পুঁজিবাজারকে বিশ্বমানে নিয়ে যেতে হলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালনে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই কথা বলেন তিনি।
জব্বার বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে এখন পুঁজিবাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যববহার হচ্ছে। এই প্রযুক্তি বলে দিতে পারে যে ভবিষ্যতে কোন শেয়ারের দাম কমবে কোন শেয়ারের দাম বাড়বে। বাংলাদেশেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।
‘এছাড়া পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে। কারণ, ভবিষ্যতে সেই ক্ষমতাবান হবে যার কাছে যত ডাটা আছে। যদি বিএসইসি এই তথ্য ভাণ্ডার গড়ে তুলতে না পারে তাহলে তারা পিছিয়ে যাবে।’
আলোচনা অনুষ্ঠানের বিষয়বস্তু ছিল ‘রোল অফ টেকনোলজি এবং ইউএসজি এনালাইটিকস ইন সাসটেইনেবল ফাইন্যান্স।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার মিজানুর রহমান।
অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনাকারীদের সংগঠন বাংলাদেশের সম্পদ ব্যবস্থাপকের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচুয়াল ফান্ডস- এএএমসিএমএফ।
মূলপ্রবন্ধ উপস্থিত করেন এএএমসিএমএফএর কোষাদক্ষ আজাদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এখন বিশ্বের বড় বড় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করার সময় পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। সিগারেট কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে আমাদের মুনাফা হবে। কিন্তু এমন যদি কোন কোম্পানি থাকে যেখানে বিনিয়োগ করলে নারীদের কাজ বাড়বে বা পরিবেশের সুরাক্ষা হবে, বড় বিনিয়োগকারীরা সেখানে বিনিয়োগ করবে।
‘এখন ইএসজি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ই তে ইনভায়রনমেন্ট বা পরিবেশ, এস তে স্যোশাল বা সামাজিক উন্নয়ন ও জি তে গভর্নেন্স বা সুশাসন। এই তিনটি এখন দেশের বাইরের বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এএএমসিএমএফ এর সভাপতি হাসান ইমাম। তিনি বলেন, ‘ভারতে গত বছর পরিবেশবান্ধব অর্থায়নে ৬৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আমাদের দেশে এই খাতে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে না তাই আমরা বিদেশি বিনিয়োগ পাচ্ছি না।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসি কমিশনার রুমানা ইসলাম বলেন, ‘আমাদেরকে ইএসজি নিশ্চিত্ করতে হবে। নইলে বিদেশের কেউ আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করতে চাইবে না।’
বিএসইসির আরেক কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি বাংলাদেশে বিনিয়োগ আসুক। কিন্তু আসছে না। পৃথিবীতে একটি পরিবর্তন এসেছে। ৩৫ শতাংশ বিনিয়োগ এখন পরিবেশবান্ধব ব্যবসায় হচ্ছে। তাই সম্পদ ব্যবস্থাপকদের এখন এমন জায়গায় বিনিয়োগ করতে হবে যেখানে পরিবেশের সুরক্ষা হবে। আমাদের আরও বেশি বেশি ব্লু বন্ড, গ্রিনবন্ড আনতে হবে। ’
বিএসইসি আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সংঘের সদস্য। এই সংঘের নাম হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিস কমিশনস বা আইওএসসিও।
আইওএসসিও এর সদস্য দেশগুলো তাদের দেশের বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে, বিনিয়োগ শিক্ষা বাড়াতে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালন করে থাকে।
বিএসইসি ২০১৭ সাল থেকে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ বাংলাদেশে পালন করে আসছে।