দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) স্ট্যান্ডিং কমিটি অন অ্যান্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্টের চেয়ারম্যান এনামুল হক খান দোলন।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে বাজুস সদস্য প্রায় ৪০ হাজার। এরা সবাই আর্থিক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তার ওপর তাদের ওপর হামলা-মামলায় অনেকেরই অবস্থা খারাপ।’
বৃহস্পতিবার জুয়েলারি শিল্পের নিরাপত্তার দাবিতে বাজুস আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এনামুল এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত আনুমানিক ২০ জন স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ছাড়া অসংখ্য ব্যবসায়ী পঙ্গু ও অর্ধপঙ্গু হয়েছেন। বিভিন্ন হামলা-মামলায় ৯৯ শতাংশ মালামাল হারিয়েছেন। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১ শতাংশ মালামাল রক্ষা করতে পেরেছেন।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের বিমার আওতায় আনতে হবে। বিমা অনেক ব্যয়বহুল ব্যাপার। তাই বিমা করতে দেরি হচ্ছে। তবে রাজধানীর প্রায় সবাই বিমার আওতায় আছেন। ধীরে ধীরে প্রান্তিক পর্যায়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদেরও বিমার আওতায় নিয়ে আসা হবে।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে জুয়েলারি শিল্পের চলমান সংকট ও সমস্যা, দেশি-বিদেশি চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য, অর্থ পাচার ও চোরাচালান বন্ধে কাস্টমসসহ সব আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জোরালো অভিযানের দাবি জানিয়ে গত ১৩ আগস্ট বাজুস সংবাদ সম্মেলন করে। এই সংবাদ সম্মেলনের পর আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে।’
দেশে বিভিন্ন সময় চুরি ও ডাকাতির তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জুয়েলারি দোকানে চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ১ আগস্ট রাতে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কলাতিয়া বাজারের মন্দির মার্কেটের কাঁকন জুয়েলার্সে চুরি হয়েছে। চোরের দল দোকান থেকে প্রায় ১৫০ ভরি স্বর্ণের ও দুই কেজি রুপার গয়না চুরি করে নিয়ে যায়। গত ২৯ জুলাই ঢাকার মিরপুরের রূপনগরে রজনীগন্ধা মার্কেটে নিউ বিসমিল্লাহ জুয়েলার্সে চুরি হয়েছে। চোরের দল দোকান থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ ও ৫০ ভরি রুপা চুরি করে নিয়ে যায়।
এনামুল বলেন, সর্বশেষ গত ৬ সেপ্টেম্বর বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বাজুস সদস্য ধীমান ধরকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আমরা ঘটনাগুলো দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা এবং চুরি করা স্বর্ণালংকার ও টাকা উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সারা দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাজুসের সাবেক সভাপতি ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন মনিটরিং ডিস্ট্রিক অরগানাইজেশনের চেয়ারম্যান ডা. দিলীপ কুমার রায়, বাজুসের সহসভাপতি ও বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ব্যাকিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের চেয়ারম্যান গুলজার আহমেদ, বাজুসের কার্যনির্বাহী সদস্য মো. রিপনুল হাসান, জয়দেব সাহা, ইকবাল উদ্দিন, বিপুল ঘোষ শংকর, স্বপন চন্দ্র কর্মকার, বিকাশ ঘোষ ও বাবুল রহমান।