পুঁজিবাজারে দিন ওষুধ ও রসায়ন খাতের রাজত্ব অব্যাহত রয়েছে। এই খাতের মধ্যে আবার ওরিয়ন গ্রুপের তিন কোম্পানির শেয়ারদর ছুটছে পাগলা ঘোড়ার মতো। সঙ্গে যোগ হয়েছে বেক্সিমকো গ্রুপের দুই কোম্পানি, যে দুটি গত নয় মাসে ৪০ শতাংশের বেশি দর হারিয়ে ফেলেছিল।
এই দুই গ্রুপের ওপর ভর করে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে সূচকের ঊর্ধগতি অব্যাহত থাকল, যদিও এদিন যত সংখ্যক কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে তার প্রায় তিন গুণ।
বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে সূচকের উঠানামা ছিল রোলার কোস্টারের মতো। শুরুতে ৪০ পয়েন্ট বাড়লেও কিছুক্ষণ পর ১২ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হতে থাকে। এরপর আবার ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর আবার সেখান থেকে ৪৩ পয়েন্ট কমে সূচকের অবস্থান দাঁড়ায় আগের দিনের চেয়ে তিন পয়েন্ট কমে।
১৩ মিনিটের মধ্যে সূচকে আবার দেখা দেয় ঊর্ধ্বগতি। এই সময়ে যোগ হয় ১৭ পয়েন্ট। এর আধা ঘণ্টা পর আবার সূচক কমে ২৭ পয়েন্ট।
বেলা ১২টা ২১ মিনিটে আগের দিনের চেয়ে ১৩ পয়েন্ট কমে লেনদেন হচ্ছিল এবং সূচক ছিল ক্রমেই নিম্নমুখি। এরপর শুরু হয় বেক্সিমকো লিমিটেডের দর বৃদ্ধি। গত কয়েক দিন ধরে অল্প অল্প করে বাড়তে থাকা শেয়ারদর চট করে বেড়ে যায় ৮ শতাংশের বেশি। আর বড় মূলধনি কোম্পানি হওয়ায় এই দর বৃদ্ধি সূচকে রাখে ইতিবাচক প্রবণতা।
শেষ পর্যন্ত আগের দিনের চেয়ে ১২ পয়েন্ট বেড়ে শেষ হয় লেনদেন।
সপ্তাহের প্রথম দুই দিন ৭৭ পয়েন্ট কমলেও এর পরের তিন দিনে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক বেড়েছে ১২৮ পয়েন্ট। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ছিল সূচকের উঠানামা
এ নিয়ে চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কর্মদিবসে ৭৭ পয়েন্ট সূচক পতনের পর তিন দিনে যোগ হলো ১২৮ পয়েন্ট।
সূচক সবচেয়ে বেশি বাড়িয়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে দুটি বেক্সিমকো গ্রুপের এবং তিনটি ছিল ওরিয়ন গ্রুপের।
বেক্সিমকো গ্রুপের বেক্সিমকো লিমিটেড ও বেক্সিমকো ফার্মা, ওরিয়ন গ্রুপের ওরিয়ন ফার্মা, বিকন ফার্মা এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জ হোলসিম সিমেন্ট, কোহিনূর কেমিক্যাল, ডেল্টা লাইফ, স্কয়ার টেক্সটাইল এবং পদ্মা অয়েলও সূচকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পয়েন্ট যোগ করেছে।
আগের দিনের মতোই লেনদেনে সবাইকে ছাড়িয়ে ওষুধ ও রসায়ন খাত, যদিও আগের দিনের তুলনায় এই খাতে লেনদেন কমেছে দুই শ কোটি টাকার মতো।
খাতটিতে লেনদেন হয়েছে প্রায় চার শ কোটি টাকা, যা আগের দিন ছিল পৌনে ছয় শ কোটি টাকা।
লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে বিবিধ খাত উঠে আসতে পেরেছে মূলত বেক্সিমকো লিমিডেটের কারণে। খাতটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫৮ কোটি টাকা, যার মধ্যে বেক্সিমকো লিমিটেডেই হাতবদল হয়েছে ২৬৪ কোটি টাকার শেয়ার।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির মধ্যে দুটি আছে ওরিয়ন গ্রুপের ওরিয়ন ইনফিউশন এবং ওরিয়ন ফার্মা। ষষ্ঠ অবস্থানে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড।
মাত্র ১৭ কর্মদিবসে ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ১২৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪১৯ টাকা। এর মধ্যে আজ বেড়েছে ৩৩ টাকা ৬০ পয়সা বা ৮.৭১ শতাংশ।
গত তিন মাসে দর বেড়েছে পাঁচ গুণ। ১২ জুন দর ছিল তুলনায় শেয়ারটির দর ছিল ৭৯ টাকা ৬০ পয়সা।
তিন মাসেরও কম সময়ে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারদর বেড়েছে পাঁচ গুণেরও বেশি
অন্যদিকে এক মাসেরও কম সময়ে ওরিয়ন ফার্মার দর বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। গত ১১ আগস্ট দর ছিল ৮৩ টাকা। বর্তমান দর ১২৫ টাকা ৯০ পয়সা। আজ বেড়েছে ৮ টাকা ৮০ পয়সা বা ৭.৫১ শতাংশ।
এক মাসেরও কম সময়ে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ারদর বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি
একই গ্রুপের আরেক কোম্পানি বিকন ফার্মার শেয়ার দর বেড়েছে ৭ টাকা ৯০ পয়সা বা ২.৪৬ শতাংশ।
এই কোম্পানিটির শেয়ার দর এক সপ্তাহেরও কম সময়ে বেড়েছে প্রায় ৮৩ টাকা। গত ১১ আগস্ট শেয়ারদর ছিল ২৪৫ টাকা, যা আজ দাঁড়িয়েছে ৩২৭ টাকা ৯০ পয়সা।
ওরিয়ন গ্রুপের কোম্পানি বিকন ফার্মার শেয়ারদর গত দুই বছর ধরেই বাড়ছে। এর মধ্যে গত এক মাসে বেড়েছে ৮৩ টাকা
অন্যদিকে বেক্সিমকো লিমিটেড দীর্ঘ সংশোধন কাটিয়ে গত এক মাস ধরে ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছিল। এই সময়ে বেড়েছে প্রায় ১৫ টাকা।
গত ১১ আগস্ট শেয়ারদর ছিল ১১৭ টাকা ১০ পয়সা, যা এখন দাঁড়িয়েছে ১৩২ টাকা ১০ পয়সা। এর মধ্যে ৭ টাকা ৮০ পয়সা বা ৬.২৮ শতাংশ বেড়েছে আজই।
দীর্ঘ সংশোধন কাটিয়ে বেক্সিমকো লিমিটেড ঊর্ধ্বমুখি প্রবণতায় ফিরেছে এক মাস হলো। এর মধ্যে এক দিনে সবচেয়ে বেশি দর বাড়ল বৃহস্পতিবার
একই অবস্থা বেক্সিমকো ফার্মার। এই কোম্পানিটিও দীর্ঘ সংশোধক কাটিয়ে হারিয়ে ফেলা দরের কিছুটা উদ্ধার করেছে গত এক মাসে। গত ১১ আগস্ট শেয়ারদর ছিল ১৫০ টাকা ২০ পয়সা, যা এখন দাঁড়িয়েছে ১৮৫ টাকা ২০ পয়সা। এর মধ্যে আজ বেড়েছে ২ টাকা ৮০ পয়সা বা ১.৫৪ শতাংশ।
বেক্সিমকো ফার্মাও হারিয়ে ফেলা দর ফিরে পেতে শুরু করেছে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে
চলতি সপ্তাহের শুরুতে দুই দিনের সংশোধনের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছিল, তাতে লেনদেন অনেকটাই কমে গেলেও গত দুই দিনে তা আবার গতি পেয়েছে। তবে বুধবাররে তুলনায় আজ কিছুটা কম টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
আগের দিন হাতবদল হয় ২ হাজার ২০১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকার শেয়ার, আজ হাতবদল হয়েছে ১ হাজার ৮৭৭ কোটি ৭৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকার।
এর মধ্যে বেক্সিমকো গ্রুপের দুটি আর ওরিয়ন গ্রুপের তিন কোম্পানি মিলিয়ে লেনদেন হয়েছে ৫২৮ কোটি ৫৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
এদিন বেড়েছে মোট ৭২ কোম্পানির দর, বিপরীতে কমেছে ১৮৮টির দর। ১১৯টি কোম্পানি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে।
চলতি সপ্তাহে পুঁজিবাজারের আচরণ নিয়ে ট্রেজার সিকিউরিটিজের চিফ অপারেটিং অফিসার মোস্তফা মাহবুব উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, বাজার সার্বিকভাবে ভালো ছিল। বাজারে যে উত্থান-পতন সেটা বিনিয়োগকারীদের পরিপক্ক আচরণের বহিঃপ্রকাশ। দিন জুড়ে ক্রয়চাপ, বিক্রয় চাপ- দুটোই ছিল। একটা আইটেমে কিছু প্রফিট করে অন্যটাতে বিনিয়োগ করেছেন, এমনটা নজরে এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, 'শুধু এই আজকের দিন নয়, বলতে গেলে সপ্তাহজুড়েই বিনিয়োগকারী এবং বাজার পরিপক্ক আচরণ করেছে। বাজার বেড়েছে, যখন সংশোধনের কথা বা প্রফিট টেকিংয়ের সময় তখন তা হয়েছে ।
‘আরেকটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো- অতীতে দেখা গেছে যখনই বড় টানওভার হয়েছে তারপরই মার্কেট পড়েছে। যেটা কিন্তু এবার হয়নি। এটা একটা স্থিতিশীল এবং পরিপক্ক বাজার এবং বিনিয়োগকারীদের দক্ষতা প্রকাশ করে।’
কোন খাত কেমন
শীর্ষে থাকলেও গতকালের চেয়ে লেনদেন কমেছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। আগের দিন ২৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ লেনদেন হয়েছিল, সেটি আজ দাঁড়িয়েছে ২১ দশমিক ৭৯ শতাংশে। লেনদেন হয়েছে ৩৯২ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
দরবৃদ্ধি হয়েছে ৯টি কোম্পানির। বিপরীতে দর কমেছে ২০টির। দুটির লেনদেন হয়েছে আগের দরে।
লেনদেন বেড়েছে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতে। ৩৫৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা লেনদেনের দরপতন হয়েছে বেশি। ৯টির দর পতনের বিপরীতে বেড়েছে দুটির ও অপরিবর্তিত ছিল তিনটির।
২০৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা লেনদেন করে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বস্ত্র খাত। ১৫টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২৫টির দর অপরিবর্তিত ছিল এবং ১৯টির দরপতন হয়েছে।
পরের অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয়েছে ১৭০ কোটি ৮০ লাখ। লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমার পাশাপাশি দরপতন হয়েছে খাতটিতে। ৩২টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে ৫টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও অপরিবর্তিত ছিল।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা সিমেন্ট খাতে আগের দিনে কোনো দরপতন দেখা না গেলেও আজ দুটি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। বেড়েছে দুটির ও অপরিবর্তিত ছিল তিনটির দর। লেনদেন হয়েছে ১২৩ কোটি টাকা।
বাকি খাতের লেনদেন ১০০ কোটির নিচেই ছিল।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৯৭ দশমিক ০৪ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। শেয়ারটির দর ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে।
লাফার্জ হোলসিমের দর ২ দশমিক ২২ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২৯ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট।
ওরিয়ন ফার্মা সূচকে যোগ করেছে ২৯ দশমিক ২৩ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ।
এর বাইরে বিকন ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, কোহিনূর কেমিক্যাল, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্কয়ার টেক্সটাইল, ওরিয়ন ইনফিউশন ও পদ্মা অয়েল সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২৫১ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ৪১ দশমিক ১৪ পয়েন্ট সূচক কমেছে ইসলামী ব্যাংকের দর পতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমেছে বসুন্ধরা পেপারের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ।
জেএমআই হসপিটালের দর ৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ১২ দশমিক ২৭ পয়েন্ট।
এ ছাড়া তিতাস গ্যাস, আরএকে সিরামিকস, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ইউনাইটেড পাওয়ার, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, একমি ল্যাব ও পাওয়ার গ্রিডের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১২৭ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৮ দশমিক ৭১ শতাংশ দর বেড়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের। শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৪১৯ টাকায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৩৮৫ টাকা ৪০ পয়সায়।
ওরিয়ন ফার্মা রয়েছে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। বৃহস্পতিবার শেয়ারের দর ৭ দশমিক ৫১ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ১১৭ টাকা ১০ পয়সায়।
৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ দর বেড়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সোনালী আঁশ। সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৬০৩ টাকায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৫৬১ টাকা।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছে- ইয়াকিন পলিমার, কোহিনূর কেমিক্যাল, বেক্সিমকো লিমিটেড, ফাইন ফুডস, প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এস আলম স্টিল ও স্কয়ার টেক্সটাইল।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে ছিল বসুন্ধরা পেপার। শেয়ারদর ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৬৬ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে নাহি অ্যালুমিনিয়াম। ৮ দশমিক ৮৯ শতাংশ দর কমে লেনদেন হয়েছে ৭৯ টাকা ৯০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে জেএমআই হসপিটাল। ৬ দশমিক ৯২ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৯২ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল- সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাপেক্স ফুডস, শাহজিবাজার পাওয়ার, ইন্দোবাংলা ফার্মা, পেপার প্রসেসিং, আরএসআরএম স্টিল ও ন্যাশনাল পলিমার।