বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘১০ টাকার সম্পদ ৫ টাকায়, মিউচ্যুয়াল ফান্ড তো দারুণ বিনিয়োগ’

  •    
  • ৬ অক্টোবর, ২০২২ ১৮:৫৬

‘যেটার ১০ টাকা এনএভি, সেটা ৫ টাকায় ট্রেড হচ্ছে। এটা ইনভেস্টরদের জন্য বড় অপরচ্যুনিটি। আপনারা যদি লংটার্ম ইনভেস্টর সত্যি হন, তাহলে এইসব মিউচ্যুয়াল ফান্ড কেনা উচিত। কারণ এরা বছর বছর ভালো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে। অর্থাৎ ডিভিডেন্ড ইল্ড ৫ টাকায় কিনলে কত পাব। ৫ টাকায় কিনলে কত ডিভিডেন্ড পাব সেটা যদি হিসাব করেন, তাহলে অনেক ফান্ড ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দেয়।’

সম্পদমূল্যের তুলনায় অর্ধেক দামে ইউনিট পাওয়া যায় বলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোকে বিনিয়োগের বড় সুযোগ হিসেবে দেখেছেন মিউচ্যুয়াল ফান্ড পরিচালনাকারী সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানিদের সমিতি অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যান্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা এএএমসিএমএফের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম।

তিনি বলেনে, ‘মিউচ্যুয়াল ফান্ড এখন মার্কেটে ভালো ইনভেস্টমেন্ট না, এটা প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু আমি বলব এখন শেয়ার মার্কেটের সবচেয়ে বড় সুযোগ হলো মিউচ্যুয়াল ফান্ড। কারণ, আমি এখন ৫ টাকা দিয়ে এমন একটা ইউনিট কিনতে পারি, যেটার সম্পদ আছে ১০ টাকা। এছাড়া ওই ৫ টাকা দিয়ে আমি সাড়ে ৭ শতাংশ ডিভিডেন্ড পাই। যার ডিভিডেন্ড ইল্ড বা প্রকৃত লভ্যাংশ ১৫ শতাংশ।’

বৃহস্পতিবার বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ -২০২২ উপলক্ষে এএএমসিএমএফ আয়োজনে ‘রোল অফ টেকনোলজি অ্যান্ড ইএসজি অ্যানালাইটিকস ইন সাসটেইনেবল ফাইন্যান্সিং’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

হাসান ইমাম বলেন, ‘যেটার ১০ টাকা এনএভি, সেটা ৫ টাকায় ট্রেড হচ্ছে। এটা ইনভেস্টরদের জন্য বড় অপরচ্যুনিটি। আপনারা যদি লংটার্ম ইনভেস্টর সত্যি হন, তাহলে এইসব মিউচ্যুয়াল ফান্ড কেনা উচিত। কারণ এরা বছর বছর ভালো ডিভিডেন্ড দিচ্ছে। অর্থাৎ ডিভিডেন্ড ইল্ড ৫ টাকায় কিনলে কত পাব। ৫ টাকায় কিনলে কত ডিভিডেন্ড পাব সেটা যদি হিসাব করেন, তাহলে অনেক ফান্ড ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দেয়।’

২০১০ সালের মহাধসের পর মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো লভ্যাংশ বিতরণের ক্ষেত্রে হতাশ করলেও গত দুই বছরের পরিস্থিতি ভিন্ন। ফান্ডগুলো এই দুই বছরে আকর্ষণীয় লভ্যাংশ দিয়েছে। তবে লভ্যাংশ নিয়ে বিনিয়োগকারীর খুব একটা মুনাফা হয়েছে এমন নয়। কারণ, যে হারে লভ্যাংশ দেয়া হয়েছে, ইউনিট দর কমেছে তার চেয়ে বেশি।

তালিকাভুক্ত ৩৭টি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩০টিই অভিহিত মূল্যের চেয়ে কমে লেনদেন হচ্ছে। যেসব ফান্ডের ইউনিট প্রতি সম্পদমূল্য সাড়ে ১০ টাকার বেশি, সেগুলো লেনদেন হচ্ছে ৫ টাকা বা আশেপাশে দরে। এই অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা আরও হতাশ এই কারণে যে, এবার লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট শেষে ক্রেতা এতটাই কমে গেছে যে, অর্ডার দিয়েও ইউনিট বিক্রি করা যাচ্ছে না।

এএএমসিএমএফের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের কোনো বৃদ্ধি নাই, এটা একেবারেই ভুল ধারণা। আমি যখন এই মার্কেটে শুরু করি ২০০৮ সালে, তখন আমাদের অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ছিল আড়াই হাজার কোটি টাকা, তিনটা এমসি ছিল এবং ফান্ড ছিল ১১টা। এখন সেই সিচিউশন যদি দেখি এমসি হচ্ছে ৫৪, ফান্ড হচ্ছে ৮৮ এবং অ্যাসেট হচ্ছে ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।

‘অর্থাৎ মিউচ্যুয়াল ফান্ড সেক্টর গত ১৪ বছরে ৬০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ প্রতি বছর ১৫ শতাংশ বেড়েছে। ক্যাপিটাল মার্কেটে কোনো সেক্টরে এই গ্রোথ নেই। তাহলে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের রিয়ালিটি যদি আমরা দেখি পারফর্মিং ওয়েল। সবার পছন্দ যদি ২০ শতাংশ হয় সেটা হয়ত দিতে পারছে না। কারণ হচ্ছে শেয়ার মার্কেট তো ২০ শতাংশ উঠছে না। কিন্তু ডিভিডেন্ড রিটার্ন ভালো এবং এই সেক্টরে গ্রোথ হয়েছে। এছাড়াও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে পার্টিসিপেশনটাও বেড়েছে প্রায় চার গুণ। এদিকের হিসাবেও মিউচ্যুয়ালের অবস্থান ভালো।’

‘মার্কেট গ্রোথের চেয়ে ফান্ডের গ্রোথ ভালো’

হাসান ইমাম বলেন, ‘মিডিয়াতে প্রায়ই দেখি এবং বিভিন্ন মহলে দেখি যে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের পারফর্মেন্স দুর্বল। কিন্তু রিয়ালেটিটা কি? আপনার যদি ডেটা দেখেন গত ১০ বছরের মধ্যে সাত বছরেই আউটপারফর্ম করেছে। গত বছরও যদি দেখি ইক্যুইটি মার্কেট মানে আমাদের শেয়ার মার্কেট উঠেছে ২.৫ শতাংশ। সেখানে এভারেজ ডিভিডেন্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৬.৫ শতাংশ। অর্থাৎ ইক্যুইটি মার্কেটকে মিউচ্যুয়াল ফান্ড আউট পারফর্ম করেছে প্রায় ৪ শতাংশ।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি মানি মার্কেট যেটাতে আমরা নরমলি ইনভেস্ট করি, সেটাও যদি দেখি সেখানেও আউটপারফর্ম করেছে মিউচ্যুয়াল ফান্ড।’

সেমিনারে বিএসইসি কমিশনার মিজানুর রহমান জানান, পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর স্বচ্ছতা বাড়াতে ও সাধারণ মানুষের কাছে সহজ ও জনপ্রিয় করে তুলতে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিএসইসি। ফান্ডগুলো কোন কোন শেয়ারে বিনিয়োগ করেছে, সেই বিষয়টি সবার সামনে নিয়ে আসতে চায় তারা।

তিনি বলেন, ‘মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে, আর মানুষের কাছে ফান্ডগুলোকে সহজ ও জনপ্রিয় করে তুলতে, আমরা একটি খুব আধুনিক ওয়েবসাইট তৈরি করার পরিকল্পনা করেছি। যেখানে বাংলাদেশের সব সম্পদ ব্যবস্থাপক তাদের ব্যবস্থাপনায় থাকা মিউচ্যুয়াল ফন্ডগুলোর বিভিন্ন তথ্য দেবে।

‘বিশেষ করে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো কোন শেয়ারে বিনিয়োগ করছে, এসব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখানে থাকবে। বাংলাদেশের ও বাংলাদেশের বাইরের সব বিনিয়োগকারী এখানে ঢুকে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের সমস্ত তথ্য দেখতে পারবে। এটা অ্যাপ আকারেও করা হবে।’

মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোতে স্বচ্ছতা আনতে পারলে, জবাবদিহিতা বাড়াতে পারলে ও বিনিয়োগকারীদের তারল্য দিতে পারলে, সুরক্ষা দিতে পারলে মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোতে বিনিয়োগ করবে বলেও মনে করেন তিনি।

সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ এবং রুমানা ইসলামও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর