ওষুধের দর অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার পর পুঁজিবাজারে এই খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক আকর্ষণ দেখা গেছে।
আর এক মাস পাঁচ শ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পরও পর দুই দিনের সংশোধনেই ঝাঁকুনি দেয়া পুঁজিবাজার সব দ্বিধা কাটিয়ে উত্থানে ফিরল এই খাতের ওপর ভর করেই।।
দুই কর্মদিবস পর লেনদেন আবার দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেল। চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন এটি। এই লেনদেনের প্রায় ২৭ শতাংশ ছিল ওষুধ ও রসায়নের।
সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবস বুধবার হাতবদল হয়েছে ২ হাজার ২০১ কোটি ৩৫ লাভ ৩৮ হাজার টাকার শেয়ার, যা আগের দিনের চেয়ে ৮৮৬ কোটি ২০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা বেশি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের উত্থান হয়েছে ৭৬ পয়েন্ট, যা এক সময় ১০২ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে সংশোধনের দুই দিনে ৭৭ পয়েন্ট কমার পরের দুই দিনে বাড়ল ১১৬ পয়েন্ট।
সূচকের এই অবস্থান গত ৭৮ কর্মদিবসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১২ মে সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৫৬৫ পয়েন্ট। সেখান থেকে টানা পড়তে পড়তে গত ২৮ জুলাই তা নেমে আসে ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে।
সেদিনই ফ্লোর প্রাইস দেয়ার ঘোষণা আসে আর এরপর দিন থেকে সূচক ক্রমেই বাড়তে থাকে। এই পাঁচ সপ্তাহে সূচক বাড়ল মোট ৫৬৭ পয়েন্ট।
সূচক বাড়লেও টানা তৃতীয় দিন কমল বেশিরভাগ শেয়ারের দর। এদিন ১৫৫টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে বাড়ে ১৩১টির দর। আর ৯২টি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে, যেগুলোর বেশিরভাগ লেনদেন হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে।
কেবল ওষুধ খাতের ছয়টি কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ৪৭ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট
বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমলেও সূচক বেড়েছে মূলত ওষুধ ও রসায়ন খাতের ওপর ভর করে। এই খাতের শেয়ারগুলোর দাম কেবল বাড়েনি, লেনদেনও হয়েছে ব্যাপক। মোট ৫৪৭ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে এই খাতের ৩২ কোম্পানিতে।
এই শেয়ারগুলোর মধ্যে কেবল দুটির দর কমেছে, দুটির দর ছিল অপরিবর্তিত। আর বেড়েছে বাকে ২৮টির দরই।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে ৮টিই ছিল একটি খাতের যেগুলোর প্রায় সবগুলোর দরই দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন শেষ করেছে।
বুধবার সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির আটটিই ছিল ওষুধ খাতের
সূচকে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যোগ করেছে, এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে ছয়টিই ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের। আর কেবল এই ছয়টি কোম্পানি সূচকে যোগ করেছে ৪৭ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট।
গত কয়েক মাসে ওষুধের দর বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। এরই মধ্যে এই খাতের একটি কোম্পানি ইবনে সিনা গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছর শেষে যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছ, তাতে দেখা যায়, তাদের আয় ব্যাপকহারে বেড়েছে। তারা কোম্পানির ইতিহাসের সর্বোচ্চ, শেয়ারে ছয় টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
অন্য কোম্পানিগুলোর আয়ও একইভাবে বাড়বে বলে আশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।
ওষুধ খাতের লেনদেন নিয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সামনে ডিভিডেন্ড আসবে। এজন্য সবাই পজিশন নিচ্ছে। আর যদি স্পেসিফিক কয়েকটা কোম্পানির কথা বলা হয়, তাহলে এভাবে বিবেচনা করা যায় যে, সানোফি বেক্সিমকো ফার্মার গর্ভে চলে আসবে। ফলে সেখানে থেকে ভালো মুনাফার প্রত্যাশা রয়েছে। এসব কারণে ফার্মা খাতে একটা মুভমেন্ট দেখা গেছে।’
দুই দিনের ঝাঁকুনি
টানা ছয় কর্মদিবস উত্থান শেষে একদিনের বিরতি শেষে আবার টানা ছয় কর্মদিবস উত্থান। এমন সুখস্মৃতি নিয়ে সপ্তাহ শুরু করা পুঁজিবাজার রোববার হঠাৎ দেয় ঝাঁকুনি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাধারণ সূচক ডিএসইএক্স এক পর্যায়ে ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েও সেখান থেকে ৯৬ পয়েন্ট কমার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরের স্মৃতি ফিরে আসে।
পুঁজিবাজার ৭ হাজার পয়েন্টের বাধা পেরিয়ে যখন ৮ হাজার পয়েন্টের দিকে ছুটবে বলে আশা করা হচ্ছিল, এমন পরিস্থিতিতে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর লেনদেন শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যে সূচক বেড়ে যায় ৭৮ পয়েন্ট। সেখান থেকে অবিশ্বাস্যভাবে ১২৪ পয়েন্ট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত সূচক কমে ৫৬ পয়েন্ট। সেদিন সংশোধন শুরু হলেও বড় মূলধনি কিছু কোম্পানির হাত ধরে সূচক বাড়ছিল। তবে অক্টোবরের সেই দিন থেকে তাও কমতে তাকে। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতভেদ, বছর শেষে বিনিয়োগ সমন্বয়সহ নানা কারণে বাজার যখন চাপে, তখন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলার পর শুরু হয় ধস।
সেদিন সূচক পতনের পর জানা যায়, ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হচ্ছে, এমন একটি গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এরপর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে বলা হয় ফ্লোর প্রাইস নিয়ে আপাতত কিছুই ভাবছে না তারা। এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য চলবে।
এর পরেও সোমবার পতন হয় আরও বেশি। এক পর্যায়ে ৬৮ পয়েন্ট কমে গিয়েও বেলা শেষ করে ৫৮ পয়েন্টের পতন দিয়ে।
এই দুই দিনের প্রথম দিন লেনদেন বাড়লেও দ্বিতীয় দিন কমে যায় ৮০০ কোটি টাকারও বেশি।
রোব ও সোমবার সূচক যতটুকু কমেছিল, তার সমান বেড়েছে বুধবার। মঙ্গলবার বাড়ে আরও ৩৯ পয়েন্ট
তৃতীয় দিন সূচক ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩৯ পয়েন্ট যোগ করে শেষ করলেও বিনিয়োগকারীরা যে বিভ্রান্তিতে ছিল, সেটি স্পষ্ট হয়। লেনদেন আরও কমে এক হাজার তিন শ কোটির ঘরে নেমে আসে।
টানা উত্থানের পর এই সংশোধন যেমন স্বাভাবিক ঘটনা হতে পারে, তেমনি ফ্লোর প্রাইস নিয়ে গুজবের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সিদ্ধান্তও এতে ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পরিবর্তনের পর পুঁজিবাজার নিয়ে সংস্থাটির নীতি পরিবর্তনের বিষয়টি স্পষ্ট। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট গণনাপদ্ধতি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে করার বিষয়ে এক যুগের দাবি কেবল পূরণ হয়নি, পুঁজিবাজার নিয়ে রক্ষণশীল নীতির জন্য যে কর্মকর্তাকে দায়ী করা হয়, ১৯ বছর পর তার দপ্তরও বদল হয়।
এর মধ্যে মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বন্ড ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ এক্সপোজার লিমিটের বাইরে রাখার অনুরোধ করে। এর মধ্যে বন্ডে বিনিয়োগ এক্সপোজারের বাইরে থাকবে বলে বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুইবায়াত-উল ইসলামও জানান।
তবে বিএসইসিকে দেয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক চিঠিতে সরাসরি না বললেও বোঝানো হয় যে, বন্ডে বিনিয়োগ ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিটের মধ্যেই থাকবে।
এই বিষয়টি নিয়েও একটি গুঞ্জন ছিল। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক সেই চিঠিতে ব্যাংকগুলোকে আরও বেশি বিনিয়োগে উৎসাহ দেয়ার বিষয়টি স্পষ্ট করে। পাশাপাশি এটাও বলে যে, পুঁজিবাজার নিয়ে সব ধরনের নীতি সহায়তা অব্যাহত থাকবে।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন বাড়ার বিষয়ে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, ‘দুই দিনে যা প্রফিট টেকিং হওয়ার ছিল তা হয়ে গেছে। শেয়ারদর আবার ফ্লোর প্রাইসের কাছাকাছি চলে এসেছে, অনেকগুলো সেই দরেই ট্রেড হচ্ছে। ফলে এখন বাজার আবার উঠবে, এটাই স্বাভাবিক।’
কোন খাত কেমন করল
সর্বোচ্চ লেনদেনের পাশাপাশি দরবৃদ্ধিতেও শীর্ষে ওষুধ ও রসায়ন খাত। মোট লেনদেনের ২৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ লেনদেনের দিনে দরবৃদ্ধি হয়েছে ২৬টি বা ৮৩ দশমিক ৮৭ শতাংশ কোম্পানির।
বিপরীতে দর কমেছে ৩টির ও ২টির লেনদেন হয়েছে আগের দরেই।
২৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা লেনদেন করে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বিবিধ খাত। সমান দরবৃদ্ধি ও পতন দেখা গেছে এ খাতে। ৫টি করে কোম্পানির দরবৃদ্ধি ও পতনের বিপরীতে ৪টির লেনদেন হয়েছে আগের দরেই।
দর পতনের পাল্লাই ভারী ছিল তৃতীয় স্থানে থাকা প্রকৌশল খাতের। লেনদেন হয়েছে ২২৪ কোটি ৭০ লাখ। বিপরীতে ২০টি কোম্পানির দরপতন, ১৫টির দরবৃদ্ধি ও ৭টির দর অপরিবর্তিত ছিল।
চতুর্থ স্থানে থাকা বস্ত্র খাতে লেনদেন হয়েছে ১৯০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ খাতে অপরিবর্তিত দরে লেনদেন হয়েছে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কোম্পানির। ২৭টি কোম্পানির দরপতনের বিপরীতে ২১টির দর অপরিবর্তিত ছিল। আর বেড়েছে ১১টি কোম্পানির শেয়ারদর।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা সিমেন্ট খাতে কোনো দরপতন হয়নি। লেনদেন হয়েছে ১১২ কোটি ৯০ লাখ টাকা বা ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ। ৫টির দরবৃদ্ধি ও ২টি কোম্পানির লেনদেন হয়েছে অপরিবর্তিত দরে।
এর বাইরে ১০০ কোটি ছাড়িয়েছে ষষ্ঠ অবস্থানে থাকা জ্বালানি খাতে। ১০৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ৫ শতাংশ লেনদেনের বিপরীতে দর বেড়েছে ১৪টি ও কমেছে ৯টি কোম্পানির দর।
বাকি খাতের লেনদেন ৫ শতাংশের নিচে ছিল। আর উল্লেখযোগ্য দর বৃদ্ধি পেয়েছে খাদ্য, ব্যাক ও সাধারণ বিমা খাতে। এর মধ্যে খাদ্যে ২৫, ব্যাংক ৩৯ ও সাধারণ বিমা খাতে ২৬ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরবৃদ্ধি হয়েছে।
বেশি লেনদেন ওরিয়ন ফার্মার
একক কোম্পানি হিসেবে সবচেয়ে বেশি লেনদেন করেছে ওরিয়ন ফার্মা। কোম্পানির এক কোটি ৯৮ লাখ ৮৩ হাজার ৮৩টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২৩০ কোটি ১৪ লাখ ১৫ হাজার টাকায়।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। দিনভর এক কোটি ২২ লাখ ৪১ হাজার ৫৮৩টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যার মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৫১ কোটি ৩২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
তৃতীয় কোম্পানি হিসেবে লেনদেন ১০০ কোটি ছুঁয়েছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ। কোম্পানির এক কোটি ৩৪ লাখ ৭০ হাজার ১১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১০৭ কোটি ৯৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
৪০ থেকে ৮০ কোটি টাকার মধ্যে লেনদেন হয়েছে শীর্ষে দশটি কোম্পানির। এ তালিকায় ছিল নাহি অ্যালুমিনিয়াম, জেএমআই হসপিটাল, বেক্সিমকো ফার্মা, ইস্টার্ন হাউজিং, একমি ল্যাব, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন ও মালেক স্পিনিং।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ১৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বিকন ফার্মা। শেয়ারটির দর ৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ দর বেড়েছে।
বেক্সিমকো ফার্মার দর ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ১৬ দশমিক ০১ পয়েন্ট।
লাফার্জ হোলসিম সূচকে যোগ করেছে ৯ দশমিক ১৬ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ।
এর বাইরে বেক্সিমকো লিমিটেড, ওরিয়ন ফার্মা, পাওয়ার গ্রিড, এমজেএল বাংলাদেশ, একমি ল্যাব, কোহিনূর কেমিক্যাল ও ইবনে সিনা ফার্মা সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৭২ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ৪ দশমিক ৮২ পয়েন্ট সূচক কমেছে আইসিবির দর পতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ২ দশমিক ২ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট কমেছে ইউনাইটেড পাওয়ারের কারণে। শেয়ার প্রতি দাম কমেছে শূন্য দশমিক ৯২ শতাংশ।
বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলের দর ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৩ দশমিক ১৪ পয়েন্ট।
এ ছাড়া রেনাটা, ইস্টার্ন হাউজিং, আরএকে সিরামিকস, স্কয়ার ফার্মা, বার্জার পেইন্টস, এফবিএফআইএফ ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২০ দশমিক ২ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ দর বেড়েছে ওরিয়ন ফার্মার। শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১১৭ টাকা ১০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ১০৬ টাকা ৫০ পয়সায়।
এসিআই ফর্মুলা রয়েছে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। বুধবার শেয়ারের দর ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়ে লেনদেন হয়েছে ১৯১ টাকা ৬০ পয়সায়।
৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ দর বেড়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অ্যাডভেন্ট ফার্মা। সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ৩১ টাকায়। আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ২৮ টাকা ৫০ পয়সা।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, বিকন ফার্মা, ইবনে সিনা ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, কোহিনূর কেমিক্যাল ও বিডি ওয়েলডিং ইলেক্ট্রোডস লিমিটেড।
দর পতনের শীর্ষ ১০
এই তালিকার শীর্ষে ছিল ইবিএল এনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড। ফান্ডটির প্রতি ইউনিটের দর ৯ দশমিক ৫৮ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৬ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হয়।
পতনের তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে আরেক মিউচ্যুয়াল ফান্ড। আইএফআইসি ফার্স্ট মিউচ্যুয়ালের দর ৮ দশমিক ৯২ শতাংশ কমে লেনদেন হয়েছে ৫ টাকা ১০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে ইস্টার্ন হাউজিং। ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ৮৫ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়।
দর কমার শীর্ষ দশে থাকা অন্য কোম্পানিগুলো ছিল-
এফবিএফআইএফ, পপুলার লাইফ ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল, এবি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল, পিএইচপি ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল, ট্রাস্ট ব্যাংক ফার্স্ট মিউচ্যুয়াল, সোনারগাঁও টেক্সটাইল ও গ্রামীণ ওয়ান: স্কিম টু মিউচ্যুয়াল ফান্ড।
তবে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের এই দরপতন হয়েছে তাদের লভ্যাংশ সংক্রান্ত সমন্বয়ে। ফান্ডগুলো গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য যে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে, তার রেকর্ড ডেট ছিল মঙ্গলবার।
এই ফান্ডগুলো ইউনিটপ্রতি সর্বনিম্ন ৬০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ দেড় টাকা লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। কিন্তু ফ্লোর প্রাইসের জন্য দর এত বেশি কমতে পারেনি। এই হিসেবে বিনিয়াগকারীরা ইউনিটপ্রতি ২০ পয়সা থেকে ৬০ পয়সা মুনাফা পেয়েছেন প্রথম দিনই।