রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনার আলোচনার মধ্যেই দেশটি থেকে বিপুল পরিমাণ গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
দেশটি থেকে পাঁচ লাখ টন গমের পাশাপাশি, ভারত থেকে ১ লাখ টন চাল এবং ভিয়েতনাম থেকে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল কেনা হবে।
দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের অংশ হিসেবে মোট ৭ লাখ ৩০ হাজার টন গম ও চাল কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এর অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল বারিক সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
কোন দেশের চালের কেজি কত
ভারত থেকে দুই লটে ১ লাখ টন চাল আমদানি করা হবে। এর মধ্যে ৭০ হাজার টন প্রথম লটে এবং ৩০ হাজার টন দ্বিতীয় লটে আনা হবে।
ভারতের চালের প্রতি কেজির দাম পড়বে যথাক্রমে ৪২ টাকা এবং ৪০ টাকা ৭০ পয়সা।
ভিয়েতনাম থেকে আনা হবে ২ লাখ ৩০ হাজার টন চাল। প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে যথাক্রমে ৫০ ও ৪৭ টাকা।
গমের টাকা ডলারে পরিশোধ
রাশিয়া থেকে যে ৫ লাখ টন গম কেনা হবে, তার প্রতি কেজির দাম পড়বে ৪০ টাকা ৮৫ পয়সা।
মন্ত্রিপরিষদের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল বারিক জানান, সরকারি পর্যায়ে অর্থাৎ জি টু জি ভিত্তিতে এসব দেশ থেকে চাল ও গম কেনা হবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাশিয়া থেকে যে গম আনা হবে, তার দাম ডলারে পরিশোধ করা হবে। গম আমদানি বাবদ ব্যয় হবে সাড়ে ২১ কোটি ডলার।
বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়া থেকে বিকল্প হিসেবে তেল আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার, কিন্তু তেলের মূল্য পরিশোধ কোন মুদ্রায় করা হবে, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
রুবেলের সঙ্গে টাকার বিনিময় করা যায় কি না কিংবা অন্য কোনো পন্থায় পেমেন্ট করা যায় কি না, সে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি রাশিয়া থেকে ৩৫ টাকা লিটারে তেল আমদানির বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানান, কিন্তু বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
এমন বাস্তবতায় রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম আমদানি করতে যাচ্ছে সরকার।
চালের সরবরাহ বাড়াতে চায় সরকার
এদিকে দেশীয় বাজারে চালের সরবরাহ বাড়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিয়েছে সরকার। এ জন্য চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি সহজ করতে সম্প্রতি শুল্কহার ব্যাপক কমানো হয়েছে।
এসব উদ্যোগের উদ্দেশ্য হলো আমদানি করে বাজারে চালের সরবরাহ বাড়ানো যাতে ভোক্তা সাশ্রয়ী দামে চাল কিনে খেতে পারে।
এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫০ লাখ পরিবারকে ১৫ টাকা দরে চাল বিতরণের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এর বাইরে টিসিবির মাধ্যমে সারা দেশে ন্যায্য মূল্যে শিগগিরই এক কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সরকার ১০ কেজি করে চাল দেবে। খোলাবাজারে সাশ্রয়ী দামে চাল বিক্রি অব্যাহত রাখা হবে।