সিঙ্গাপুর, হংকংয়ের আদলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের দেশের বাইরে ব্যবসা করার ভিন্ন ধরনের এক সুযোগ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এখন থেকে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা অন্য দেশ থেকে পণ্য কিনে তৃতীয় দেশে রপ্তানির সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ এক দেশের পণ্য বা সেবা কিনে সরাসরি আরেক দেশে রপ্তানি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ওই পণ্য দেশেও আনতে হবে না। সিঙ্গাপুর, হংকংসহ বিভিন্ন দেশের আদলে বাংলাদেশি ট্রেডারদের জন্য এ সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ পলিসি ডিপার্টমেন্ট থেকে বুধবার এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করা হয়েছে, যা মার্চেন্টিং ট্রেড হিসেবে বিবেচিত।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, মার্চেন্টিং ট্রেডের আওতায় রপ্তানির জন্য ইএক্সপি ফরমের প্রয়োজন হবে না। একইভাবে আমদানির জন্য প্রযোজ্য আইএমপি ফরমেরও দরকার হবে না। বিদেশ থেকে বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় এ ধরনের আমদানি করা যাবে। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশি ব্যাংক পরিশোধের নিশ্চয়তা দিতে পারবে না। আর দায় পরিশোধের পর স্থানীয় ব্যয় ও মুনাফা বাবদ সন্তোষজনক মার্জিন থাকতে হবে।
নতুন রপ্তানি নীতিতে 'মার্চেন্টিং ট্রেড' যুক্ত করা হয়েছে। 'ভিন্ন দেশ থেকে পণ্য বা সেবা সংগ্রহ এবং উক্ত দেশ থেকে পণ্য চালান বা সেবা সরাসরি তৃতীয় দেশের ক্রেতার কাছে সরবরাহকে মার্চেন্টিং ট্রেড' হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- বাংলাদেশি ট্রেডারের মাধ্যমে নেপালের কোনো পণ্য বা সেবা হয়তো রপ্তানি হবে ফ্রান্সে। এক্ষেত্রে ওই পণ্যের এলসি ব্যাংক হবে বাংলাদেশের। তবে পণ্য নেপাল থেকে সরাসরি ফ্রান্সে যাবে। অর্থ পাওয়ার পর বাংলাদেশি ট্রেডার তার মুনাফা বাদে বাকি অর্থ নেপালি ব্যাংকে দিয়ে দেবে।
বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর ও হংকংসহ বিভিন্ন দেশের ট্রেডারদের মাধ্যমে অনেক আমদানি ও রপ্তানি করে থাকে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জল হয়েছে। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ৫২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন। বিশ্বের বড় বড় ক্রেতা-প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তাদের সখ্যতা এবং ভালো বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে। সেটা কাজে লাগিয়েই আমাদের ব্যবসায়ীরা অন্য দেশ থেকে পণ্য কিনে তৃতীয় দেশে রপ্তানির একটা সুযোগ পেতে পারেন।’
এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই প্রথমবারের মতো এ ধরনের সুযোগ দেয়া হলো জানিয়ে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই রপ্তানির মাধ্যমে আমাদের ব্যবসায়ীরা যে মুনাফা পাবেন, তা বিদেশি মুদ্রা হিসেবে দেশে আসবে। আমাদের রিজার্ভে যোগ হবে।’