পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মার্জিন ঋণ নিলে বিনিয়োগকারীদের মুনাফা বাড়ে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেট (বিআইসিএম) এই গবেষণাটি করেছে।
ইনস্টিটিউটের মাল্টিপারপাস হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত ‘বিআইসিএম রিসার্চ সেমিনার-১৬’এ মূল গবেষণাটি উপস্থাপন করা হয়।
ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক তামান্না ইসলাম এটি উপস্থাপন করেন। গবেষণা শিরোনাম হচ্ছে ‘বিনিয়োগ আচরণ এবং কর্মক্ষমতার ওপর মার্জিন ঋণের প্রভাব: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের অন্তর্দৃষ্টি’।
গবেষণায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আচরণ এবং কর্মক্ষমতার ওপর মার্জিন ঋণের প্রভাব পরীক্ষার চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান তামান্না ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগের আকার মার্জিন ঋণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই ঋণ নেয়ার পর ট্রেডিংয়ের ফ্রিকোয়েন্সি কমে যায়। মার্জিন ঋণের পরিমাণ রিটার্নেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। পোর্টফোলিওর আকার মার্জিন ঋণের পরিমাণ দ্বারা প্রভাবিত হয়।’
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইসিএমের নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মাহমুদা আক্তার।
সেমিনারে আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন এবং রয়েল ক্যাপিটাল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ মুনির আহমেদ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইনস্টিটিউটের রিসার্চ ফেলো ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুবর্ণ বড়ুয়া।
পুঁজিবাজারে মার্জিন ঋণের প্রভাবে নিয়ে একমাত্র বিআইসিএমই গবেষণা করেছে বলে দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী প্রেসিডেন্ট মাহমুদা আক্তার।
তিনি বলেন, ‘বিআইসিএম পুঁজিবাজার সংক্রান্ত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কাজের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের উন্নয়নে অবদান রাখছে। বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের প্রেক্ষিতে মার্জিন ঋণের ওপর এ ধরনের গবেষণা বাংলাদেশে প্রথম। গবেষণালব্ধ ফলাফল দেশের পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।’
তবে গবেষণার বিষয় ও মাঠ পর্যায়ে প্রাপ্ত ফলাফল সাংঘর্ষিক বলে মত দেন সেমিনারের আলোচক আল-আমিন। আরও বেশি সময় নিয়ে গবেষণা পরিচালনার পরামর্শ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক।
তিনি বলেন, ‘গবেষণাটির লিটারেচার রিভিউ এবং ফাইন্ডিং সাংঘর্ষিক। এখানে প্র্যাকটিক্যাল আরও অনেক বিষয় আনলে ভালো হতো। আরও কিছু বিষয় যুক্ত করে গবেষণার সময়সীমা বাড়িয়ে ফলাফল পুনরায় পরীক্ষ করা যেতে পারে।’
এ ছাড়াও এই গবেষণায় মাল্টিনমিয়াল লজিস্টিক রিগ্রেশন মডেলের ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
মোহাম্মদ মুনির আহমেদ বলেন, ‘মার্জিন ঋণের প্রভাব নিয়ে মার্কেটে যারা আছেন তাদের চিন্তা করা উচিত। কেন দেব, কী কারণে দেব- সে বিষয়টাও ভাবা উচিত। এটা চিন্তা করলে সবার জন্য ভালো হবে।’
বিআইসিএমের অনুষদ সদস্য, কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।