প্রক্রিয়াজাত মাংস রপ্তানিতেও মিলবে ২০% নগদ সহায়তা
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে রপ্তানি খাতে নগদ সহায়তা ঘোষণা করেছে সরকার। গত ২০২১-২২ অর্থবছরের মতো এবারও ১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত মোট ৪৩টি খাতে এই নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তানিকারকরা। এবার ১০০ শতাংশ হালাল মাংসের পাশাপাশি ১০০ শতাংশ হালাল প্রক্রিয়াজাত মাংসজাত পণ্য রপ্তানিতেও ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাওয়া যাবে। অন্যান্য খাতে পণ্য রপ্তানিতে গতবারের মতো একই হারে নগদ সহায়তা পাবেন রপ্তানিকারকরা।
গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এই সুবিধা আগামী বছরের ৩০ জুন অর্থাৎ চলতি অর্থবছর জুড়ে প্রযোজ্য হবে।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে ১০০ শতাংশ হালাল মাংস রপ্তানিতে ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। এবার তার সঙ্গে ১০০ শতাংশ হালাল প্রক্রিয়াকৃত মাংসজাত পণ্য রপ্তানিতেও ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেয়া হবে।
দেশের রপ্তানি বাণিজ্য উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এই সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিশ্ববাজারে হালাল মাংস রপ্তানি উৎসাহিত করতে এতদিন ধরে সরকার ২০ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দিয়ে আসছে। এবার মাংস থেকে উৎপাদিত প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানির বিপরীতেও নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে নগদ সহায়তা পাবে এমন তালিকায় মাংসজাতীয় পণ্য যুক্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি কোম্পানি মাংস প্রক্রিয়াজাত করে বিদেশে রপ্তানি করে। এসব কোম্পানি প্রক্রিয়াজাত মাংস, কমুটেড মাংস, কিমা, নাগেট, বল, রোল, স্মোকড ও সল্টেড মিট ইত্যাদি রপ্তানি করে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ, মালয়েশিয়া, হংকং এবং মালদ্বীপে প্রধানত রপ্তানি হচ্ছে এ জাতীয় পণ্য। বিশ্ববাজারে এ ধরনের পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। এ কারণে রপ্তানিতে উৎসাহ দিতে এ ধরনের পণ্যের রপ্তানি উৎসাহিত করতে সরকার প্রণোদনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বর্তমানে ৪২ খাতের বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানির বিপরীতে সরকার ১ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত নগদ সহায়তা দিচ্ছে। গত অর্থবছরে চা, দেশে তৈরি বাইসাইকেল ও এর যন্ত্রাংশ, দেশে তৈরি এমএস স্টিল পণ্য এবং দেশে উৎপাদিত সিমেন্ট শিট রপ্তানি প্রণোদনা বা নগদ সহায়তার আওতাভুক্ত করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে অডিট খরচসহ ৮ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা নগদ সহায়তা দিয়েছে সরকার। যা এর আগের অর্থবছরে ছিল ৬ হাজার ৬৪৫ কোটি টাকা। প্রতিবছর নগদ সহায়তার দাবিগুলোর অডিটের পেছনে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানির বিপরীতে নগদ সহায়তা বাবদ ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় বেড়েছে সরকারের।
গত অর্থবছর চারটি নতুন খাত যুক্ত হয়। অন্যদিকে, ফ্রিল্যান্সারদের আয় আনার প্রক্রিয়া সহজ করায় আইটি খাতে বেশি রপ্তানি আয় হয়েছে এবং সেখানে নগদ সহায়তা বেশি লেগেছে। এ ছাড়া ইপিজেডের সব ধরনের পণ্য নগদ সহায়তা পাচ্ছে। অন্যদিকে, গত অর্থবছর তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। তৈরি পোশাক খাতের বিভিন্ন উপখাতেও নগদ সহায়তা রয়েছে। পোশাক রপ্তানি বাড়লে মোট নগদ সহায়তার দাবি বেড়ে যায়। ফলে সামগ্রিকভাবে নগদ সহায়তা বেড়েছে।