছে। আর যারা সঞ্চয়কারী তারা বঞ্চিত হচ্ছে। তাদের আয় কমে যাচ্ছে। এখানে আরেকটি আয়বৈষম্যের সৃষ্টি হচ্ছে। এটি হতে দেয়া যাবে না। এখনই বাংলাদেশে আয়বৈষম্য অনেক বেশি। মূল্যস্ফীতি আরও বাড়লে বৈষম্য আরও বেড়ে যাবে। সম্পদশালীরা সম্পদদার হচ্ছে। যাদের সম্পদ নেই তাদের আয় কমে যাচ্ছে।
প্রশ্ন: প্রধানমন্ত্রী বারবার দেশবাসীকে খরচ কমানোর আহ্বান জানিয়ে বলছেন, সামনে কঠিন সময়, ২০২৩ সালটি খুবই কঠিন যাবে। কিন্তু সংকট মোকাবিলার পথ খুঁজে বের করতে আপনাদের মতো অর্থনীতিবিদ, গবেষকদের সঙ্গে বসছে না কেন?
আহসান এইচ মনসুর: পৃথিবীতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করে ইকোনমিক টিম। ইংল্যান্ডে কী হলো? যখন দেখা গেল, পলিসিটি ঠিক হয়নি। কে পদত্যাগ করলেন অর্থমন্ত্রী। কেন, কারণ তাদের পলিসি ঠিক হয়নি।যে এই দায়িত্ব নিলেন তার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে বেশি। খারাপ সময়ে একটি অর্থনৈতিক নেতৃত্ব দরকার। আমাদের এখানে রাজনৈতিক নেতৃত্বটা কোথায় খুঁজে পাচ্ছি না। সরকারের কী দায়িত্ব এখন। একটি সমস্যা কেন হচ্ছে, কী কীভাবে হচ্ছে চিহ্নিত করতে হবে। তারপর আমাদের রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে। সবগুলোকে এক জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। একটি কৌশলের অংশ হিসেবে নিয়ে আসতে হবে। এখন বিচ্ছন্নভাবে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটির পর একটি নোটিফিকেশন দিচ্ছে। কিছু জায়গায় কাজ হচ্ছে, কিছু জায়গায় হচ্ছে না। কিছু জায়গায় ঠেকা
দিয়ে রাখা আছে। এগুলো বিচ্ছিন্ন নীতি। এগুলো এক জায়গায় নিয়ে আসতে হবে। বলতে হবে আমরা এই জায়গায় আছি। আমাদের হাতে এই এই পলিসি আছে। আইএমএফ এই জিনিসগুলো চাচ্ছে। এই জিনিসগুলোর মধ্যে আমরা এগুলো দেব। আমাদের স্বার্থেই করব। আইএমএফ তো আর পয়সা নিয়ে যাবে না বাংলাদেশ থেকে। আইএমএফের রিফর্ম তাদের বেনিফিটের জন্য না। আমাদের বেনিফিটের জন্য। বলতে হবে আমরা এভাবে বাংলাদেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যাব। জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশকে ঠিক করে ফেলব। এই রোডম্যাপটি দরকার। এই রোডম্যাপটি কাদের সাহায্য নিয়ে তৈরি হবে। যারা এক্সপার্ট আছেন তাদের নিয়ে বসে এগুলো করতে হবে। এখানে একজন মোয়াজ্জিনকে তো আজান দিতে হবে। মৌলভি সাহেবকে তো নামাজ পড়াতে হবে। সেই মৌলভিসাহেব কই। আমাদের লিডারশিপ লাগবে তো। সেই নেতৃত্ব ছাড়া এখন একটি ভাসমান নৌকার মতো হচ্ছে।
জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে অর্থনীতির কী হবে?
আহসান এইচ মনসুর: ২০২৩ সালে সংঘাত হতেই পারে। সরকার বহুদিন ধরে ক্ষমতায়। এটি স্বাভাবিক একটি প্রক্রিয়া। আমাদের দেশে এটি বেশি হয়ে যায়। এটি মারামারি পর্যায়ে চলে যায়। কিন্তু রাস্তা গরম হবে, মাঠ গরম হবে।এটি তো স্বাভাবিক। আমি বলব, এই গরম হওয়ার আগেই আমরা যদি অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে ঠান্ডা করে ফেলতে পারি, তাহলে সরকারের জন্য ভালো। দেশের জন্য ভালো।
আমদের সময় আছে আগামী তিন-চার মাস। এর মধ্যেই আমি আশা করব সরকার সবার সঙ্গে বসে একটি রোডম্যাপ করবে। এক মাসের মধ্যে যদি বসতে পারে। জানুয়ারির মধ্যে সব শেষ করতে পারলে সরকার নির্বাচনের আগে সমস্যা কিছুটা কমাতে পারবে।