বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ক্রেতা নেই শেয়ারের, ২০০ কোম্পানিতে লেনদেন ৪০ কোটি

  •    
  • ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৫:২৯

১৬ পয়েন্ট সূচক বাড়ার দিন হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ২১৬ কোটি ৯৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে কেবল ১০টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ৪৯৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। অন্যদিকে সবচেয়ে কম লেনদেন হওয়া ২০০টি কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

বছরের সর্বোচ্চ লেনদেনের রেকর্ড গড়ার পরদিন থেকে পুঁজিবাজারের লেনদেনের চিত্র বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেই চলেছে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছে গত ২৭ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এদিন সূচক বাড়লেও বিপুলসংখ্যক কোম্পানির শেয়ারের কার্যন্ত কোনো ক্রেতা ছিল না। এর মধ্যে আছে বহুজাতিক শক্তিশালী মৌলভিত্তির কোম্পানিও, যেগুলো প্রতি বছরই আকর্ষণীয় হারে লভ্যাংশ দিয়ে থাকে।

এদিনও আরও বেশ কিছু শেয়ারের দরপতনের মধ্য দিয়ে সেগুলো ফ্লোর প্রাইসে ফিরে এসেছে। বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দরেও ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

কিছুদিন আগে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল, এমন একটি কোম্পানির একটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে সারা দিনে, যদিও লাখ লাখ শেয়ারের বিক্রয়াদেশ ছিল।

দুটি কোম্পানির এভাবে একটি করে, দুটি কোম্পানির তিনটি করে, দুটি কোম্পানির ১০টি করে শেয়ার হাতবদল হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৬টি কোম্পানির ১০০টিরও কম শেয়ার সারা দিনে হাতবদল হয়েছে।

এর মধ্যে একটি আছে ব্যাংক খাতের বেশ শক্তিশালী কোম্পানি, একটি আছে শক্তিশালী মৌলভিত্তির বহুজাতিক কোম্পানি।

প্রকৌশল খাতে দেশের সবচেয়ে বড় কোম্পানি ওয়ালটনের শেয়ার হাতবদল হয়েছে কেবল ১৩০টি, ব্যাংক এশিয়ার ২১১টি, বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজারের ৩০২টি, আরেক বহুজাতিক বার্জার পেইন্টসের ৭০৮টি, হাইডেলবার্গ সিমেন্টের ৮৭৭টি, বাটা শুর ১ হাজার ৩০৮টি, বিমা খাতের শক্তিশালী কোম্পানির একটি, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ১ হাজার ৪৪টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

এমনকি গত অর্থবছরে ১ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা লভ্যাংশ বিতরণ করা ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির কেবল ৪৪ হাজার ৪২০টি, ৩ হাজার ৩৭৫ কোটি ৭৫ লাখ ৫৫০ টাকা লভ্যাংশ বিতরণ করা গ্রামীণফোনের কেবল ৬৯ হাজার ১৭৮টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

আগের কর্মদিবসে যতটুকু সূচক বেড়েছিল, বৃহস্পতিবার তার দ্বিগুণেরও বেশি পয়েন্ট সূচকে যোগ হলে লেনদেনের ৪০ শতাংশ হয়েছে ১০টি শেয়ারে।

১৬ পয়েন্ট সূচক বাড়ার দিন হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ২১৬ কোটি ৯৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে কেবল ১০টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ৪৯৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

অন্যদিকে সবচেয়ে কম লেনদেন হওয়া ২০০টি কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

এই লেনদেন আবার গত ২৭ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত ২৪ আগস্ট লেনদেন ছিল এর চেয়ে কম ১ হাজার ১৩৩ কোটি ৭১ লাখ ৬২ হাজার টাকা।

বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

পুঁজিবাজারের সূচক বৃদ্ধির যে প্রবণতা গত ৩১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছিল, তাতে প্রধান ভূমিকায় থাকা ওরিয়ন ও বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানিগুলোর মধ্যে আগের দিন দর বেড়েছিল বেক্সিমকোর আর পতন হয়েছিল ওরিয়নগুলোর। বৃহস্পতিবার পুরো উল্টো চিত্র। দর কমেছে বেক্সিমকো কোম্পানিগুলোর আর বেড়েছে ওরিয়নগুলোর।

লেনদেনের শীর্ষে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডে হাতবদল হয়েছে ১১০ কোটি ৭২ লাখ টাকার শেয়ার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৯৯ কোটি ১০ লাখ টাকার।

এদিকে দরপতন ও দরবৃদ্ধির পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা প্রায় কাছাকাছি। ৮৫টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে বেড়েছে ৯৪টির। আর সর্বোচ্চ ১৮৬টি আগের দরে হাতবদল হয়েছে, যার প্রায় সবই পড়ে রয়েছে ফ্লোর প্রাইসে।

পুঁজিবাজারের চিত্র নিয়ে ক্যাল সিকিউরিটিজের সিইও রাজেশ সাহা বলেন, ‘স্মার্ট ইনভেস্টররা ২৯, ৩০ তারিখে শেয়ার কিনে থাকেন। কিন্তু হাউজগুলোর বিভিন্ন পলিসি থাকে, বিধায় মার্জিন লোন বন্ধ রাখে। যার কারণে মার্কেট একটু ডিপ্রেশনে আছে।’

তিনি যোগ করেন, ‘লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পরে কিছু টাকা মার্কেট থেকে বেরিয়ে গেছে। সেটা ইন হতে আরও অন্তত ২০দিন সময় লাগতে পারে।’

সূচক বাড়াল যারা

সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ২৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। এদিন শেয়ারটির দর বেড়েছে ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

আইডিএলসির দর ৭ দশমিক ১৬ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট।

কোহিনূর কেমিক্যাল সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ।

এর বাইরে ওরিয়ন ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং, সোনালী পেপার, বসুন্ধরা পেপার, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ও ইসলামী ব্যাংক সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৯২ পয়েন্ট।

বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ৩ দশমিক ২৫ পয়েন্ট সূচক কমেছে বেক্সিমকো লিমিটেডের দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ১ দশমিক ৪১ শতাংশ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ দশমিক ২৫ পয়েন্ট কমেছে আইপিডিসির কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ।

ইউনাইটেড পাওয়ারের দর শূন্য দশমিক ৫১ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ১ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট।

এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মা, শাইনপুকুর সিরামিকস, আল আরফাহ ব্যাংক, সাইফ পাওয়ার, আরএকে সিরামিকস, বিডি কম ও এনার্জি পাওয়ার জেনারেশনের দরপতনে সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১১ দশমিক ২৪ পয়েন্ট।

শীর্ষ ৫ খাত যেমন

ছোট চারটি খাতে দরবৃদ্ধি দেখা গেছে। এগুলোর মধ্যে সেবা ও আবাসন, কাগজ ও মুদ্রণ এবং ট্যানারি খাতে ৫০ শতাংশ এবং পাট খাতে ২টি বা ৬৬ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে।

প্রযুক্তি খাতে ৭২ শতাংশ দরপতন হলেও সংখ্যার দিক থেকে বেশি দরপতন হয়েছে প্রকৌশল খাতে, ১৩টি কোম্পানির দরপতন দেখা গেছে।

বস্ত্র, আর্থিক খাত, ব্যাংক, বিমা, ওষুধ ও রসায়ন খাতে দরপতনের চেয়ে অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হওয়া কোম্পানির সংখ্যাই বেশি ছিল।

লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে বিবিধ খাত। ২০০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা বা ১৭.৮১ শতাংশ লেনদেনের বিপরীতে খাতটির ৬টি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। ৪টির দর বেড়েছে, ৩টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হয়েছে ১৬৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা বা ১৪.৮৮ শতাংশ। এদিন ১৪টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ৬টির দরপতন ও ৯টির দর অপরিবর্তিত ছিল।

তৃতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে প্রকৌশল খাতে। ১৩৫ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেনের বিপরীতে ১৪টি কোম্পানির দরবৃদ্ধি, ১৩টির দরপতন ও ১৫টির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।

আর কোনো খাতের লেনদেন শত কোটির ঘরে পৌঁছায়নি।

এর পরে সেবা ও আবাসন খাতে লেনদেন হয়েছে ৮৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। ২টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও দরপতন হয়েছে।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা প্রযুক্তি খাতে ৮৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়। খাতের ৩টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ৮টির দর।

দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০

১০ শতাংশ করে নগদ ও বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণার দিন মনোস্পুলের শেয়ার লেনদেনে কোনো সার্কিট ব্রেকার ছিল না। অর্থাৎ কোম্পানির শেয়ারদর যত খুশি বাড়তে বা কমতে পারতো। লভ্যাংশ ঘোষণার খবরে বৃহস্পতিবার কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ১৯.২৩ শতাংশ বা ৩৭ টাকা ১০ পয়সা।

সর্বশেষ শেয়ারটি হাতবদল হয়েছে ২৩০ টাকায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১৯২ টাকা ৯০ পয়সা।

ইস্টার্ন হাউজিংয়ের দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১৬ টাকা ৬০ পয়সায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ১০৮ টাকা ২০ পয়সা।

৭ দশমিক ৪১ শতাংশ দর বেড়ে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩০৪ টাকা ১০ পয়সায়, আগের দিনের সর্বশেষ দর ছিল ২৮৩ টাকা ১০ পয়সা।

এ ছাড়াও দরবৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে আইডিএলসি, কোহিনূর কেমিক্যাল, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স, কেয়া কসমেটিকস, কে অ্যান্ড কিউ লিমিটেড ও আমান ফিড।

দর পতনের শীর্ষ ১০

পতনের তালিকার শীর্ষে রয়েছে বিডিকম। ৭ দশমিক ২৬ শতাংশ কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৬১ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়। আগের দিনে লেনদেন হয় ৬৬ টাকা ১০ পয়সায়।

পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স। ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ দর কমে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৬ টাকা ৬০ পয়সায়।

তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে আইপিডিসি। ৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৬৬ টাকা ৫০ পয়সায় হাতবদল হয়।

দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- মুন্নু অ্যাগ্রো, লাভেলো আইসক্রিম, এনার্জি পাওয়ার জেনারেশন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, লুবরেফ বাংলাদেশ, ইস্টার্ন ক্যাবলস ও মীর আকতার লিমিটেড।

এ বিভাগের আরো খবর