বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাইবার হামলার ঝুঁকি বাড়ছে। এর মধ্যে মাঝারি আকারের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব হামলা মোকাবিলায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা ও সচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স টেকনোলজি (আইসিটি) অ্যান্ড ডিজিটাইজেশন অফ ট্রেড বডিজের সভায় বক্তারা এ কথা বলেছেন।
বক্তারা বলেন, মাঝারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাইবার হামলা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত কারিগরি সক্ষমতা ও কর্মীদের সচেতনতার অভাব রয়েছে।
স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা জানান, বিশ্বের ৬৬ শতাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অন্তত একবার সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। ২০০২ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এ ধরনের হামলার হার ৮০ শতাংশ বেড়েছে।
হামলাগুলোর ৯৩ শতাংশই ঘটেছে ফিশিং ই-মেইলের মাধ্যমে। এ ছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার ঘটনা বাড়ছে। সাইবার হামলা প্রতিরোধে নিরাপত্তামূলক সফটওয়্যারের বাজার বছরে সাড়ে ১৪ শতাংশ হারে বাড়ছে। বর্তমানে এই বাজারের বৈশ্বিক আকার ১৫৬ বিলিয়ন ডলার।
ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতিয়ে নেয়া প্রতিরোধ করতে কর্মীদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষতা ও সচেতনতা বাড়ানো জরুরি বলে মন্তব্য করেন এই খাতের উদ্যোক্তারা।
সভায় স্ট্যান্ডিং কমিটির ডিরেক্টর ইন-চার্জ সৈয়দ আলমাস কবীর জানান, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে। এ জন্য একাধিক সেমিনারের আয়োজন ও সচেতনতামূলক পোস্টার করা হবে।
বৈঠকে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, বেশির ভাগ সরকারি অনলাইন সার্ভিস কার্যকর নয়। বিশেষ করে অনলাইনে সনদ গ্রহণ করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু।
দেশের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্ট্যান্ডিং কমিটিকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
‘তথ্যপ্রযুক্তি একটি ব্যাপক সম্ভাবনাময় খাত উল্লেখ করে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এ খাতের রপ্তানি বাড়াতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে কমিটির প্রতি আহ্বান জানান।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান শহিদ-উল মুনীর। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কমিটির সদস্যদের একযোগে কাজ করার কথা বলেন তিনি।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কমিটির কো-চেয়ারম্যান মো. নাজমুল করিম বিশ্বাস কাজল, মো. মোতাহার হোসেন খান, অন্যান্য সদস্য ও এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।