পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানি পেনিনসুলা চিটাগং গত ৩০ জুন সমাপ্ত অর্থবছরের হিসাব পর্যালোচনা করে তালিকাভুক্তির পর আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কোম্পানিটি এবার বিনিয়োগকারীদের শেয়ারপ্রতি দেবে ২৫ পয়সা, যা আগের দুই অর্থবছরে ছিল শেয়ারপ্রতি এক টাকা করে।
গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরে ১৯ পয়সা আয়ের কথা জানিয়েছে কোম্পানিটি, যা আগের বছর ছিল ৪১ পয়সা এবং ২০২০ সালে ছিল ৫ পয়সা।
২০১৪ সালে তালিকাভুক্ত হওয়ার পর পেনিনসুলা কখনও এবারের মতো এত কম লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি। তালিকাভুক্তির বছর এবং ২০১৫ সালে ১০ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি এক টাকা, এর পরের চার বছর ৫ শতাংশ বা শেয়ারপ্রতি ৫০ পয়সা লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি।
কোম্পানিটির লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য বার্ষিক সাধারণ সভা বা এজিএম ডাকা হয়েছে আগামী ১৯ ডিসেম্বর। যাদের হাতে আগামী ১৪ নভেম্বর শেয়ার থাকবে তারা সেই অনুষ্ঠানে থাকতে পারবেন, অর্থাৎ সেদিন হবে লভ্যাংশ-সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট।
আর্থিক প্রতিবেদনের বিস্তারিত
কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয়, শেয়ারপ্রতি সম্পদ-দুটিই কমে গেছে এবার। আর আর্থিক প্রতিবেদনে যে আয়ের কথা জানানো হয়েছে, সেটি নিয়েও তৈরি হয়েছে আলোচনা।
কোম্পানিটি গত মার্চ শেষে অর্থবছরের নয় মাসে শেয়ারপ্রতি ৭২ পয়সা করে আয়ের কথা জানিয়েছিল। ১১৮ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির শেয়ারসংখ্যা ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৬৬ হাজার ৮০০টি। এই হিসাবে অর্থবছরের নয় মাসে কোম্পানিটির আয় দাঁড়ায় ৮ কোটি ৫৪ লাখ ৪০ হাজার ৯৬ টাকা।
তবে এর পরের তিন মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান দেখানো হয়েছে ৫৩ পয়সা। কারণ, তাদের চূড়ান্ত আয় দেখানো হয়েছে শেয়ারপ্রতি ১৯ পয়সা বা ২ কোটি ২৫ লাখ ৪৬ হাজার ৬৯২ টাকা।
হোটেল পেনিনসুলা চিটাগং এর আর্থিক প্রতিবেদনের সংক্ষেপসার
অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৬ কোটি ২৮ লাখ ৯৩ হাজার ৪০৪ টাকা।
অর্থবছরের শেষ তিন মাসে কী এমন হলো যে, আগের নয় মাসের আয়ের তিন ভাগের দুই ভাগ লোকসান দিতে হলো, এই প্রশ্নের জবাব পেতে কোম্পানি সচিব নুরুল আজিমকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানিগুলো করোনার ধাক্কা কাটিয়ে এবার ভালো ব্যবসা করার ইঙ্গিত দেয়ার পর শেয়ারদর অনেকটাই বাড়ছিল, যার বাইরে ছিল না পেনিনসুলাও।
গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দিন কোম্পানিটির শেয়ার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ২৬ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দেড় গুণের বেশি আয়ের তথ্য জানানোর পর এবার ভালো লভ্যাংশের আশায় গত আড়াই মাসে শেয়ারদর অনেকটাই বেড়েছিল।
সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে দর বেড়ে ৪৪ টাকা ৯০ পয়সায় উঠে যায়। এরপর আবার কমতে কমতে ১১ অক্টোবর দর ৩০ টাকায় নেমে আসে। টানা দুই দিন সর্বোচ্চ পরিমাণে বেড়ে দর ৩৬ টাকা ৩০ পয়সায় উঠে যাওয়ার পর এখন ৩২ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে এসেছে।
লভ্যাংশ সংক্রান্ত ঘোষণার কারণে মঙ্গলবার কোম্পানিটির শেয়ারদরে কোনো সীমা থাকবে না।