বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সংকটের মধ্যেও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাকের দাপট

  •    
  • ১৩ অক্টোবর, ২০২২ ০০:২৯

চলতি বছরের প্রথম আট মাসে দেশটিতে ৬৬৪ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার (রপ্তানি বিল প্রতি ডলার ৯৯ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৬৫ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা। এই অর্থ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র। ৫০ বছরের মধ্যে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠে ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় পোশাক কেনা কমিয়ে দিচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে খবর হচ্ছে।

কিন্তু এর মধ্যেও আমেরিকায় পোশাক রপ্তানিতে দাপট দেখিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের প্রথম আট মাসে (জানুয়ারি-আগস্ট) দেশটিতে ৬৬৪ কোটি (৬.৬৪ বিলিয়ন) ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। বর্তমান বিনিময়হার (রপ্তানি বিল প্রতি ডলার ৯৯ টাকা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৬৫ হাজার ৭৩৬ কোটি টাকা।

এই অর্থ গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ বেশি। আর ২০২১ সালের পুরো সময়ের প্রায় সমান। গত বছরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলারের পোশাক কিনেছিল।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান থেকে এই সুসংবাদ পাওয়া গেছে। বুধবার এটি প্রকাশ করা হয়।

করোনা মহামারির মধ্যেও গত বছরের পুরোটা সময় ধরে পোশাক রপ্তানিতে রমরমা অবস্থা ছিল বাংলাদেশের। একের পর এক রেকর্ড হয়েছে। এমন ভালো বছর আর কখনই পার করেনি বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্প উদ্যোক্তারা।

সেই ধারাবাহিকতায় চলতি ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ইতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। কিন্তু গত সেপ্টেম্বর মাসে ১৩ মাস পর পোশাকসহ সার্বিক রপ্তানিতে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি (নেগেটিভ গ্রোথ) হয়েছে।

অটেক্সার তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানির ক্ষেত্রে তৃতীয় বৃহত্তম উৎস। এই আট মাসে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৬ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে।

২০২২ সালের প্রথম আট মাসে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ৩৭ দশমিক ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ১২ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে; বেড়েছে ৩৩ দশমিক ৬২ শতাংশ।

অন্য দেশগুলোর মধ্যে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও পাকিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি যথাক্রমে ৫৬ দশমিক ৯০ শতাংশ, ৫৬ দশমিক ৪৮, ৫১ দশমিক ৬৪, ৪২ দশমিক ৯৬ এবং ৪২ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে অটেক্সা ।

এই পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক ও মুখপাত্র মহিউদ্দিন রুবেল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোভিড সংকট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের রিটেইল ইন্ডাস্ট্রির দ্রুত পুনরুদ্ধার ঘটছে। ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের রপ্তানিতে এটি প্রতিফলিত হয়েছে। সে কারণেই দেশটিতে আমাদের পোশাক রপ্তানিতে উল্লম্ফন লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সেপ্টেম্বরে এসে হোঁচট খেয়েছে। নেগেটিভ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।’

এর কারণ ব্যাখ্যা করে রুবেল বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় হতাশাব্যঞ্জক বিশ্ব অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে চলতি অক্টোবর মাসে এবং পরবর্তী মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিতে এ ধরনের উচ্চ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস আমরা পাচ্ছি না। যেহেতু চলতি বছরে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছে, এটি সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিতে প্রতিফলিত হবে। তাই আমরা সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিতে কিছুটা বৃদ্ধি দেখতে পাবো। কিন্তু অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের পোশাক রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’

অটেক্সার তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি হয় গত বছরে, প্রায় ৭ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালে এই বাজারে রপ্তানি হয়েছিল ৫২৩ কোটি ডলারের পোশাক। ২০১৯ সালে রপ্তানির অঙ্ক ছিল এর চেয়ে বেশি ৫৯৩ কোটি ডলার। ৫৪০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয় ২০১৮ ও ২০১৫ সালে।

যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশি পোশাকের বড় বাজার। তবে ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বাজারটিতে রপ্তানি কমে যায়। তবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০১৯ সালে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করে। ইতোমধ্যে কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নেও ব্যাপক অগ্রগতি হয় বাংলাদেশের। যার ফলে ২০১৯ সালে ৫৯৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। পরের বছরও শুরুটা দুর্দান্ত হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করোনার থাবায় রপ্তানি নিম্নমুখী হয়।

এ বিভাগের আরো খবর