ডলারের মূল্যে অতিরিক্ত বৈষম্য করা হয়েছে উল্লেখ করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন (বিএফএফইএ)।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটির পক্ষ থেকে ডলারের একক নির্ধারণের হার নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) রোববার বৈঠকে বসে ডলারের একক দর নির্ধারণ করে। সে অনুযায়ী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি ডলার রেমিট্যান্সে ১০৮ টাকা ও রপ্তানি বিল ভাঙাতে ৯৯ টাকা দর নির্ধারণ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বিএফএফইএ সভাপতি মো. আমিন উল্লাহ বলেন, ‘ডলারের মূল্যে অতিরিক্ত বৈষম্য করা হয়েছে। আগের মতো ১ টাকা পার্থক্য থাকতে পারত। ডলার প্রতি এরূপ দর বৈষম্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন রপ্তানিকারকরা। এতে করে তারা রপ্তানিতে নিরুৎসাহিত হবেন এবং রপ্তানি কমে যাবে।’
আমিন উল্লাহ বলেন, ‘ডলারের দর নিয়ে এমন সিদ্ধান্তে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের (পণ্যের মূল্য কম দেখানো) প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। অন্যদিকে ব্যাংকগুলো আমদানিতে ডলার প্রতি ১০৪ থেকে ১০৬ টাকা পর্যন্ত দাম নিচ্ছে। অথচ নীতিনির্ধারকরা এর আগে ডলার বেচাকেনায় ১ টাকা ব্যবধান রাখার প্রস্তাব করেছিলেন। আমরা চাই অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম পুনঃনির্ধারণ করুক। আর তাতে যেন এমন বৈষম্য না থাকে।’
বিএফএফইএ’র সহ-সভাপতি এস হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এখন মন্দা চলছে। অন্যদিকে কাঁচামালের অভাবে হিমায়িত কারখানাগুলো বন্ধের পথে। এমন সময়ে ডলারের দর বৈষম্যে আমাদের আরও লোকসানে পড়তে হবে।’
মৎস্য বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশ থেকে প্রায় ৭৬ হাজার ৫৯১ টন হিমায়িত সাদা মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়াসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তা থেকে প্রায় ৪৭৭ দশমিক ৩৭ মিলিয়ন ডলার আয় হয়। এর মধ্যে শুধু হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি হয় ৩০ হাজার ৬১৫ টন। আর তা থেকে প্রায় ৩২৮ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ডলার আয় হয়।
বাংলাদেশে মোট ১০৫টি হিমায়িত খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকারী কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে ৮০ ভাগ চিংড়ি প্রক্রিয়াকরণ করা হয় খুলনার বিভিন্ন কারখানায়। বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের প্রায় ৬০টি দেশে হিমায়িত মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে।