বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লোডশেডিংয়ে রিচার্জেবল পণ্যের দামে আগুন

  •    
  • ১৬ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:২২

ক্রেতাদের অভিযোগ, লোডশেডিংকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে ব্যবসায়ীরা রিচার্জেবল সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেক ব্যবসায়ী বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। গোডাউনে পণ্য থাকলেও তারা পর্যাপ্ত সরবরাহ করছেন না।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী রাজধানীসহ দেশজুড়ে চলছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। প্রতিদিন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ থাকছে না। এতে করে চরম ভোগান্তিতে জনজীবন। এক ঘণ্টার কথা বলা হলেও কোথাও কোথাও ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না।

বিদ্যুৎ না থাকার এই ভোগান্তি এড়াতে মানুষ ছুটছে বিকল্প ব্যবস্থার দিকে। ভিড় বাড়ছে চার্জার লাইট, ফ্যান, আইপিএস ও ইউপিএসের দোকানে। আর বর্ধিত এই চাহিদাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে এসব ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম ও গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, রিচার্জেবল লাইট, ফ্যান, ইউপিএস ও আইপিএসের দোকানগুলোতে হঠাৎ করেই ক্রেতা বেড়ে গেছে।

সিঙ্গার, ওয়াল্টন, ফিলিপস, বাটারফ্লাই, নাভানা, সুকান, অনিকসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য কিনছেন তারা। পাশাপাশি চায়নিজ অনেক পণ্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে বিক্রি হচ্ছে।

কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, লোডশেডিংকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে ব্যবসায়ীরা রিচার্জেবল সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিছুদিন আগে যে চার্জার ফ্যানের দাম ছিল ২৮০০ টাকা, সেটি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার টাকায়। কোম্পানিভেদে চার্জার ফ্যান ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর লাইট বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ১০০ টাকা বেশি দামে।

অনেক ব্যবসায়ী বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। তাদের গোডাউনে পণ্য থাকলেও পর্যাপ্ত সরবরাহ করছেন না।

অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা দায় চাপাচ্ছেন সরবরাহকারীদের ওপর। তারা জানান, চাহিদা অনুযায়ী পণ্য মিলছে না। পাইকারি পর্যায়েও দাম বেশি নেয়া হচ্ছে।

গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটের এইচ এন ইলেকট্রনিকসের স্বত্বাধিকারী গোলাম মঈনুদ্দিন খান বলেন, ‘বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে রিচার্জেবল ইলেকট্রনিক পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। তবে চাহিদা বাড়ার সঙ্গে দামও বেড়েছে।

‘সবাই খালি আমাদের দোষ দেয়। আমরা কী করুম? বাড়তি চাহিদা মেটাতে আমাদেরও তুলনামূলক বাড়তি দামে এসব পণ্য সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ২৫০০ টাকার মাল কিনতে হচ্ছে ৩২০০ টাকা দিয়ে। আমাদের যদি কিনতেই হয় বেশি টাকা দিয়ে তাহলে কমে কীভাবে বিক্রি করব।’

শেফালি আর এসের মালিক শারফুল আমিন বলেন, ‘হঠাৎ করেই রিচার্জেবল জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। ঢাকার বাইরের খুচরা ব্যবসায়ীরা আসছেন আগের চেয়ে বেশি চাহিদা নিয়ে। তারা নামিদামি কোম্পানির পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত কম দামের চায়না ও দেশীয় পণ্য কিনছেন।

‘অধিকাংশ ক্রেতাই চার্জার ফ্যান চাইছেন। এ ছাড়া চার্জার লাইট, আইপিএস ও ইউপিএস কিনছেন অনেকে। আর হঠাৎ করে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও কিছুটা বাড়াতে হয়েছে।’

লোডশেডিং নিয়ে অভিযোগ

মালামাল কিনতে আসা বেশ কয়েকজন ক্রেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে নির্ধারিত সময় ধরে এলাকাভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং করা হবে। কিন্তু বাস্তবে তা মানা হচ্ছে না। কখন বিদ্যুৎ চলে যাবে আর কখন ফিরবে তা নিয়ে পূর্বানুমান করা যাচ্ছে না।

‘ঢাকার কোথাও কোথাও টানা তিন ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। আর ঢাকার বাইরে তো চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। এ জন্য বাধ্য হয়ে গরম থেকে বাঁচতে রিচার্জেবল ইলেকট্রনিক যন্ত্র কিনতে হচ্ছে। আর এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে ব্যবসায়ীরা আমাদের গলা কাটছেন।’

বৃদ্ধ ও শিশুদের ভোগান্তি দেখেই ইলেকট্রনিক পণ্যের দোকানে

বায়তুল মোকাররম মার্কেটে আইপিএস কিনতে আসা সাদ্দাম মিয়াজি বলেন, ‘বিদ্যুতের লোডশেডিং শুরু হওয়ার পর থেকে বাসায় বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠ ও শিশুদের ভোগান্তিটা বেশি হচ্ছে। বাধ্য হয়েই রিচার্জেবল ফ্যান কিনতে এসেছি।

‘কিন্তু এখানে তো দেখছি ব্যবসায়ীরা গলা কাটার জন্য মুখিয়ে আছেন। যে ফ্যান কিনেছিলাম ৩৮০০ টাকায়, সেটা এখন পাঁচ হাজার টাকার বেশি। এটা তো অমানবিক। সুযোগ পেলেই এভাবে দাম বাড়িয়ে মানুষকে কষ্ট দেয়া কোন মনের প্রকাশ তা তারাই ভালো জানে।’

রামপুরা থেকে আসা ইমন মিয়া বলেন, ‘আমার বাচ্চার বয়স চার বছর। সন্ধ্যায় বাচ্চাটা একটু পড়তে বসে। গরম আর অন্ধকারে সন্তানের কষ্ট দেখে একটি রিচার্জেবল ফ্যান ও লাইট কিনতে এসেছি।’

ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেটের জুনাইদ আহ্‌মেদ বললেন, ‘আগের তুলনায় চার্জার ফ্যান ও লাইটের চাহিদা অনেক বেড়েছে। সেই সুবাদে বিক্রিও বেড়েছে অনেকটা। খুচরার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দোকানিরাও আসছেন পণ্য কেনার জন্য।

‘আমাদের এই মার্কেটে চায়নিজ ও দেশি পণ্যই বেশি চলে। চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশির ভাগ পণ্যেরই দাম বেড়েছে। চায়না একটি চার্জার ফ্যানের দাম আগে ছিল তিন হাজার টাকা। সেটি এখন ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে।’

তবে মইন ইলেকট্রিকের কর্ণধার মইন আলী বলেন, ‘এখন আর নতুন মাল কিনি না। যখন দাম কম ছিল তখন অনেক মালে দুই হাজার টাকাও লস দিচ্ছি। বিক্রি বাড়ার বদলে এখন আরও কমেছে। দাম বেশি হওয়ায় এখন অনেকেই কিনতে পারে না। শুধু যাদের টাকা আছে তারাই আসে।’

এ বিভাগের আরো খবর