বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশকে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি

  •    
  • ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৯:৫৪

বাংলাদেশের জন্য তৈরি করা ‘কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজি’র আওতায় আগামী পাঁচ বছরে এ সহায়তা দেয়া হবে বলে আভাস দিয়েছে ম্যানিলাভিত্তিক বহুজাতিক এই ঋণদানকারী সংস্থাটি।

বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ লাখ ১৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৪৪ হাজার কোটি টাকা।

বাংলাদেশের জন্য তৈরি করা ‘কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজি’র আওতায় আগামী পাঁচ বছরে এ সহায়তা দেয়া হবে বলে আভাস দিয়েছে ম্যানিলাভিত্তিক বহুজাতিক এই ঋণদানকারী সংস্থাটি।

মঙ্গলবার ম্যানিলায় এডিবির সদরদপ্তরে সংস্থার প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়ার সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে এডিবির প্রেসিডেন্ট অর্থমন্ত্রীকে এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন বলে অর্থমন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

ম্যানিলায় এডিবির বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে গত সোমবার ঢাকা ছাড়েন অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এ সম্মেলন শেষ হবে ৩০ সেপ্টেম্বর।

বিশ্বব্যাংকের পর এডিবি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী। বর্তমানে বাংলাদেশে সংস্থাটির অর্থায়নের পরিমাণ ২ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা।

বৈঠকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার ভুয়সী প্রশংসা করেন এডিবির প্রেসিডেন্ট এবং যে কোনো বিপদে বাংলাদেশের পাশে সব সময় থাকবেন বলে জানান তিনি।

বৈঠকে বাজেটের পাশাপাশি নীতি-সহায়তায় এডিবির সহযোগিতা চান অর্থমন্ত্রী।

জবাবে মি. মাসাতসুগু বলেন, বাংলাদেশকে তারা সব সময় গুরুত্ব দেন এবং ভবিষ্যতে এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে এডিবি বাংলাদেশের বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করায় এডিবির প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান মুস্তফা কামাল।

দ্বিপাক্ষিক আলাপকালে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ মাত্র ৩৪ শতাংশ, যা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম। বাংলাদেশ অত্যন্ত সক্ষমতার সাথে নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করে চলেছে। কখনই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি।

বাংলাদেশের উন্নয়নের মাইলফলক অর্জনে এডিবির অব্যাহত সমর্থন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান অর্থমন্ত্রী।

মহামারি কোভিডের অভিঘাত মোকাবিলায় এডিবি দ্রুত সাড়া দেয়ায় প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্য সংকট থেকে পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে এডিবি যেভাবে এগিয়ে এসেছে, তা দেখে আমরা অভিভূত। ভ্যাকসিন কেনার জন্য সময়মতো অর্থ না দিলে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুত করোনা মোকাবিলা করা কঠিন হতো।’

অর্থমন্ত্রী আরও জানান, এডিবি বাংলাদেশের জন্য ২০২১-২০২৫ মেয়াদে কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেছে – এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর আওতায় ১২-১৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহয়তার যোগান থাকবে বলে আশা করা যায়।

বাংলাদেশর অগ্রগতি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সকল আর্থ-সামাজিক সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।’

জলবায়ু অভিযোজন, প্রশমন এবং দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বাংলাদেশে এডিবির সহায়তা কামনা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, জলবায়ুর অভিঘাত মোকাবিলায় মিশ্র অর্থায়নের পরিবর্তে নমনীয় ঋণ সহায়তা হবে বাস্তবসম্মত পদ্ধতি।

বাংলাদেশ ও এডিবির সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী বছর বাংলাদেশ ও এডিবির জন্য এটি একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক। ২০২৩ সাল আমাদের অংশীদারত্বের ৫০তম বার্ষিকী হবে।’

এ উপলক্ষে এডিবি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান মুস্তফা কামাল।

এডিবির শীর্ষ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ থেকে বিশেষ করে ভাইস-প্রেসিডেন্ট নিয়োগের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।

এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সক্ষমতার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের সক্ষমতার একটি প্রতীক।

কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যগত ও আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপ এবং টিকা কার্যক্রমেরও প্রশংসা করেন তিনি। বলেন, শুরু থেকেই বাংলাদেশের প্রতি এডিবির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।

এবারের বার্ষিক সভায় বাংলাদেশ যে বিষয়গুলো তুলে ধরেছে, সেগুলোও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি।

করোনা মহামারি কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের সামাজিক এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে এডিবি শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও সংস্থাটি বাংলাদেশের পাশে সবসময় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এটির প্রেসিডেন্ট।

ফিলিপাইনের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক

বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মঙ্গলবার এডিবির সদরদপ্তরে বার্ষিক সভার পাশাপাশি ফিলিপাইনের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ আহবান জানান তিনি।

মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইন এ বছর কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ করেছে। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও জোরদার করতে যৌথ কৌশল প্রণয়ন করার প্রস্তাব দেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী।

দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ মাত্র ১০৮ মিলিয়ন ডলার। বাণিজ্য বাড়াতে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, ওষুধ, কৃষি পণ্য, হালকা প্রকৌশল, পাট এবং পাটজাত পণ্য হচ্ছে সম্ভাবনাময় খাতগুলো। এসব খাতে নজর দিলে উভয় দেশের বাণিজ্য বাড়বে।

এ বিভাগের আরো খবর