দেশের অর্থনীতি সম্প্রসারণে চীনের প্রবৃদ্ধি অনুসরণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
ঢাকার পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘চায়না-বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজেস কো-অপারেশন ফোরাম ২০২২’ শীর্ষক বিজনেস নেটওয়ার্কিং প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শনিবার তিনি এ কথা বলেন।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চীনের সম্ভাব্য প্রবৃদ্ধি বুঝতে পেরেছিলেন এবং দ্রুত বর্ধনশীল দেশের সঙ্গে ভালো বন্ধুত্ব শুরু করেছিলেন।
চীন বাংলাদেশের অবকাঠামো নির্মাণ, অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনাসহ বিভিন্নভাবে সাহায্য করছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সফর, সাংস্কৃতিক সফরসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদার করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ চীনের বাজারে ৯৯ শতাংশ পণ্যের শুল্কমুক্ত অ্যাক্সেস উপভোগ করছে। তবে আমাদের দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব এবং এফটিএফ প্রয়োজন। বাংলাদেশ চায় চীন থেকে আরও বেশি এফডিআই আসুক। আমরা চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য ডেডিকেটেড বিশেষ অর্থনৈতিক জোন তৈরি করেছি।’
চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, ‘চীন-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী, পরিপূরক এবং ক্রমবর্ধমান। আমাদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক বিশাল এবং মজবুত। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের মাঝামাঝি চীন ও বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে দুই পক্ষ কৃষি, বাণিজ্য, সামুদ্রিক বিষয়, জলবায়ু পরিবর্তন, অবকাঠামো, নগর ব্যবস্থাপনা এবং দারিদ্র্যের মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ব্যাপক সাফল্য অর্জন করছে।’
তিনি বলেন, ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে চীন ১৪৯টি দেশ এবং ৩২টি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে ২০০টিরও বেশি সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করেছে। এই বছরের প্রথমার্ধে বিআরআইয়ে জড়িত দেশগুলোর সঙ্গে চীনের পণ্যের বাণিজ্য মোট ১১ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন এবং এই দেশগুলোতে এর অ-আর্থিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ ১৪৯ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে।’
লি জিমিং বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদ বৃদ্ধি এবং জনগণের জীবন-জীবিকা সহজ করা বাংলাদেশ সরকারের লক্ষ্য।
সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে চীন অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন উপায়ে বাংলাদেশকে ক্রমাগত সহযোগিতা করছে। এর মধ্যে রয়েছে রেয়াতি ঋণ, বিনিয়োগ সহযোগিতা, প্রকল্প চুক্তি এবং চীন-সহায়তা প্রকল্প।
বাংলাদেশে আরও চীনা বাজারমুখী বিনিয়োগ প্রয়োজন। রপ্তানি বাড়াতে চীনের বাজারে যা প্রয়োজন তা বাংলাদেশকে উৎপাদন করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
প্রথম শিল্প পার্ক হিসেবে শিগগিরই চট্টগ্রামে নির্মিত হবে চীনা অর্থনৈতিক জোন, যা যুগান্তকারী ও তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানান তিনি।