বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক যে কোনো আইন সংশোধন করতে চান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিনিয়োগ বাড়াতে সরকার যথেষ্ট আন্তরিক জানিয়ে তিনি বিদেশিদের এখানে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ ও হংকংয়ে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের জনসংখ্যা বেশি। এখানকার বাজার অনেক বড়, বাণিজ্যের সম্ভাবনাও বেশি। বিদেশি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি। বিনিয়োগের প্রয়োজনে আমরা যে কোনো আইন সংশোধন করতে রাজি আছি।
‘সাম্প্রতিক ভারত সফরে সে দেশের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। ভারতের ব্যবসায়ীরা এখানে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করবেন।’
অন্যদিকে বাংলাদেশের সিমেন্ট ও কাচ জাতীয় পণ্যের বড় বাজার হতে পারে হংকং বলেও জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান এইচকেটিডিসি ও ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, ‘হংকং ও বাংলাদেশের মধ্যে মসৃণ দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। হংকং বাংলাদেশের বিশ্বস্ত শীর্ষ ১০ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটি। তৈরি পোশাক ও জ্বালানি খাতে দেশটি এখন পর্যন্ত এক বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে।
রিজওয়ান রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ ও হংকংয়ের অর্থনৈতিক বন্ধনকে বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পারস্পরিক বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সুযোগগুলো অন্বেষণ করতে পারে। আর তাতে এইচকেটিডিসি সংযোগকারী সেতু হতে পারে। বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীরা এইচকেটিডিসির মাধ্যমে হংকংয়ে বাণিজ্যের সম্ভাবনা ব্যবহার করতে পারেন।
‘ঢাকা চেম্বার ও এইচকেটিডিসি একটি আকর্ষণীয় কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’
সেমিনারে বাংলাদেশ ও হংকংয়ে বিনিয়োগ সম্ভাবনা প্রেজেন্টেশন দেন এইচকেটিডিসির কনসালটেন্ট রাজেশ ভাগাত।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের ১০০ বৃহৎ ব্যাংকের মধ্যে ৭০টিরই অবস্থান হংকংয়ে। দেশটিতে ব্যবসায় কোনো ধরনের সেলস, হোটেল ট্যাক্স ও কাস্টমস ট্যারিফের প্রয়োজন হয় না।
‘অন্যদিকে বাংলাদেশে ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা ১০ শতাংশ ট্যাক্স হলিডে, রপ্তানি প্রণোদনা, কর মওকুফ ও হাইটেক পার্কের সুবিধা পেয়ে থাকে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব (ইআরডি) শরিফা খান বলেন, ‘হংকংয়ের জনসংখ্যা বাংলাদেশের গুলশানের জনসংখ্যার চেয়েও কম। কিন্তু তাদের অর্থনীতি অনেক বড়। এই পার্থক্যকে ব্যবসায়িক সুযোগে পরিণত করতে পারেন ব্যবসায়ীরা। সেখানে যেহেতু জনসংখ্যা কম, বাংলাদেশের কর্মশক্তির বড় সম্ভাবনা সেখানে রয়েছে।
‘বাংলাদেশ ম্যানুফেকচারিং হাব। আমাদের এখানে পণ্য উৎপাদন করে ব্যবসায়ীরা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারেন। কেননা হংকং বিশ্বের বাণিজ্য হাব।’