বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘পদোন্নতির খেলায়’ ডিএসইতে অসন্তোষ

  •    
  • ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:৪৭

একজন সিনিয়র ম্যানেজার বলেন, ‘আমাকে যখন পদোন্নতি দেয়া হলো, তখন আমি সব মহল থেকে অনেক শুভেচ্ছা পেয়েছি। এখন পদোন্নতি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। ঠিকমতো কাজে মনোযোগ দিতে পারছি না। সব জায়গায় হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। এটা রীতিমতো একটা মানসিক টর্চার।’

ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদত্যাগের পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইর সেই ৯৫ কর্মকর্তাকে আগের পদ ব্যবহারের নির্দেশ দিয়ে ইমেইল করা হয়েছে।

কর্মকর্তারা বুঝতে পারছেন না, তারা এখন কোন পদে। এর কারণ, নতুন পদ ব্যবহার করতে নিষেধ করা হলেও নতুন পদের যে সুযোগ সুবিধা, সেগুলো বহাল আছে।

স্টক এক্সচেঞ্জটির পক্ষে থেকে বলা হচ্ছে কিছু কিছু কর্মকর্তার পদোন্নতির সিদ্ধান্ত সংশোধন হবে। তবে কর্মকর্তারা বলছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে পদোন্নতি দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পর এখন এসব কর্মকাণ্ডে তারা মানসিক চাপে আছেন। এতে কর্মপরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে।

কর্মকর্তাদের মধ্যে কাজের উদ্দীপনা ফেরাতে গত ২৩ আগস্ট ৯৫ জনকে পদোন্নতি দেন ডিএসইর সদ্য সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক আমিন ভূঁইয়া। কিন্তু নিজেদের মনমতো না হওয়ায় শুরু থেকেই এর বিরোধিতা করে আসছিল পরিচালনা পর্ষদ। এ টানাপড়েনের সমাপ্তি ঘটে এমডির পদত্যাগের মধ্য দিয়ে।

পদোন্নতি পাওয়া ডিএসইর একজন মহাব্যবস্থাপক নিউজবাংলাকে জানান, এমডি পদত্যাগ করার পর, তাদেরকে মেইল করে আগের পদবি ব্যবহার করে কাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এতে বিস্ময় প্রকাশ করে সেই কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা কীভাবে হতে পারে? যেখানে অফিশিয়ালি আমাদের সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে, সেখানে মেইল করে পদ বাতিল করে আগের পদেই কাজ করার কথা বলাটা কতটুকু যৌক্তিক?

ডিএসইতে পদোন্নতি নিয়ে বিরোধের জেরে এমডির পদ ছেড়েছেন তারিক আমিন ভূঁইয়া

পদোন্নতি বাতিল হওয়ায় মানসিক, সামাজিক ও পারিবারিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছেন বলে জানান একজন সিনিয়র ম্যানেজার। তিনি বলেন, ‘আমাকে যখন পদোন্নতি দেয়া হলো, তখন আমি সব মহল থেকে অনেক শুভেচ্ছা পেয়েছি। এখন পদোন্নতি বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। ঠিকমতো কাজে মনোযোগ দিতে পারছি না। সব জায়গায় হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। এটা রীতিমতো একটা মানসিক টর্চার।

‘এখন আমার পদ কী, সেটাই নিশ্চিত নই। অফিশিয়ালি জানানো হয়েছে আমি সিনিয়র ম্যানেজার হয়েছি। অথচ মেইল করে বলা হচ্ছে আমি ম্যানেজারই আছি। এখন আমি কোনটা লেখব? কোনটা ঠিক? এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর খুঁজে পাই না।’

জিএম পদবির আরেকজন বলেন, ‘ভুল করলে কর্তৃপক্ষ করেছে। সে জন্য এমপ্লয়িরা কেন শাস্তি পাবেন, অপমানিত হবেন, এটা কী আইন।’

পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা জানান, আগের এমডির নির্দেশনা মেনে যারা কাজ করেছেন, তারা এখন নিগ্রহের শিকার হচ্ছেন। জিএম হিসেবে পদোন্নতি পাওয়া একজন বলেন, ‘এক মাসের বেশি হয়েছে আমি পদোন্নতি পেয়েছি। কিন্তু এইচআর থেকে বলা হয়েছে আমি নাকি সেই ডিজিএমই আছি। আবার আমাকে জিএম হিসেবে গাড়ি দেয়া হচ্ছে, মোবাইল অ্যালাউন্সসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও দেয়া হচ্ছে জিএম হিসেবেই। তাহলে আমার পদ কোনটা?’

পদোন্নতি পাওয়া একজন এজিএম বলেন, ‘আমাদের পদোন্নতি দেয়া হলেও, আমরা সে অনুযায়ী টাইটেল লিখতে পারছি না। আমাদের টাইটেল লিখতে বাধা দেয়া হচ্ছে।’

কর্তৃপক্ষ কী বলছে

এ বিষয়ে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘খুব শিগগিরই বোর্ড মিটিং করে এসব কর্মকর্তার পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বেশ কিছু পদ আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় তা বাতিল হবে। আর কিছু সংশোধন করা হবে।’

তিনি বলেন, যেখানে আইন আছে, কর্তৃপক্ষ আছে, সেখানে তো কেউ চাইলেই তা লঙ্ঘন করতে পারে না। আইন যেখানে লঙ্ঘন করা হয়েছে, তা ঠিক করতে হবে। যেসব কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছিল তা সম্পূর্ণ আইন লঙ্ঘিত করে দেয়া হয়েছিল। সেটাই ঠিক করা হবে।’

কবে এটা কার্যকর হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই এটা হচ্ছে। যেগুলো আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, তা থেকে কিছু বাদ যাবে আর কিছু সংশোধন হবে।’

পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের ইমেইলে আগের পদেই বহাল থেকে কাজ করতে নির্দেশনা প্রসঙ্গে ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত এমডি বলেন, ‘বোর্ড থেকে সিদ্ধান্ত আসার পরপরই, সবাইকে আবারও অফিশিয়ালি জানিয়ে দেয়া হবে তাদের পদের ব্যাপারে। এতে তাদের কাজের কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না ।’

জানতে চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের এখনও কিছু জানায়নি ডিএসই। আমরা রোববার খবর নেব। বিষয়টা এমন হতে পারে, ওদের অর্গানোগ্রামের বাইরে বোধ হয় কয়েকটা পদোন্নতি হয়ে গেছে, তাই হয়ত অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী সংশোধন হতে পারে।’

‘যদি ডিএসই অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী সংশোধন বা পদোন্নতি বাতিল করে, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। যদি এর বাইরে করে তাহলে আমাদের জানাবে’- যোগ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

এর আগে জিএম থেকে সিনিয়র জিএম তিনজন, ডিজিএম থেকে জিএম তিনজন, এজিএম থেকে ডিজিএম তিনজন, সিনিয়র ম্যানেজার থেকে এজিএম ১৯ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়। এ ছাড়া ম্যানেজার থেকে সিনিয়র ম্যানেজার ১৫ জন, ডেপুটি ম্যানেজার থেকে ম্যানেজার ২৯ জন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ থেকে ডেপুটি ম্যানেজার ২৯ জন, এক্সিকিউটিভ থেকে ডেপুটি ম্যানেজার ১০ জন, জুনিয়র এক্সিকিউটিভ থেকে এক্সিকিউটিভ ছয়জন, সিনিয়র অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে জুনিয়র এক্সিকিউটিভ একজন, অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে সিনিয়র অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট দুজন, জুনিয়র অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট থেকে অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট একজন, জিএসএস থেকে জুনিয়র অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট ছয়জন পদোন্নতি পান।

এ বিভাগের আরো খবর