বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় টেলিকম টাওয়ার প্ল্যাটফর্ম এবি হাইটেকের (এবিএইচটি) সিংহভাগ শেয়ার কিনে নেয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশ করল পিনাকল টাওয়ারস বা পিনাকল।
এটি এশিয়া-কেন্দ্রিক ডিজিটাল অবকাঠামো প্ল্যাটফর্ম, যা টাওয়ার ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত টেলিকম অবকাঠামোতে বিনিয়োগ, নির্মাণ ও পরিচালনা করে থাকে।
এই বিনিয়োগ বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
৪ অক্টোবর এবিএইচটির অধিকাংশ অংশ কিনে নিয়ে অধিগ্রহণ সম্পন্ন করেছে পিনাকল। ফিলিপাইনের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল বাজারেও এর যাত্রা শুরু হলো।
২০২০ সালে কেকেআর-এ বিনিয়োগের পর থেকেই উচ্চমানের অবকাঠামো সমাধান সহজলভ্য করার লক্ষে পিনাকল স্থানীয় পৃষ্ঠপোষকদের নিয়ে মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছে।
স্থানীয় সুনামধন্য পৃষ্ঠপোষকদের সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরে খুবই উচ্ছ্বসিত পিনাকল।
বাংলাদেশে পিনাকলের পৃষ্ঠপোষকরা হলেন- কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত, জেনেক্স ইনফোসিসের চেয়ারম্যান ও সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আদনান ইমাম, সেবা গ্রুপের (সেবা গ্রুপ বাংলালিংকের পূর্বসূরী সেবা টেলিকম প্রতিষ্ঠা করেছিল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ চৌধুরী এবং স্ট্র্যাটেজিক হোল্ডিংসের ভাইস-চেয়ারম্যান শাহনুল হাসান খান।
স্থানীয় পৃষ্ঠপোষক সবারই উদ্যোক্তা হিসেবে অসাধারণ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
খুব শিগগিরিই এবিএইচটি-এর নতুন নাম হতে যাচ্ছে ‘ফ্রন্টিয়ার টাওয়ার্স বাংলাদেশ লিমিটেড’। নতুন নামকরণ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর হবে।
এবিএইচটিতে পিনাকলের বিনিয়োগ এমন সময়ে এসেছে যখন বাংলাদেশি মোবাইল ব্যবহারকারীরা আরও বেশি বৈচিত্র্যময় ও নির্ভরযোগ্য টেলিকম সেবার সমাধান খুঁজছেন ৷
সরকারের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ পরিকল্পনার অধীনে আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের ব্যবহার সামনের দুই দশকে আরও বৃদ্ধি পাবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য দেশের ডিজিটাল সক্ষমতাকে বৃদ্ধি করা এবং বাংলাদেশকে একটি আইটি হাব হিসেবে গড়ে তোলা।
এই পরিকল্পনায় টেলিকম টাওয়ার ও অবকাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এবিএইচটিতে পিনাকলের বিনিয়োগের প্রধান লক্ষ্য জনসাধারণের কাছে ডিজিটাল যোগাযোগ সহজলভ্য করতে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নত করা।
পিন্যাকলের চেয়ারম্যান ও সিইও প্যাট্রিক ট্যাংনি বলেন, ‘ডিজিটাল সংযোগ হলো একটি প্রাণবন্ত বাজারে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু। আমরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে ও ডিজিটাল সংযোগের অব্যাহত সম্প্রসারণকে সমর্থন করতে পেরে অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত।’
এবিএইচটির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশের বাজারে পিনাকলের প্রবেশ দেশের টেলিকম সেক্টরের জন্য দারুণ খবর ও একটি সুযোগ। দেশের টেলিকম অবকাঠামো উন্নয়নে সমর্থন বজায় রাখতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।’
এবিএইচটির পরিচালক আদনান ইমাম এ প্রসঙ্গে আরও বলেন, ‘এটি এবিএইচটির জন্য একটি দুর্দান্ত সুযোগ। আমি বৈশ্বিক দক্ষতার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত প্ল্যাটফর্মে কাজ করতে পেরে রোমাঞ্চিত। আমরা অত্যন্ত অভিজ্ঞ দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার ও বাংলাদেশের জনগণের জন্য ভিন্ন কিছু করতে পারব বলে আশা রাখি।’
পিনাকল টাওয়ার
পিনাকল টাওয়ার টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোতে বিনিয়োগ, নির্মাণ ও পরিচালনা করে। ফিলিপাইনের বাজারের ওপর দৃঢ়ভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখা পিনাকলের বর্তমান লক্ষ্য এশিয়া প্যাসিফিকের একটি শীর্ষস্থানীয় টেলিকম অবকাঠামো প্ল্যাটফর্মে পরিণত হওয়া। প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে রয়েছেন কয়েকটি অত্যন্ত সফল টাওয়ার কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কিছু ওয়্যারলেস অপারেটরের প্রাক্তন সি-লেভেল নির্বাহী। গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম কেকেআর ২০২০ সালে পিনাকলে বিনিয়োগ করেছে।
এবি হাইটেক
এবি হাইটেক বাংলাদেশের চারটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত টাওয়ার কোম্পানির একটি। তাদের ব্যবস্থাপনায় রয়েছে অভিজ্ঞ একটি দল। যাদের বহুজাতিক কোম্পানির অভিজ্ঞতার পাশাপাশি তারবিহীন যোগাযোগ প্রযুক্তি ও টাওয়ার অবকাঠামো পরিচালনায় ২০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশের টাওয়ারের বড় আকারের রোলআউটগুলো পরিচালনা করার ক্ষেত্রে দলটির শক্তিশালী ও অনন্য নজির রয়েছে। সাইট অধিগ্রহণ ও নাগরিক কাঠামো উন্নয়নে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ দল রয়েছে তাদের। এর অবস্থান রাজধানী ঢাকায়। কোম্পানিটি সারা দেশে উচ্চ-মানের টেলিকম টাওয়ার পরিষেবা দিয়ে থাকে।