লবণ চাষিদের ঋণসীমা বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে একরপ্রতি লবণ চাষে এক লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ টাকা ঋণ পাবেন চাষিরা। এতদিন এই ঋণসীমা ছিল ৪৪ হাজার টাকা।
এ হিসাবে লবণ চাষিদের ঋণসীমা বাড়ল সাড়ে তিনগুণ। একইসঙ্গে লবণ চাষে ঋণ বিতরণের সময় ডিসেম্বর থেকে এক মাস এগিয়ে মৌসুমের শুরুর সময় নভেম্বর মাস করা হয়েছে।
রোববার এ বিষয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
লবণ চাষিরা ২০১০ সাল থেকেই ৪ শতাংশ রেয়াতি সুদহারে ঋণ নিতে পাচ্ছেন। ওই সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, অবশিষ্ট ৪ শতাংশ সুদ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দিয়ে আসছে ব্যাংকগুলোকে।
জনপ্রতি শূন্য দশমিক ৫ বিঘা থেকে ২ দশমিক ৫ একর পর্যন্ত জমিতে লবণ চাষের জন্য একক বা দলগতভাবে এ ঋণ সুবিধা পাওয়া যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়, এরিয়া এপ্রোচ ভিত্তিতে সমুদ্র উপকূলীয় যেসব এলাকা লবণ চাষের উপযোগী, সেসব এলাকায় লবণ চাষ মৌসুমে (সাধারণত নভেম্বর মাস থেকে পরবর্তী বছরের মে মাস পর্যন্ত) লবণ চাষের জন্য উপরোক্ত রেয়াতি সুদ হার সুবিধা প্রযোজ্য হবে।
আগে লবণ চাষের জন্য ডিসেম্বর থেকে ঋণ বিতরণের সুযোগ রাখা হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকের জন্য নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়ণ করে ঋণ বিতরণের নির্দেশনা তৈরির সুযোগও রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।
এখন মৌসুমের সময় নির্ধারণের বিষয়টি সবার জন্য একই করে দেওয়া হল।
লবণ চাষে একরপ্রতি সর্বোচ্চ কত খরচ হতে পারে, সেটির ব্যয়ের তালিকাও প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে পলিথিন কেনা, পানি উত্তোলন খরচ, মজুরি, জমির ভাড়া, বাঁধ নির্মাণ ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে সর্বোচ্চ ব্যয় হচ্ছে এক লাখ ৫৩ হাজার ৫০০ টাকা।
২০১১ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশ করা তালিকায় ব্যয় দেখানো হয়েছিল একরপ্রতি ৪৪ হাজার টাকা।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, যেসব লবণ চাষির জমির মালিকানা রয়েছে তাদের মালিকানার স্বপক্ষে দাখিল করা দলিলপত্র এবং প্রাথমিক জামানত হিসেবে উৎপাদিত লবণ হাইপোথিকেশন (অভিজ্ঞতার আলোকে লবণ উৎপাদনের সাম্ভ্যাব্য পরিমাণ) এর বিপরীতে রেয়াতি সুদে ঋণ পাবেন।
আর বর্গাচাষিদের ক্ষেত্রে জমির মালিক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বিশেষ সুবিধা ও কৃষকের ১০ টাকায় খোলা ব্যাংক হিসাবে কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড ছাড়া লবণ চাষিদের শনাক্তকরণের অন্য কোনো কাগজপত্রের প্রয়োজন হবে না। বিতরণ করা ঋণের নির্ধারিত মেয়াদ শেষে কোনো ঋণ সম্পূর্ণ বা আংশিক অনাদায়ী থাকলে রেয়াতি সুদ পাবে না। এক্ষেত্রে ঋণ বিতরণের তারিখ থেকে ব্যাংক নির্ধারিত স্বাভাবিক সুদহার প্রযোজ্য হবে।
ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ১২ মাস। আর কোনো ব্যাংক কৃষকের কাছ থেকে ৪ শতাংশের বেশি সুদ নিলে ওই ঋণের বিপরীতে ভুর্তকি সুবিধা বাতিল হয়ে যাবে।