বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

৩০০ টাকা থেকে মরিচ এখন ৪০

  • বীর সাহাবী, ঢাকা   
  • ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:৪৬

কেবল বাড়তেই থাকা নিত্যপণ্যের বাজারে এখন দর একটু একটু করে কমতে শুরু করেছে। সরকার ৯টি পণ্যের দর বেঁধে দেবে জানানোর পর থেকে কমছে সবজি, মাছের দরও। তবে কিছুটা কমলেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দাম যে অনেকটাই বেশি, সেটা বলাই বাহুল্য।

কারওয়ান বাজারের রাস্তা ধরে সবজির দোকানগুলোর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বিক্রেতার হাঁকডাক ভেসে এলো, তিনি কাঁচা মরিচের বস্তা অর্ধেকটা খুলে রেখে ডাকছিলেন, ‘মরিচ ৪০, মরিচ ৪০’।

কিছুক্ষণ হেঁটে আরেক দূর এগিয়ে গিয়েও দেখা যায়, সেই বিক্রেতা একইভাবে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করছিলেন।

অথচ সপ্তাহ তিনেক আগেও এই কারওয়ান বাজারে মরিচ বিক্রি হয়েছে ২৬০ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে, মহল্লার দোকানে তা ৩০০ ছাড়িয়ে যায়।

এরপর ভারত থেকে আমদানিতে মরিচের সরবরাহ বাড়ে আর ধীরে ধীরে কমে আসে দাম।

রান্নার এই উপকরণের পাশাপাশি দাম কমতে শুরু করেছে পাইকারি আড়তের পাশে কারওয়ান বাজারের খুচরা বাজারেও।

সবজি বিক্রেতা সায়িম আলী বলেন, ‘গত সপ্তাহেও যে দামে বেচছি, এই সপ্তাহে দাম কমছে ১০ থাইক্যা ১৫ টাকা। মালের আমদানি ভালো, দাম কম।’

বাজারে গিয়ে জানা গেল, কেবল বাড়তেই থাকা নিত্যপণ্যের বাজারে এখন দর একটু একটু করে কমতে শুরু করেছে। সরকার ৯টি পণ্যের দর বেঁধে দেবে জানানোর পর থেকে কমছে সবজি, মাছের দরও। তবে কিছুটা কমলেও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দাম যে অনেকটাই বেশি, সেটা বলাই বাহুল্য।

শীতের জনপ্রিয় সবজি শিম উঠেছে দুই সপ্তাহের বেশি হয়ে গেলে। শুরুতে দাম ছিল আড়াই শ টাকা। সেটির দাম দুই বিক্রেতা চাইলেন ১২০ টাকা। ১০০ করে দেয়া যাবে কি না, জানতে চাইলে এক বিক্রেতা ১১০ টাকা দাম রাখার প্রস্তাব করেন।

শীতের আরেক সবজি টম্যাটোর দাম কমেছিল ঈদের পর পরই। তবে পরে আবার বেড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে কমে আবার ৮০ থেকে ১০০ টাকায় নামতে দেখা গেছে।

বছরজুড়ে পাওয়া যায় যে সবজি, সেই বেগুনের মধ্যে লম্বাটা ৩০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা গেল।

এই সময়ের সবচেয়ে সস্তা সবজি পেঁপে কেউ ২০ টাকা, কেউ ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছিলেন। কাঁকরোলের দর দিনে ৪০, রাতে গেলে ৩০। একই অবস্থা পটোল, চিচিঙ্গার ক্ষেত্রে। দিনে ৪০, রাতে ৩০ টাকা।

আলুও পাঁচ কেজির এক পাল্লা নিলে দর ধরে ২৬ থেকে ২৮ আর কেজি নিলে ৩০। আর গত কয়েক বছরের মধ্যে লেবুর দর এখন সবচেয়ে কম। ডজন ২০ টাকা দরেও ডেকে ডেকে বিক্রি করতে দেখা যায়।

সবজির পাশাপাশি দাম কমেছে আদারও। গত সপ্তাহে কেজি ছিল ১২০ টাকা, সেটি নেমে এসেছে ১০০ টাকায়। কেজিতে এক টাকা কমে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৪ টাকায়।

চাল-আটার দরেও ভাটার টান

চালের আমদানি শুল্ক আরও কমিয়ে দেয়ার পর দামের ঊর্ধ্বগতি থেমে শুরু হয়েছে নিম্নগতি। সরু চালের মধ্যে নাজিরশাইল বিক্রি হয়েছে ৬৪ থেকে ৭৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬৫ থেকে ৮০ টাকা। অর্থাৎ দাম কমেছে কেজিতে ১ থেকে ৪ টাকা।

মাঝারি চাল পাইজামের দর গত সপ্তাহে ছিল ৫৫ থেকে ৬০, সেটি নেমেছে ৫৪ থেকে ৫৫ টাকায়।

৫৫ থেকে ৫৮ টাকার মোটা স্বর্ণা চালের দর নেমেছে ৫২ থেকে ৫৬ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের ‘সিয়াম রাইস ট্রেডার্স’ নামের প্রতিষ্ঠানের মালিক রহিম বেপারি তালুকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দাম ধীরে ধীরে কমছে। গেল সপ্তাহে যে দামে চাল বিক্রি করেছি, তা এ সপ্তাহে ৫-৭ টাকা কম।’

পাইকারি চাল বিক্রেতা মফিজুল আহমেদ বলেন, ‘দাম বাড়লেই ক্রেতা বেশি থাকে। সবাই তখন বেশি বেশি কিনতে আসে। আর দাম কমলে ক্রেতাও কমে যায়৷ তারা ভাবে দাম আরও কমবে। তাই সবাই অপেক্ষা করে।’

খোলা আটাও কিছুটা কমে মিলছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজির দর ৫০ টাকা থাকলেও এ সপ্তাহে মিলছে ৪৬ থেকে ৪৮ টাকায়। তবে এ দাম এক মাস আগের তুলনায় প্রায় ২২ শতাংশ বেশি।

বিপণনকারী দু-একটি কোম্পানি আটার দুই কেজির প্যাকেটের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে ১২৫ টাকা, যা এ সপ্তাহেও অপরিবর্তিত আছে।

বিভিন্ন বাজারে দেশি মসুর ডালের কেজি ১২০ টাকা। ভারতীয় মসুরের ডাল পাঁচ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়।

নতুন দাম অনুযায়ী বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮২ টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৯২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া পাঁচ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৪৫ টাকায়। পাম তেল লিটারপ্রতি ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের ডজন ১২০-এর নিচে

কদিন আগে প্রায় প্রতিদিনই বাড়তে থাকা ডিমের হালি একপর্যায়ে ১৭০ টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার পর যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছিল, সেটি প্রশমিত হয়েছে।

খুচরা পর্যায়ে হচ্ছে ৪০ টাকা হালি আর পাইকারিতে কিনলে ডজন মিলছে ১০৮ টাকায়।

ব্রয়লারে মুরগির দাম কেজিপ্রতি ২০০ থেকে নেমে এসেছে ১৭০ টাকা। তবে সোনালি মুরগির ক্ষেত্রে বিপরীতমুখী প্রবণতা। আগের সপ্তাহে যা ছিল ২৮০ টাকা, সেটি এখন ৩০০ টাকা।

দেশি মুরগি সেই আগের দাম ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

ওদিকে ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ার পর ধীরে ধীরে এই মাংস যে ৭০০ টাকায় উঠে যায়, সেখান থেকে যেন নামার নাম নেই। কোনো দোকানে কেজিতে ৬৮০, কোথাও ৭০০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে।

গরুর মাংস বিক্রেতা জমির মিয়া বলেন, ‘গরুর মাংসের দাম কমব কি না, সেইটা বলা যায় না।’

স্বস্তি দিচ্ছে মাছও

গত সপ্তাহে যে রুই ৩২০ টাকায় কিনতে হয়েছে, তা এ সপ্তাহে মিলছে ৩০০ টাকায়।

রকম ভেদে তেলাপিয়া ও পাঙাশ ১৩০ থেকে ১৯০ টাকা কেজি, শিং ৩৫০ থেকে ৪৬০, কই ২০০ থেকে ২৫০, পাবদা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

এই সময়ের ‘হার্টথ্রব’ ইলিশ এক কেজির নিচে ৮৫০ আর এক কেজি হলে ১ হাজার ১০০ আর এর চেয়ে বেশি হলে ১ হাজার ৬০০ টাকা হিসাবেও দাম চাইতে দেখা গেছে বিক্রেতাদের।

এ বিভাগের আরো খবর