পুঁজিবাজারে ধস ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস দেয়ার আড়াই মাসের মধ্যে সূচকের সবচেয়ে বড় পতন দেখল বিনিয়োগকারীরা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছিল, এমন কোম্পানিগুলোকে দেখা গেছে দরপতনের শীর্ষ তালিকায়, যার মধ্যে আছে তুমুল আলোচিত ওরিয়ন গ্রুপের সবচেয়ে বড় কোম্পানি ওরিয়ন ফার্মাও।
সাপ্তাহিক বন্ধ ও ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটি শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক পড়ল ১১৯ পয়েন্ট। গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর এক দিনে এত বেশি সূচক পড়েনি।
এই পতনের মধ্য দিয়ে ডিএসইর সাধারণ সূচক নেমে গেছে সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্টের নিচে।
ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর গত ১০ আগস্ট ৭৮ পয়েন্ট সূচকের পতন হয়েছিল অর্থনীতি নিয়ে নানা উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ায়। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর সূচক পড়ল ৫৮ পয়েন্ট, যদিও এক পর্যায়ে কমে গিয়েছিল ৬৮ পয়েন্ট। তবে সামগ্রিকভাবে এই সময়ে ছয় শ পয়েন্টের বেশি সূচক বেড়েছিল।
ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের অবস্থান এখন ৬ হাজার ৪৪৯ পয়েন্ট, যা গত ৫ সপ্তাহের সর্বনিম্ন। গত ৫ সেপ্টেম্বর সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৩১ পয়েন্ট।
দরপতনের এই দিনে লেনদেন বেড়েছে প্রায় আড়াই শ কোটি টাকা। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১ হাজার ১৬৯ কোটি ৮৩ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। সেটি ২৪৭ কোটি ৬৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪১৭ কোটি ৫২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
এত বড় পতনের দিন কোনো শেয়ারের গুণাগুণ, খাতের সম্ভাবনা- ইত্যাদির কিছুই কাজ করেনি। কেবল ১৯টি কোম্পানির দর বেড়েছে, বিপরীতে হারিয়েছে ১৬৭টি কোম্পনি। আর দর ধরে রাখতে পারে ১৮২টি, যেগুলোর দর আসলে কমার সুযোগ ছিল না ফ্লোর প্রাইসের কারণে। এগুলো দীর্ঘদিন ধরেই একটি দরেই হাতবদল হচ্ছে।
এই দরপতনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পড়েছে গত দুই মাসে বেশি বেড়েছিল, এমন কোম্পানির দর। তবে এর ভিড়েও তুমুল আলোচিত ওরিয়ন ইনফিউশনের দর বেড়েছে অনেকটাই। ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দিন ১০৪ টাকায় হাতবদল হওয়া কোম্পানিটির শেষ লেনদেন হয়েছে আট শ টাকা ছাড়িয়ে।
তবে ইনফিউশনের দর বাড়লেও ওরিয়ন গ্রুপের বাকি তিন কোম্পানি দর হারিয়েছে। ওরিয়ন ফার্মা, কোহিনূর ক্যামিকেলস, বিকন ক্যামিকেলসের বড় দরপতন সূচকের পতনে বড় ভূমিকা রেখেছে।
গত ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর এক দিনে সর্বোচ্চ দরপতন হলো সোমবার
সব মিলিয়ে ১৫টি কোম্পানির দর কমেছে ৯ শতাংশের বেশি, আরও আটটির দর কমেছে ৮ শতাংশের বেশি, ৭ শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে আরও সাতটি কোম্পানি, চারটি কোম্পানি দর হারিয়েছে ৬ শতাংশের বেশি, ১৫টির দর কমেছে ৫ শতাংশের বেশি, ১৫টির দর কমেছে ৪ শতাংশের বেশি, ২০টির পতন হয়েছে ৩ শতাংশের বেশি, ১৩টি কোম্পানি দর হারিয়েছে ২ শতাংশের বেশি।
আতঙ্কের কারণে বড় পতন বলে মনে করেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সকালবেলা বাজার শুরু হয়েছে প্রফিট টেকিংয়ের মাধ্যমে। কিন্তু বড় পতন হয়েছে প্যানিকের কারণে। গুজব ছিল যে ফ্লোরপ্রাইস তুলে নেয়া হচ্ছে। আর প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে অর্থনীতির গতি থমকে যাওয়ার বিষয়টি উঠে আসায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর সতর্কবার্তাকে ভুলভাবে গ্রহণ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। যার কারণে সেল প্রেসার ছিল।’
ওরিয়ন গ্রুপের চার কোম্পানির হালচাল
এই গ্রুপের তুমুল আলোচিত কোম্পানি ওরিয়ন ইনফিউশনের দর এক দিনে যতটা বাড়া সম্ভব প্রায় ততটাই বেড়ে হয় শেষ লেনদেন। তবে শেষ মুহূর্তের সমন্বয়ে দর কিছুটা কম বেড়েছে।
আগের দিন দর ছিল ৭৫৩ টাকা ৭০ পয়সা। লেনদেন শুরুই হয় ৭৭১ টাকা ১০ টাকায়। দিন শেষে দর দাঁড়ায় ৭৯৯ টাকা ৭০ পয়সায়, তবে শেষ লেনদেন হয়েছে ৮১০ টাকা ২০ পয়সায়।
গত ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দিন দর ছিল ১০৪ টাকা ৭০ পয়সা। এই কয় দিনে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের কোম্পানিটির দর ৬৯৫ টাকা বেড়েছে।
তবে বাকি তিন কোম্পানি দর হারিয়েছে তার সর্বোচ্চ সীমার কাছাকাছি পতন হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৮.৮৫ শতাংশ বা ১৩ টাকা ১০ পয়সা দরপতন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার।
আগের দিন দর ছিল ১৪৮ টাকা। লেনদেন শুরু হয় ১৪৯ টাকা টাকা ৭০ পয়সায়। তবে দিন শেষ করে ১৩৪ টাকা ৯০ পয়সায়। দাম কমার সুযোগ ছিল ১৩৩ টাকা ২০ পয়সা পর্যন্ত। নেমেওছিল সে পর্যায়ে।
কোম্পানিটি সূচক কমিয়েছে ৫.৯৮ পয়েন্ট।
সূচক সবচেয়ে বেশি কমিয়েছে যেসব কোম্পানি, তার মধ্যে দুটি ছিল ওরিয়ন গ্রুপের, দুটি বেক্সিমকোর
বিকন ফার্মার দর কমেছে ২৪ টাকা ২০ পয়সা বা ৬.৩৬ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ৩৮০ টাকা ৮০ পয়সা। লেনদেন শুরু হয় ৩৯০ টাকায়। দিন শেষ করেছে ৩৫৬ টাকা ৬০ পয়সায়। নামার সুযোগ ছিল ৩৫১ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত। নেমেওছিল সেখান পর্যন্ত।
গত ২৮ জুলাই পুঁজিবাজারে দ্বিতীয়বারের মতো ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দিন দর ছিল ২৪০ টাকা ৮০ পয়সা।
এই একটি কোম্পানিই সূচক কমিয়েছে ১০.৯১ পয়েন্ট।
গ্রুপের অপর কোম্পানি কোহিনূর কেমিক্যালসের দর কমেছে ৪০ টাকা ২০ পয়সা বা ৫.৮৬ শতাংশ।
আগের দিন দর ছিল ৬৮৬ টাকা। লেনদেন শুরু করে ৭০৭ টাকায়, তবে দিন শেষে নেমে আসে ৬৪৫ টাকা ৮০ পয়সায়। এক পর্যায়ে নেমেছিল ৬৩৫ টাকায়।
কমেছে বেক্সিমকো গ্রুপের দরও
ওরিয়ন গ্রুপের মতো অতটা না হলেও দর হারিয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কোম্পানি বেক্মিমকো লিমিটেডের দর কমেছে ২ টাকা ২০ পয়সা বা ১.৬৮ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১৩১ টাকা ৩০ পয়সা, দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ১২৯ টাকা।
বেক্সিমকো ফার্মার দর কমেছে ৬ টাকা ৮০ পয়সা বা ৪ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১৬৯ টাকা ৮০ পয়সা, দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ১৬৩ টাকা।
গ্রুপের কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯.১৭ শতাংশ বা ৫ টাকা দর হারিয়েছে শাইনপুকুর সিরামিকস। আগের দিন দর ছিল ৫৪ টাকা ৫০ পয়সা, বর্তমান দর ৪৯ টাকা ৫০ পয়সা।
ব্যাংকিং খাতে এই গ্রুপের কোম্পানি আইএফআইসি দর হারিয়েছে ৩.২৩ শতাংশ বা ৪০ পয়সা। আগের দিন দর ছিল ১২ টাকা ৪০ পয়সা, নেমেছে ১২ টাকায়।
৫০ পয়সা বা ০.৫৭ শতাংশ দর হারিয়েছে বেক্সিমকো সুকুক বন্ড। আগের দিন দর ছিল ৮৮ টাকা। দিন শেষে দাঁড়িয়েছে ৮৭ টাকা ৫০ পয়সা।
পতনের শীর্ষে তারা, যাদের দর বেড়েছিল বেশি
ফ্লোর প্রাইস দেয়ার পর দুই মাসের কিছু বেশি সময়ে বিপুল সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার একটি জায়গায় স্থির হয়ে থাকলেও কিছু কোম্পানির শেয়ারদর লাফাচ্ছিল। পতনের এই দিন সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব কোম্পানির বিনিয়োগকারীরাই।
সবচেয়ে বেশি পতন হওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৮টির দর এই কয় দিনে ৫০ শতাংশের বেশি একটির দর ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বেড়েছিল। এগুলোর সবগুলোই একদিনে যতটা দর হারানো সম্ভব প্রায় ততটাই দর হারিয়েছে।
এই তালিকার শীর্ষে থাকা কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর দর ফ্লোর প্রাইস দেয়ার আগে ছিল ৩৭ টাকা ৭০ পয়সা। দুই মাসের কিছু বেশি সময়ে ৫০ শতাংশের বেশি বেড়ে দর উঠে যায় ৫৪ টাকা ৩০ পয়সায়। এক দিনেই ৯.৯৮ শতাংশ কমে দর দাঁড়িয়েছে ৪৬ টাকায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯.৭০ শতাংশ দর হারিয়েছে পেনিনসুলা চিটাগং। ফ্লোর প্রাইস দেয়ার আগে ২৬ টাকা ৯০ পয়সায় লেনদেন হওয়া কোম্পানিটির শেয়ার অস্বাভাবিক লাফ দিয়ে এক পর্যায়ে উঠে যায় ৪৪ টাকা ৯০ পয়সায়। গত কয়েক দিনে এমনিতেই দরপতনে থাকা কোম্পানিটির দর একদিনে যতটা কমা সম্ভব, প্রায় ততটাই কমে দাঁড়িয়েছে ৩২ টাকা ৬০ পয়সায়। আরও ১০ পয়সা কমার সুযোগ ছিল কেবল।
ফ্লোর প্রাইসের আড়াই মাসে যেসব কোম্পানির দর সবচেয়ে বেশি বেড়েছে, সেগুলোর মধ্যে অনেকগুলোকে দেখা গেছে দরপতনের শীর্ষ তালিকায়
তৃতীয় অবস্থানে ছিল বসুন্ধরা পেপার মিলস, যার দর কমেছে ৯.৬৮ শতাংশ বা ৮ টাকা ২০ পয়সা। ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দিন কোম্পানিটির শেয়ার দর ছিল ৪৮ টাকা ৮০ পয়সা। এই কয়দিনে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে সর্বোচ্চ দর দাঁড়ায় ৯৬ টাকায়। তবে গত কয়দিন ধরে এমনিতেই সংশোধনে ছিল। বর্তমান দর দাঁড়িয়েছে ৭৬ টাকা ৫০ পয়সা।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা মালেক স্পিনিং মিলসের দর কমেছে ৯.৬০ শতাংশ বা ৩ টাকা ৬০ পয়সা। আগের দিন দর ছিল ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা, বর্তমান দর ৩৩ টাকা ৯০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস দেয়ার আগের দিন দর ছিল ২৬ টাকা ৮০ পয়সা। ৬০ শতাংশের মতো দর বেড়ে সম্প্রতি উঠে যায় ৪৪ টাকা ১০ পয়সা।
পঞ্চম অবস্থানে ছিল ইউনিক হোটেল, যার দর কমেছে ৯.৫২ শতাংশ বা ৬ টাকা ৭০ পয়সা। বর্তমান শেয়ারদর দাঁড়িয়েছে ৬৩ টাকা ৭০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস দেয়া দিন কোম্পানিটির দর ছিল ৫৩ টাকা ৯০ পয়সা। দুই মাসের কিছু বেশি সময়ে সেখান থেকে ৫০ শতাংশের মতো বেড়ে হয়ে গিয়েছিল ৮১ টাকা ৮০ পয়সা।
ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ কোম্পানি শিপিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশ দর হারিয়েছে ১৪ টাকা ৯০ পয়সা বা ৯.৪৯ শতাংশ। আগের দিন দর ছিল ১৫৭ টাকা, এক দিন পরেই দাঁড়িয়েছে ১৪২ টাকা ১০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দিন দর ছিল ১০৫ টাকা ৭০ পয়সা। সম্প্রতি উঠে গিয়েছিল ১৭৩ টাকা পর্যন্ত।
সপ্তম অবস্থানে থাকা বিবিএস ক্যাবলস দর হারিয়েছে ৯.৪২ শতাংশ বা ৫ টাকা ৭০ পয়সা। আগের দিন দর ছিল ৬০ টাকা ৫০ পয়সা, দাঁড়িয়েছে ৫৪ টাকা ৮০ পয়সায়।
ফ্লোর প্রাইস দেয়ার দিন কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ৫১ টাকা ২০ পয়সা। বেড়ে হয়েছিল ৬২ টাকা ২০ পয়সা।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সর্বোচ্চ সীমা বা ১০ শতাংশ দরবৃদ্ধি হয়েছে ইন্দোবাংলা ফার্মার। শীর্ষে থাকা কোম্পানির শেয়ার ২১ টাকা থেকে বেড়ে সর্বশেষ হাতবদল হয়েছে ২৩ টাকা ১০ পয়সায়।
নাভানা সিএনজির দর বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ। শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩২ টাকায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২৯ টাকা ২০ পয়সা।
৯ দশমিক ৫২ শতাংশ দর বেড়ে মুন্নু সিরামিকসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১৩ টাকা ৮০ পয়সায়। আগের দিনের সর্বশেষ দর ছিল ১০৩ টাকা ৯০ পয়সা।
এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে আফতাব অটোস, ওরিয়ন ইনফিউশন, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, সোনালী পেপার, মনোস্পুল, বিডিকম ও হাক্কানি পাল্প।
সূচক কমাল যারা
সবচেয়ে বেশি ১০ দশমিক ৯১ পয়েন্ট সূচক কমেছে বিকন ফার্মার দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ০৭ পয়েন্ট কমেছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ।
ওরিয়ন ফার্মার দর ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৫ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট।
এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইউনিটক হোটেল, বেক্সিমকো লিমিটেড, আইপিডিসি ফাইন্যান্স, সি-পার্ল ও শাহজিবাজার পাওয়ারের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৫২ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৬ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে সোনালী পেপার। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ৬ দশমিক ১ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ২৪ পয়েন্ট।
আর কোনো কোম্পানি সূচক ১ পয়েন্ট যোগ করতে পারেনি।
তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৭৯ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
এর বাইরে মুন্নু সিরামিকস, আফতাব অটোস, ইন্দোবাংলা ফার্মা, নাভানা সিএনজি, বিডিকম, ইসলামী ব্যাংক ও মনোস্পুল সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৬ দশমিক ০২ পয়েন্ট।
কোন খাত কেমন
দরপতনের পাল্লা ভারি থাকায় যে ১৯টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে তার মধ্যে ওষুধ ও রসায়ন এবং বস্ত্র খাতের ২টি করে চারটি, প্রকৌশল এবং কাগজ ও মুদ্রণ খাতের ৪টি করে আটটি এবং আইটি, খাদ্য, ব্যাংক, জীবন বিমা, জুট, সিরামিকস ও ট্যানারি খাতের ১টি করে ৭টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে।
শীর্ষ পাঁচের একটি ছাড়া সবকটিতে ব্যাপক দরপতন হয়েছে।
৩০২ কোটি টাকা লেনদেন করে শীর্ষে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতের ২০টি বা ৬৬.৬৭ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। দর অপরিবর্তিত ছিল ৮টির।
পরের স্থানে থাকা বিবিধ খাতেও দরপতনের সংখ্যা বেশি। ১০টি বা ৭৬.৯২ শতাংশ কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে আগের দরে লেনদেন হয়েছে ৩টি কোম্পানির। খাতের কোনো কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়নি। লেনদেন হয়েছে ১৮৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৭৩ কোটি ২০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতে। সংখ্যায় সর্বাধিক দরপতন হয়েছে খাতটিতে। ২৫টি বা ৫৯.৫২ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। ১৩টির শেয়ার লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে।
শীর্ষ পাঁচের একমাত্র খাত হিসেবে দরবৃদ্ধি হয়েছে কাগজ ও মুদ্রণ খাতে। ১৪৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে।
প্রকৌশল খাতের সমান ৪টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হলেও দরবৃদ্ধির হার ৬৬.৬৭ শতাংশ। কারণ লেনদেন হয়েছে ৬টি কোম্পানির। বাকি দুটির একটি করে দরপতন ও অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে।
আর কোনো খাতের লেনদেন শত কোটির ঘর ছুঁতে পারেনি।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাত লেনদেনের পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে। হাতবদল হয়েছে ৬৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। খাতের সমান ১১টি কোম্পানির দরপতন ও অপরিবর্তিত দরে শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
জ্বালানি খাতে ৬৭ কোটি ৫৬ লাখ বা ৫.১৩ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন ছিল ৫ শতাংশের নিচে।
উল্লেখযোগ্য দরপতনের মধ্যে বস্ত্র খাতে ১৬টি, আইটি ৮টি, সেবা ও ভ্রমণ খাতের সবকটি, ব্যাংকের ১৩টি ও সাধারণ বিমার ৯টি কোম্পানির দরপতন দেখা গেছে।