বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অক্টোবর থেকেই ঘুরে দাঁড়াবে অর্থনীতি: এম এ মান্নান

  •    
  • ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৮:১৯

 ‘দীর্ঘদিন টাকাটাকে আমরা ছিপি আটকে রাখার মতো রেখেছিলাম। ছিপি যদি লুজ হয়, হঠাৎ ব্রার্স্ট হয়ে গেলে যা হয় তাই হয়েছে। অনেকে বলে, এটাকে অনেকটা বাঁধভাঙা ঢেউয়ের মতো এক লাফে ১২০ টাকায় উঠল। এটা আর্টিফিশিয়াল নয়, ন্যাচারাল। ওইটা রিয়েল প্রাইসে ছিল না। রিয়েল প্রাইসে নামা শুরু করেছে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ফের বিপদে ফেলে দিয়েছে। তার পরও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমরা ভালো অবস্থায় আছি। আমাদের রপ্তানি আয় বাড়ছেই, প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ঠিক, তবে শিগগিরই নিম্নমুখী হবে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ কমলেও এখনো ছয় মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সব মিলিয়ে অক্টোবর থেকে আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে।

মিন্টো রোডে নিজের বাসায় নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এমন আশার কথাই শুনিয়েছেন মৃদুভাষী কিন্তু দৃঢ়চেতা ‘প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী’ মানুষ এম এ মান্নান।

নিউজবাংলা: দুই বছরের বেশি সময়ের করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় কেমন চলছে বাংলাদেশের অর্থনীতি?

এম এ মান্নান: আমি সরকারে রয়েছি টানা ৯ বছর। অর্থনীতিকে মোটামুটি কাছে থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। ২০০৯-১০ সালের দিকে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক যে স্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখেছিলাম, এই দুটো পাশাপাশি ছিল, একটির সঙ্গে আরেকটি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এটিই নিয়ম।২০১৯ সালে প্রথম যখন করোনার আবির্ভাব হয় অপ্রত্যাশিতভাবে। পৃথিবীর কোনো বৈজ্ঞানিক, কেউ-ই এটা সম্পর্কে বুঝতে পারেননি চীনের উহানে যখন শুরু হয়। কোন দিকে যাচ্ছিল? কেউ বোঝেননি।

আমি মনে করেছিলাম, আমাদের দিকে মনে হয় আসবে না। পশ্চিমের দিকে চলে গেল। সিল্করুট ধরে প্রায়ই যাচ্ছিল ইউরোপ হয়ে পশ্চিমের দিকে। পরে যখন দেখলাম আবার আমাদের দিকে আসছে এবং ভালোই এসেছিল, বড় ধাক্কা বলা যায়। প্রতিবেশী বিশাল অর্থনীতির দেশ ভারতের ভয়ংকর অবস্থা শুরু হলো। যেহেতু নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আমাদের দিকে অনেক আঘাত আসা শুরু করল।

অর্থনীতির ক্ষেত্রে, প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমাদের যে উঠতি সময় ছিল, এটা ভীষণভাবে ধাক্কা খেল। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৮-এর কাছাকাছি চলে গিয়েছিল, বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, সেটা ৪-এর কাছাকাছি চলে এলো।

এখানে বলে রাখা উচিত, এই চারও কিন্তু তখন বিস্ময়কর ভালো ছিল। কারণ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে গিয়েছিল। চীন নেতিবাচকের কাছাকাছি ছিল, অন্যান্য দেশও তাই। আইএমএফের তালিকা আমার অফিসে রয়েছে। সেই অনুযায়ী, এই অঞ্চলের ১২টি দেশের মধ্যে আমাদের অবস্থান চমৎকার ছিল।

সেই জায়গা থেকে ২০২১ সালে যখন ভাবলাম করোনা চলে গেছে, কিন্তু একুশের শেষের দিকে আবার সেকেন্ড ওয়েভ আসা শুরু করল। ২০২২ সালের শুরুতে প্রথম ভালোই উঠল। এখন আবার নামছে। শুধু আমাদের দেশে নয়, বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এটা ওঠানামা করছে।

নিউজবাংলা: করোনায় কতটা ক্ষতি হয়েছে অর্থনীতি?

এম এ মান্নান: অবশ্যই আমাদের বড় ক্ষতি করেছে। তার মাশুল এখনো দিতে হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতির তুলনায় আমরা তো খুবই সামান্য অংশ। বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে শতকরা তুলনায় গেলে দুই শতাংশ হব না হয়তো। কিন্তু যেহেতু চলাচল, সংযুক্তি এবং আন্তসম্পর্ক অনেক বেশি, তাই ধাক্কাটা ভালোই লেগেছিল। আমরা যেখানে বিক্রি করি, ইউরোপ-আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, কারণ পূর্ব দিকে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য কম ছিল। ফলে ওই তিন জায়গায় কিন্তু ব্যাপকভাবে ধাক্কা খায়। যে কারণে আমাদের কাজ করার ওয়েজ ইকোনমি, কাজ করার সুযোগ কমে আসে। প্রবাসে আমাদের যে শ্রমিক ভাইয়েরা মাটি কামড়ে পড়েছিল, তাদের বেতন কমে আসছিল। ১০০ দিরহামের জায়গায় মালিক বলছিল এখন ৫০ দিরহাম নাও, দিতে পারছি না। তারা বাড়িতে কম টাকা পাঠাল, রেমিট্যান্স পড়ে গেল।

ইউরোপ-আমেরিকায় মাসে মাসে কাপড় বদলায়। এটা ওই দেশের ফ্যাশন। শীতে, গরমে, শরতে, বসন্তে নানা ধরনের কাপড় পরে তারা, সেটাও তাদের কমে গেল। যেহেতু ওই সময় আয় কমে যায়। আমাদের লক্ষাধিক শ্রমিক গার্মেন্টসে কাজ করে। প্রথমদিকে আমাদের এক্সপোর্টে একটা আঘাত এল। সব মিলিয়ে করোনায় অনেকটা পিছিয়ে গেলাম আমরা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে গতিতে আগাচ্ছিলাম, তাতে হোঁচট খেলাম। তবে চলতি বছরের মাঝামাঝি এসে মনে হচ্ছিল আমরা ঘুরে দাঁড়াচ্ছিলাম। বিশ্বের পণ্ডিতরাও তাই বলছিলেন। কিন্তু এই সময়ে আরেক দুর্ভাগ্য এসে গেল, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ।

নিউজবাংলা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনো চলছে। এই যুদ্ধ আমাদের অর্থনীতিকে কতটা আঘাত করছে?

এম এ মান্নান: দুই বছরের করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিলাম আমরা, আমাদের অর্থনীতি। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ফের বিপদে ফেলে দিয়েছে। তার পরও বিশ্বের অনেক দেশের চেয়ে আমরা ভালো অবস্থায় আছি। আমাদের রপ্তানি আয় বাড়ছেই, প্রবাসীরা বেশি বেশি রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতি ঊর্ধ্বমুখী ঠিক, তবে শিগগিরই নিম্নমুখী হবে। বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভ কমলেও এখনো ছয় মাসের বেশি সময়ের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। সব মিলিয়ে অক্টোবর থেকে আমাদের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে।

তবে আমি বলব, এটা না যুদ্ধ, না শান্তিকর পরিস্থিতি, ঝুলে আছে। আজকালকার যুদ্ধ এতদিন চলে না। এক-দেড় মাসে শেষ হয়ে যায়। অস্ত্রের কারণে বা আলোচনার কারণে। কিন্তু এই দুইটা এখানে ব্যর্থ। রাশিয়া একটা পরাশক্তি। ইউক্রেন তারই এক অংশ ছিল একসময়। ইউক্রেন পরাশক্তি না হলেও আমাদের চেয়ে অনেক বড় শক্তি। তার পেছনে অন্য পরাশক্তি সার্বিকভাবে আছে।

কিন্তু সার্বিকভাবে ইউক্রেন শুধু যুদ্ধের ক্ষেত্র বা পানিপথের মাঠ। যুদ্ধ চলছে মোঘল ও রাজপুতের মধ্যে। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, রাশিয়ানরা পুরো চাপ দিচ্ছে না। একটা বিড়াল ইঁদুর খেলা চলছে।

যুদ্ধ শেষ হচ্ছে না কিন্তু ক্ষতি হচ্ছে। অস্ত্রের চেয়ে, মৃত্যুর চেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। পশ্চিমাদের যেহেতু অর্থনৈতিক শক্তি বেশি। ব্যবসা-বাণিজ্য, আর্থিক চলাফেরা তারা নিয়ন্ত্রণ করে। তারা তখন নিষেধাজ্ঞা দিল, অমুকের সঙ্গে এটা করলে আমার সঙ্গে তুমি নাই। গ্রামের খেলা হলে আমরা যেমনটা করতাম। এটা এখন বিশ্ব মানচিত্রে চলছে।

এটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা তার নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়াকে দাবানোর জন্য এই অস্ত্র ব্যবহার করছে। এটা আমাদের ওপর প্রভাব ফেলে। আমাদের সাবধানে বিকিকিনি করতে হয়।

আমাদের একটা ভীষণ অভিজ্ঞতা আছে নিষেধাজ্ঞার। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় কারা আমাদের সঙ্গে ছিল তা আমরা জানি। স্বাধীনতার পরে আমাদের একমাত্র উৎপাদন ছিল পাট। এটা আমাদের বন্ধু নয়, শুধু ক্রেতা কিউবার কাছে বিক্রি করতে গেলে হুঁশিয়ারি করা হলো। বলা হলো, কিউবাতে হাত দিতে গেলে পার পাবে না। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর জেদ, প্রয়োজন, সাহস থেকে তিনি পাট বিক্রি করলেন।

তখন আমাদের ওপরে এল একটা আঘাত। খাদ্যপণ্যভর্তি জাহাজ অলরেডি ভারতীয় উপমহাসাগরে আছে, চট্টগ্রামে ভিড়বে, আমাদের তখন বেশ খাদ্যাভাব, ওই সময় তারা এটা পরিহার করল। এটা গড়িয়ে গড়িয়ে অনেক দূর গেছে… বলতে চাই না।

নিউজবাংলা: এ যুদ্ধের মধ্যে আমরা কোন অবস্থায় আছি?

এম এ মান্নান: একটা বিশেষ ভারসাম্যহীন অবস্থায় আমরা আছি। পশ্চিমে একটা ভারসাম্যের মধ্যে ছিল, এটা নষ্ট হয়ে গেছে। গত দুই দশকে নতুন ভারসাম্য সৃষ্টির একটা কাজ চলছে। এই ভারসাম্যটা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত এক প্রান্তে এশিয়া সঙ্গে রাশিয়া, অন্য প্রান্তে ইউরোপ সঙ্গে মার্কিনিরা। নতুন ভারসাম্য সৃষ্টির কাজ চলছে, ভারসাম্য আসবে। তা ছাড়া চলতে পারে না। আমি মনে করি, আগামী পাঁচ-ছয় বছর লাগবে। ক্রিটিক্যাল মোমেন্টে আছে।

আমাদের মতো অর্থনীতির প্রধান উপজীব্য হলো খাদ্য। আমরা মাঝারি পর্যায়ে উঠছি মাত্র। ওরা অস্ত্র বা অন্যান্য ডিজিটাল জিনিস, ফিন্যান্স। এসবের মধ্যে আছে, আমরা এসবে পৌঁছায়নি। আমাদের এই মুহূর্তে অবস্থান, কাজ করব, খাব, এই পর্যায়ে আছি।

আমরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ইমপোর্ট করতে হয় কিছুটা। ঘরে কিছু খাবার না থাকলে ভীতির মধ্যে থাকি। এ জন্যই স্টক বিল্ডআপ করতে চাই। আমাদের ইমপোর্ট করতে হয়। ইমপোর্টের প্রধান একটা কেন্দ্র রাশিয়া, ইউক্রেন। গম, সানফ্লাওয়ার অয়েল, ভুট্টা, এসব বন্ধ করে দিল। হুহু করে দাম বাড়ল সারা বিশ্বে।

এ ছাড়া ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী করল যে, চরম দুর্দিন আসবে। তবে আন্ডারগ্রাউন্ডে কিছু মানুষ ভালো ভালো কথা বলেছে। খাদ্যের নিষেধাজ্ঞা ছিল, সেটা রিলাক্সড হয়ে গেল। অঘোষিতভাবে হলেও প্রত্যাহার করল। ইউক্রেন, রাশিয়া রপ্তানি শুরু করল এবং দামটা পড়ে গেল। কিন্তু ইউক্রেন রাশিয়ার মাঠে উৎপাদনের ক্ষেত্রে যে ক্ষতিটা হচ্ছে সেটা আগামী বছর আমরা ফিল করব।

নিউজবাংলা: এরই মধ্যে দেশে বন্যা হলো। বন্যায় কতটা ক্ষতি হয়েছে আমাদের?

এম এ মান্নান: হ্যাঁ, বন্যায় ভালোই ক্ষতি হয়েছে আমাদের সুনামগঞ্জ, সিলেট এবং কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্ষতি হলো। ফসলের অত ক্ষতি না হলেও অবকাঠামো, চলাচল, ব্যবসা-বাণিজ্যের হাটবাজার ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে। এ ছাড়া আমাদের অভ্যন্তরীণ কিছু অনিশ্চয়তা আছে। আমাদের মধ্যে আন্ডারগ্রাউন্ড একটা শঙ্কা আছে, রাজনৈতিক পরিবেশ। সার্বিকভাবে উন্নয়নের জন্য স্থিতিশীলতা অসম্ভব প্রয়োজন। বিশেষ করে দরিদ্র ইকোনমি ও মাঝারি ইকোনমির জন্য। আমরা যদি কাজ করার জায়গায় না যেতে পারি, কাজ করব কীভাবে, সেটা যদি বন্ধ হয়ে যায়?এগুলো মিলে আমরা একটা দোদুল্যমান অবস্থার মধ্যে আছি। অর্থনীতি একটু ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমবে না সেপ্টেম্বরেও মনে হয়। তবে অক্টোবর নাগাদ নামা শুরু করবে। আশা করছি, সার্বিকভাবে আশা করছি, অক্টোবরের পর থেকেই আশাদের অর্থনীতি আবার ঘুরে দাাঁড়াতে শুরু করবে।

কারণ, আমাদের প্রধান উপজীব্য যেটা- চাল, এর দাম কিন্তু কমা শুরু হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে অন্যগুলো পড়বে। আমাদের দুই মাস একটু ওয়েট করতে হবে। কিন্তু এই দুই মাসই শেষ নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত ওই দুই পক্ষ (ইউক্রেন-রাশিয়া) কোনো একটা ভারসাম্য বা আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে না আসে।তবে আমার মনে হয়, আমাদের দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের কিন্তু কারেন্টে কারেন্টে ট্রেডিংয়ে ইমব্যালেন্স থাকে। এটা কিন্তু টেক্সটবুক ইকোনমিকসের একটা ব্যাপার। কেন থাকে? কারণ, তারা ওপরের দিকে ওঠার পথে আছে। ওঠার পথে থাকলে আমদানি সাধারণত বেশি থাকে প্রয়োজনে। আরেকটা হলো প্রসেসিং। ইমিডিয়েট প্রয়োজন চাল, ডাল, তেল আর প্রসেসিং এনে তৈরি করে পাঠানো। যেমন কাপড়, কাপড়ের সবকিছু আমরা ইমপোর্ট করি। প্রসেস করে শ্রম দিয়ে অ্যাড করে পাঠাই। এই যে একটা সেক্টর, এটার অংশ কিন্তু আমরা।

আমরা মনে করি, আমরা এখন এই খাতে আছি। এটাকে বাঁচাবার শ্রেষ্ঠ উপায় হলো আমাদের রিজার্ভ। রিজার্ভটা তড়িয়ে তড়িয়ে বাড়ছিল। তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এখন একটু কমেছে, ৪৮ বিলিয়নে উঠেছিল, এখন ৩৮, ৩৭-এ নেমেছে। নামার কারণও আছে। রপ্তানির তুলনায় আমদানি একটু বেড়ে গেছে। ক্যাশের ওপরে চাপ পড়েছে। রেমিট্যান্স ফল করেছিল।

এই দুইটা এবং আমাদের ধান, চাল উৎপাদন যদিও ভালো ছিল, কিন্তু একটা-দুইটা প্রাকৃতিক কারণে আমরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলাম। এটা থেকে আমরা এখন উঠতে শুরু করেছি।

আমাদের অর্থনীতিতে প্রাথমিক মূলধন এখনো কৃষি। আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তা হলো, ঘরে চাল আছে। এই বিষয়টা কৃষির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যেহেতু তেল, গ্যাস নেই তাই আমাদের ক্যাশ ইনকাম কায়িক পরিশ্রম। দেশের ভেতরে কায়িক পরিশ্রম করি, গার্মেন্টস, শাকসবজি ফলাই। কৃষি হোক আর বিদেশে গিয়েও কায়িক পরিশ্রম করি, বিভিন্ন জায়গায়। এই দুইটার মধ্যে একটা ভাটা পড়ে- এটা হয়েছিল।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও নিউজবাংলা প্রতিবেদক। ছবি: নিউজবাংলা

নিউজবাংলা: রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল। সেটা নেমে ৩৭ বিলিয়নে নেমে এসেছে। আপনি কী এটাকে যথেষ্ট মনে করছেন?এম এ মান্নান: আমি মনে করি, এটা যথেষ্ট এবং সন্তোষজনক। এখন যে রিজার্ভ আছে ৩৭ বা ৩৮ বিলিয়ন, আইএমএফ বলেছে, এত ভয়ের কিছু নেই। পাঁচ-ছয় মাসের আমদানি সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। কিন্তু রিজার্ভ কিছুটা পড়েছে অস্বীকার করছি না। আরেকটা বিষয় অস্থির করে তুলেছিল। তাইওয়ানের ইস্যুটা। সেটাও মনে হয় একটু ঠাণ্ডা হয়েছে।

আমার ধারণা, অক্টোবর থেকে ওখানে যুদ্ধ ক্লিয়ার না হোক, যদি আর না বাড়ে বা ক্যাট-মাউসের খেলা চলে আমরা মোটামুটি ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানে যেতে পারব। এসব দিক থেকে অক্টোবর থেকে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আমার বিশ্বাস।

নিউজবাংলা: এবার সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের চাষ শুরু করতে কৃষকদের দেরি হয়েছে। এতে কী খাদ্য উৎপাদনে কোনো সমস্যা হবে?

এ এ মান্নান: আমন কিন্তু বিশাল বড় অংশ। এক শতে যদি ধরি, ৬০ থেকে ৬৫ আছে বোরো, আমন ৩৫ বা ৪০ এর মধ্যে আছে। আমার মোটা দাগে যেটা মনে হয়, এটা তো আগে ছিল, বোরো তো পরে বাড়ল। গত কয়েক দিনের বৃষ্টি আশীর্বাদ, কারণ উত্তরবঙ্গ এবং বরেন্দ্র অঞ্চলে রোপণ করা হয়ে গেছে।

বৈজ্ঞানিকদের কিছু প্রজেকশন দেখেছি, তারা কিছু নিচের দিকে আশঙ্কা করছেন। হয়তো এক শর জায়গায় নব্বই বা পঁচাশি হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে একটা ভালো দিক, সরকার একটা ভালো রিজার্ভ গড়ে তুলেছে। ২০ লাখ টন খাদ্য ধরে রেখেছে হাতে। এটা মনস্তাত্ত্বিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাপারীরা (ব্যবসায়ীরা) স্টক করেছিল, এখন তারা ছাড়বে। আমদানি ওপেন করে দেয়া হয়েছে। কারবারিরা দেখছেন, কোনো ফায়দা হবে না। সরকার নিজে আমদানি শুরু করেছে, দামও পড়ছে।

এটা বলা হয় প্রোপার প্রাইসিং বা ন্যায়সঙ্গত প্রাইসে রয়েছে। সুতরাং অক্টোবর থেকে আমার দৃঢ়বিশ্বাস একটা টার্ন অ্যারাউন্ড হবে। শুধু একটাই আশঙ্কা, আমাদের নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত গ্লোবাল সিচুয়েশন। আমাদের সরকার এটাকে খুব সাবধানে মোকাবিলা করছে।

নিউজবাংলা: সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করে এলেন। এই সফরকে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন আপনি?

এম এ মান্নান: এখানে একটা কথা আমি বলতে চাই, পছন্দ করি বা নাই করি, বাস্তববাদী হতে গেলে বলতে হবে, ভারতের অর্থনীতি, রাজনীতি, চলাফেরা নানাভাবে আমাদের অ্যাফেক্ট করে। সুতরাং ওইখানকার বিষয়ে আমাদের অ্যাফেক্ট করতে পারে।

ব্যবসা-বাণিজ্য উভয়ের জন্য লাভজনক না হলে কোনো দিন ব্যবসা হয় না। দ্বিতীয়ত, ভারতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি বেশি, আবহমানকাল থেকেই। কখনো আমি দেখিনি যে, ঘাটতি নেই। এটা নিয়ে আমাদের অনেকের মনে একটা অস্বস্তি থাকে। মার্কিনিদের সঙ্গেও তাই, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আরও ভয়ংকর। আমরা ১০০ টাকা এক্সপোর্ট করি আর দশ টাকা ইমপোর্ট করি না। তাই বলে তো আমরা কান্নাকাটি করি না। এটাকে দেখতে হবে সার্বিক বিচারে।

সার্বিক বিচারে ভারতের যে মার্কেট, অর্থনৈতিক দৃঢ়তা বা অবস্থান আমাদের সঙ্গে তার ব্যবসার যে অ্যাডভান্টেজ সেটাকে আমরা অমান্য করতে পারব না। তার ডাইভার্সিফাইড প্রোডাক্ট এক ট্রাকে আমার বর্ডারে ঢুকে যায়, আমার একটা প্রোডাক্ট ঢুকতে পারে। যদিও আমাদের অত প্রোডাক্ট নেই। তার বাজারের গভীরতা অনেক বেশি। আমার রাজস্থান পৌঁছাতে তিন দিন লাগবে। সেই জায়গায় কলকাতা থেকে সিলেট পৌঁছাতে কয় ঘণ্টা লাগবে? এগুলো বাস্তবিক বিষয়ে বিবেচনা করা উচিত। আমি এতে ভীত, শঙ্কিত নই। বছরের শেষে হিসাব করে যেটাকে আমরা প্রবৃদ্ধি বলি, প্লাস মাইনাসে সব করি, রিজার্ভের হিসাব করি, প্রতিনিয়ত পকেটে হাত দিয়ে বাজার করা যায় না। এমনটা আমরা ব্যক্তিজীবনে করিও না।

ভারত সম্পর্কে অনেকেই এটাকে অন্য একটা রং দেয়ার চেষ্টা করে। লুটে নিয়ে গেল, আমাদের মাল বিক্রি করছে, তারা কি টাকা দেবে না? আশার কথা, সাম্প্রতিক সময় বেশ বেড়েছে। ভারত কি ডিউটি ফ্রি করে দেবে? কালকে থেকে যদি বলে ডিউটি ফ্রি করে দিলাম, আমরা পারব? কারণ আমি যে প্রোডাক্ট নিয়ে যাব, সেই প্রোডাক্ট তার চেয়ে সস্তায় সেখানে উৎপাদন হচ্ছে। সে কেন কিনবে আমারটা?

আমি মনে করি, ভারতের সঙ্গে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও প্রসারিত হওয়া দরকার। বর্ডার হাট, ট্রানজিট পয়েন্ট, চলাফেরা, আসা-যাওয়া আরও বেশি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নতি হবে। একটা হয় দৃশ্যমান ব্যবসা, অফিশিয়ালি অন্যদিকে অদৃশ্যমান ব্যবসাগুলো কি কেউ হিসাব করে দেখেছে? আমাদের নাগরিকরা ও তাদের নাগরিকরা বর্ডারে কত লাখ, কোটি নাগরিক রয়েছেন, ব্যবসা করছেন। সেটা হিসাব করে দেখলে দেখা যাবে, কত কোটি টাকার ব্যবসা করছে! সুতরাং এটাকে প্রতিনিয়ত সমালোচনার চোখে না দেখে ইতিবাচকভাবে দেখা প্রয়োজন। আমাদেরও যেমন বিকল্প নাই, ভারতেরও বিকল্প নাই। এটা তাদের অনুধাবন করা উচিত। কারণ যদি আমাদের দেশ ১৬০ মিলিয়ন না হতো, ১০ মিলিয়ন হতাম, কী হতো আমাদের অবস্থাটা?

আমি যদি ১৬০ মিলিয়ন, বিশ্বব্যাপী একটা পরিযায়ী জাতি, সর্বত্র বিচরণ করছি। তারও তো আমার দিকে তাকাতে হবে সম্মানের চোখে। ৫ কোটি, ১০ কোটি হলে তাকাত না। কিন্তু পাঁচ কোটি, ১০ কোটি যদি আবার সিঙ্গাপুর, হংকংয়ের মতো হয় সেটাও বিচার করার বিষয়। কারণ তার প্রযুক্তি, চালচলন অনেক ভালো। এটা এভাবে দেখতে হবে।

চীন, ভিয়েতনাম আদর্শিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে এককাতারে নয়। কিন্তু ব্যবসার ব্যাপারে চীনারা হংকং, ভিয়েতনাম বাদ দেন, তাইওয়ানের সঙ্গেও ব্যবসা করছে। আসা-যাওয়া করে। এই যে তাদের ব্যবসা থেকে রাজনীতি সরিয়ে ব্যবসা করা, এই মনোভাব আমাদের আনতে হবে। আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও রাজনীতি মেলানো ঠিক হবে না। আমাদের এখানে এটা খুব বেশি। এটা যেন আমরা না করি এবং এভাবে চলি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সফর থেকে দেখলাম, এই সফরের ৮০ ভাগই ছিল ব্যবসা-বাণিজ্যসংক্রান্ত। ভারতের সঙ্গে আমাদের অনিষ্পত্তির বড় বিষয় হলো, তিস্তা পানি, বর্ডারে দুই একটা বিষয় আছে। এটা কাছাকাছি বাস করলে যা হয়।

আর মনস্তাত্ত্বিকভাবে সবচেয়ে খারাপ যে ভারতের সীমান্তরক্ষীরা আমাদের লোকজনদের মাঝে মাঝে যে গুলি করে হত্যা করে। এটা দৃশ্য তো খুবই অন্যায়। আমাদের দেশের নাগরিকরা এটা নিয়ে চকিত। ভারতের এটা বোঝা উচিত।

আমি যতদূর জানি, ভারত কেন্দ্র থেকে বলেছিল, এটাকে জিরোতে নিয়ে আসবে। কিন্তু যেকোনো কারণে এটা হয়নি। আমি মনে করি, এটা সফরের বিভিন্ন কমিউনিকেশনে উল্লেখ করা হয়েছে। বর্ডার কিলিং এবং তিস্তা- এই দুইটা বিষয় যদি সমাধান করি, অন্যান্য বিষয় সমাধান হয়ে যাবে।

নিউজবাংলা: ডলারের বাজারের অস্থিরতা অর্থনীতিকে বড় ধরনের চাপের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এই অস্থিরতা কীভাবে সামাল দেয়া যায়।

এম এ মান্নান: বলা উচিত কি না জানি না। তবে আমার একান্ত নিজের মতো, এটা কিছুটা মেকানিক্যাল। দীর্ঘদিন টাকাটাকে আমরা ছিপি আটকে রাখার মতো রেখেছিলাম। ছিপি যদি লুজ হয়, হঠাৎ ব্রার্স্ট হয়ে গেলে যা হয় তাই হয়েছে। অনেকে বলে, এটাকে অনেকটা বাঁধভাঙা ঢেউয়ের মতো এক লাফে ১২০ টাকায় উঠল। এটা আর্টিফিশিয়াল নয়, ন্যাচারাল। ওইটা রিয়েল প্রাইসে ছিল না। রিয়েল প্রাইসে নামা শুরু করেছে।

এখন ১০৪ বা ১০৫-এর মধ্যে রয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, গত ১০ বছরে আমরা যদি ধীরে ধীরে করতাম তাহলে এখন এই জায়গায় থাকতাম। আমার ধারণা, এখানেই থাকবে এবং আরও স্ট্যাবল হবে। আমাদের সিচুয়েশনটা ইমপ্রুভ করবে। সুতরাং মূল্যস্ফীতি, প্রাইস লেভেল বেড়ে যাওয়া, বাণিজ্য ঘাটতি- এগুলোর সব কারণ কিন্তু টাকার একটা কৃত্রিম লেভেলে ধরে রাখার প্রচেষ্টা। যারা করেছিলেন ভালো করার জন্যই করেছিলেন। সে তর্কে যাব না। বিষয়টা মেকানিক্যাল। কারণ বাজার শেষ বিচারে তার জায়গা খুঁজে বের করবেই। যা-ই করা হোক না কেন।

নিউজবাংলা: দেশে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। হরতাল-অবরোধ-জ্বালাও-পোড়াও নেই। অর্থনীতিতে কতটা স্বস্তি দিচ্ছে এই পরিবেশ।

এম এ মান্নান: স্থিতিশীলতার কথা আমি বলেছি। এটা শুধু মুখের কথা নয়। যারা উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ, তারা সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, সামাজিক স্থিতিশীলতা, পরিবেশ থাকা চাই উন্নয়নের জন্য। আমরা বলতাম, মাহাথির মোহাম্মদ চমৎকার করেছেন মালয়েশিয়াকে। তার মূল শক্তি ছিল স্থিতিশীলতা। একটানা ২২, ২৩ বছর তার দল, তিনি একটা স্ট্যাবল পলিসির মাধ্যমে মালয়েশিয়ার পরিবর্তন করেছেন। কোরিয়া, তাইওয়ান, ভিয়েতনাম, চায়না সবার ক্ষেত্রে তাই। কিন্তু আমরা যখন ঘরে আসি, তখন এই শব্দটা (স্থিতিশীলতা) ভুলে যাই, অন্যদিকে চলে যাই।

হরতালের উৎপত্তি কোথায় থেকে বুঝতে হবে। তার জন্ম হলো- আমাদের উপমহাদেশ যখন পরাধীন ছিলাম, আমাদের নেতৃবৃন্দ যেহেতু অস্ত্র দিয়ে ব্রিটিশদের সঙ্গে পারে নাই, তারা অসহযোগ আন্দোলন একটা অস্ত্র হিসেবে নিয়ে এসেছিল। এটা মাথায় রয়ে গেছে।

তারা কার সঙ্গে অসহযোগ করেছে? ব্রিটিশদের সঙ্গে। বঙ্গবন্ধু একই অস্ত্র ব্যবহার করেছেন পাঞ্জাবিদের বিরুদ্ধে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেই অস্ত্র এখন ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নয়। তাই চলছে। বাংলাদেশের মানুষ হরতাল-অবরোধ চায় না; নিজের ভালো চায়। বাংলাদেশের ভালো চায়, দেশের উন্নয়ন চায়। তাই হচ্ছে। মানুষ বুঝে গেছে, কিসে ভালো হবে, তাই করছে।

নিউজবাংলা: ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দেশে জাতীয় নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনে আপনার দল আওয়ামী লীগ কি আবার সরকার গঠনের রায় পাবে?

এম এ মান্নান: এখানে আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই। আমি আওয়ামী লীগ করি বা আওয়ামী লীগের নেতা বলে বলছি না, আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। গত ১২-১৩ বছরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশটাকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, তাকে ছাড়া অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভাবতেই পারে না এ দেশের মানুষ। তাই আমরা আমাদের প্রধানমন্ত্রী, আমাদের শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমার জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসব; সরকার গঠন করব এবং দেশের আরও উন্নয়ন করব।

নিউজবাংলা: ধন্যবাদ স্যার আপনাকে।

এম এ মান্নান: আপনাকেও ধন্যবাদ।

এ বিভাগের আরো খবর