২০২২-২০২৩ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে সাত শতাংশ ধরা হয়েছিল। এর পরে অর্থনীতিতে চাপ বেড়েছে। তাই অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি যদি সাত শতাংশ অর্জিত হয় তাহলে সেটা অনন্দের হবে বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) আয়োজিত উন্নয়ন সংলাপে মঙ্গলবার সকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ হলেও আমরা খুশি। তবে সাতের নিচে গেলে কষ্ট পাব। কিন্তু শর্ত একটাই মূল্যস্ফীতিকে কমিয়ে আনতে হবে।’
চলতি অর্থবছরে বাজেটে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সাড়ে ৭ শতাংশ। তবে বিশ্ব ব্যাংক তাদের গবেষণায় বলেছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৬ দশমিক সাত শতাংশ।
চলতি অর্থবছরের দুই মাস চলে গেছে এর মধ্যে দেশের অর্থনীতিতে বিভিন্ন দিক থেকে চাপ বেড়েছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের পরিকল্পনামন্ত্রী বাজেটে ধরা জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করলেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, সাত শতাংশ অর্জিত হলেই তিনি খুশি হবেন।
তবে এই সাত শতাংশ অর্জন করতে হলেও তিনি আবার শর্ত দিয়েছেন যে মূল্যস্ফীতিকে বেধে রাখতে হবে।
চলতি অর্থবছরের বাজটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
গত জুলাই মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। আগস্টে মাসে মূল্যস্ফীতি আরও কিছুটা বাড়বে বলে এরই মধ্যে আভাস এসেছে। যদিও এই পরিসংখ্যান এখনও জানা যায়নি।
সেখানে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশের ঘরে নামিয়ে আনাটা সামনে কঠিন হতে পারে।
অন্য দিকে ডলারের দাম ১০০ টাকার ঘরে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী। আর ডলারের দাম ১১০ টাকা থাকলে সেটাকে ভয়ের ব্যাপার বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ডলারের দাম বর্তমানে কার্ব মার্কেটে চলছে ১১৩ টাকার ঘরে।
একদিকে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি অন্য দিকে ডলারের দামের ঊর্ধ্বগতি বড় ধরনের হুমকি হয়ে আছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের পথে।
তবে এর মধ্যে আশার কথাও শোনালেন পরিকল্পনামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আশার দিক হচ্ছে আমাদের অর্থনীতি শ্রমনির্ভর। আমাদের শ্রমের বাজার ঠিক আছে। পাশাপাশি আমাদের খাদ্য ভালো মজুদ আছে। আমরা আইএমএফ থেকে ঋণ পাচ্ছি। সব মিলিয়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভালো প্রভাব পড়বে।’
এর পরেই জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে তার সবচেয়ে বড় শঙ্কার কথা বলেন তিনি।
মান্নান বলেন, ‘দেশে যদি সামাজিক অস্থিতিশীলতা থাকে তাহলে কোনো ভাবেই আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে না। আইএমএফ যদি আরও বেশি টাকা দেয় তাহলেও হবে না।’