জুলাইয়ের শেষ দিন থেকে পুঁজিবাজারের ঘুরে দাঁড়ানোর এক মাস পূরণ হলো। এর মধ্যে ২১ কর্মদিবসের মধ্যে ১৫ দিনে সূচক বাড়ল প্রায় ৫০০ পয়েন্ট। এর মধ্যে শেষ পাঁচ দিনে টানা বাড়ল ১৭৬ পয়েন্ট। আর ১২ কর্মদিবসে বাড়ল ৩০৮ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি লেনদেন দুই কর্মদিবস পর লেনদেন আবার দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়াল, যা চলতি ২০২২ সালে ঘটেছে দ্বিতীয়বরোর মতো।
আবার এক মাস বাড়লেও এক বছর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর যে দর সংশোধনের কবলে পড়ে বাজার, সেই দিনের তুলনায় সূচন এখনও প্রায় আট শ পয়েন্ট কম। আর গত বছরের ১০ অক্টোববর গত এক যুগের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে প্রায় ৯০০ পয়েন্ট কম।
গত বৃহস্পতিবার থেকে টানা পাঁচ কর্মদিবসের উত্থানের মধ্যে চলতি সপ্তাহের চতুর্থ কর্মদিবসে যোগ হলেও ২৪ পয়েন্ট।
তবে এক পর্যায়ে সূচক আরও বাড়ার আভাস দিয়েছিল। লেনদেন শেষ হওয়ার ৪৫ মিনিট আগে বেলা ১ টা ৫ মিনিটে সূচক ৫৩ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হচ্ছিল এবং তা ছিল ঊর্ধ্বমুখি। তখন সূচকের অবস্থান ছিল ৬ হাজার ৪৮৫ পয়েন্ট, যা ছিল গত ৬ জুনের পর সর্বোচ্চ।
তবে সেখান থেকে হঠাৎ দেখা দেয় বিক্রয় চাপ। ফলে শেষ পৌনে এক ঘণ্টায় দিনের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে সূচক কমে যায় ২৯ পয়েন্ট।
সূচকের এই অবস্থান ছিল গত ৯ জুনের পর সর্বোচ্চ। সেদিন ডিএসইর সার্বিক সূচক ছিল ৬ হাজার ৪৮০ পয়েন্ট।
উত্থানের এই দিনে বেড়েছে ১৭৯টি কোম্পানির দর, কমেছে ১৩৫টির। অন্যদিকে ৬৬টি লেনদেন হয়েছে আগের দিনের দরে, যেগুলোর সিংহভাগই হাতবদল হয়েছে ফ্লোর প্রাইসে।
গত দুই মাস ধরে লেনদেনে বস্ত্র খাতের যে প্রাধান্য দেখা গেছে, সেটি আরও বেড়েছে। এই খাতে হাতবদল হয়েছে পৌনে চার শ কোটি টাকার বেশি। তবে এই খাতে বেশিরভাগ কোম্পানির দর কমেছে।
তবে দর বৃদ্ধির দিক দিয়ে খাতভিত্তিক সবচেয়ে ভালো দিন গেছে সাধারণ বিমায়। এই খাতের ৪১টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৮টির। দুটির দর কমেছে আর একটির দর ছিল আগের দিনের সমান।
জ্বালানি, প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন এবং ব্যাংক খাতেও বেশিরভাগ কোম্পানির দর বেড়েছে। তবে ব্যাংকে দর বৃদ্ধির হার খুবই কম।
ছোট খাতগুলোর মধ্যে সিমেন্ট ৭টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৬টির।
প্রধান খাতগুলোর মধ্যে বেশিরভাগের ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে।
সূচকের এই লাফের মধ্যে বিনিয়োগকারীরা তাদের আগের লোকসানের হিসাবনিকাশে ব্যস্ত। দরপতনের কারণে বিও হিসাব থেকে যত টাকা কমে গেছে, তার কত ফিরে আসছে, তা নিয়েই চলছে আলোচনা।
এই উত্থানের মধ্যে এখনও ঝিমুচ্ছে ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। লেনদেনে বস্ত্র সবাইকে ছাড়িয়ে গেলেও বেশিরভাগ কোম্পানির, বিশেষ করে মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর দর এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে।
এই কয় দিন সূচক বেড়েছে মূলত প্রকৌশল, ওষুধ ও রসায়ন, বহুজাতিক কয়েকটি কোম্পানি, ব্যাংক বহির্ভুত আর্থিক খাতের কারণে।
টানা ছয় দিন উত্থানের পর গত ২৪ আগস্ট সংশোধন শেষে আবার টানা পাঁচ দিন সূচক বাড়ল পুঁজিবাজারে। বুধবার এক পর্যায়ে সূচক ৫৩ পয়েন্ট বেড়েও একেবারে শেষ বেলায় কমে কিছুটা
পুঁজিবাজারের লেনদেনের বিষয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন নিউজবাংলাকে বলেন, ' অর্থনীতি নিয়ে যত আশঙ্কা ছিল, তার সবগুলোই সুন্দরভাবে মোকাবিলা করে চলেছে বাংলাদেশ। এটি বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। এর সঙ্গে সাহস যুগিয়েছে ফ্লোর প্রাইস। কারণ, এর নিচে শেয়ারদর নামতে পারবে না বলে মনোবল চাঙা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজারে নতুন ফান্ড ইনজেকশন, শেয়ারের দাম বৃদ্ধির ফলে একটা বিক্রি করে আরেকটা কেনা অর্থাৎ ইন্টারনাল মুভমেন্টের কারণে বাজার খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে। যেসব বিনিয়োগকারী নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছিলেন তারাও ফিরছেন। সবগুলোই ইতিবাচক দিক।’
গত সেপ্টেম্বর থেকে যা যা হয়েছে
তবে পুঁজিবাজার নিয়ে নানা স্বার্থ সংশ্লিষ্টদের যেসব দাবি ছিল, তার প্রায় সবগুলোই পূরণ হয়েছে। আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মতভেদের যে বিষয়গুলো এতদিন বাজারকে অস্থির করেছে, সেটিও দৃশ্যত এখন আর নেই।
এই বিষয়গুলো স্পষ্ট হওয়ার পর হাত গুটিয়ে বসে থাকা ব্যক্তি শ্রেণির ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারে ফিরতে শুরু করেছেন। বাড়ছে লেনদেন, সেই সঙ্গে বাড়ছে সূচক।
গত ১২ কর্মদিবসের মধ্যে মাঝে একদিন ৩৫ পয়েন্ট কমা ছাড়া সূচক বেড়েছে প্রতি দিনই। টানা চার কর্মদিবস লেনদেন দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি। মাঝে একদিন চলতি বছরের সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে, যেদিন দুই হাজার কোটি টাকার বেশি হাতবদল হয়।
২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে পুঁজিবাজারে যে উত্থান শুরু হয়, তা চালু থাকে পরের বছরের জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। এরপর মার্জিন ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার বেঁধে দেয়াকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারে এপ্রিলের শুরু পর্যন্ত দরপতনের মধ্য দিয়ে যায়। ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউনের ঘোষণা দেয়ার পর লেনদেন স্থগিত হওয়ার আতঙ্কে সংশোধনের মধ্যে শুরু হয় ধস।
তবে যখন বিএসইসি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় লেনদেন স্থগিত হবে না, তখন শুরু হয় উত্থান। সেটি চালু থাকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে ২০১০ সালের মহাধসের পর প্রথমবারের মতো লেনদেন তিন হাজার কোটি টাকার কাছে যাওয়ার পাশাপাশি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স সাত হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়।
আট হাজারের পথে যাত্রা শুরু করার যে স্বপ্ন, সেটি হোঁচট খায় ১২ সেপ্টেম্বর। ক্রমেই বাড়তে থাকা সূচক সেদিন এক পর্যায়ে ৭৮ পয়েন্ট বেড়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ৫৬ পয়েন্ট পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় লেনদেন।
সূচকের সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে সর্বনিম্ন অবস্থানের মধ্যে ১২৪ পয়েন্টের পার্থক্যই সেদির দর সংশোধনের ইঙ্গিত দিয়ে রাখে।
তবে এই সংশোধনে সিংহভাগ শেয়ার দর হারাতে থাকলেও সূচক ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়তে থাকে বড় মূলধনি বিএটিবিসি, লাফার্জ হোলসিম, বেক্সিমকো লিমিটেডসহ আরও কিছু কোম্পানির দর বাড়তে থাকার কারণে।
এর মধ্যে অক্টোবরে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিএসইসির মধ্যে মতভেদের বিষয়টি সামনে আসে। এই বিষয়টি বিনিয়োগকারীমের মনে এত বেশি দাগ কাটে যে, পুঁজিবাজারে লেনদেন ক্রমেই কমতে থাকে, সেই সঙ্গে কমতে থাকে মূল্য সূচক।
এভাবেই চলে যায় ২০২১ সাল। নতুন বছরের শুরুতে বাজার ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেও শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের পর পুঁজিবাজার ঘিরে নানা গুজব, গুঞ্জনে আবার শুরু হয় দরপতন। এর মধ্যে ২৪ অক্টোবর ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর অর্থনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়ে পুঁজিবাজারে। শুরু হয় ধস।
এক পর্যায়ে গত ২৮ জুলাই সূচক নেমে আসে ছয় হাজার পয়েন্টে। সেদিন বিকেলে বিএসইসি সব শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দিলে পরদিন থেকে শুরু হয় উত্থান।
উত্থান শুরুর সপ্তাহের টানা পাঁচ কর্মদিবসে ৩০৩ পয়েন্ট সূচক বাড়ার মধ্যে আরও একটি সুখবর আসে। পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট গণনাপদ্ধতি শেয়ারের ক্রয়মূল্যে করতে দীর্ঘদিনের যে দাবি ছিল, তা পূরণ হয়ে যায় ওই সপ্তাহে। বাংলাদেশ ব্যাংক জারি করে সার্কুলারও।
তবে পরের সপ্তাহে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়া নিয়ে আবার গুজবের কবলে পড়ে পুঁজিবাজার। ওই সপ্তাহে আবার টানা চার কর্মদিবসে ১৩৭ পয়েন্ট দরপতন নিয়ে তৈরি হয় বিস্ময়।
তবে ১১ আগস্ট বিএসইসির পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয় যে, ফ্লোর প্রাইস উঠে যাচ্ছে না। যারা গুজব ছড়াচ্ছে তাদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর পরের কর্মদিবস ১৪ আগস্ট থেকে শুরু হয় উত্থানের নতুন সময়। টাকা ছয় দিনে ১৬৭ পয়েন্ট বাড়ার পর কেবল ২৪ আগস্ট এক দিন সংশোধন হয়। পরের পাঁচ দিনে আবার টানা বাড়ল সূচক।
সূচক বাড়াল যারা
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ। শেয়ারটির দর ৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ দর বেড়েছে।
বসুন্ধরা পেপারের দর ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে ২ দশমিক ০৭ পয়েন্ট।
পাওয়ার গ্রিড সূচকে যোগ করেছে ১ দশমিক ৭ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ২ দশমিক ২৪ শতাংশ।
এ ছাড়া জিপিএইচ ইস্পাত, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, কনফিডেন্স সিমেন্ট, কেয়া কসমেটিকস, বিএসআরএম লিমিটেড, কোহিনূর কেমিক্যাল ও পূবালী ব্যাংক সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ২২ দশমিক ৭১ পয়েন্ট।
বিপরীতে সবচেয়ে বেশি ২ দশমিক ৭ পয়েন্ট সূচক কমেছে বিকন ফার্মার দর পতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ২ দশমিক ২৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৪ পয়েন্ট কমেছে আইসিবির কারণে। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৫২ শতাংশ।
বেক্সিমকোর দর শূন্য দশমিক ৮৪ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ১ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট।
এ ছাড়া স্কয়ার ফার্মা, সোনালী পেপার, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, সামিট পাওয়ার, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন, আইপিডিসি ফাইন্যান্স ও গ্রামীণফোনের দরপতনে সূচক কমেছে।
সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ১৪ দশমিক ০৬ পয়েন্ট।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০
সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ দর বেড়েছে বসুন্ধরা পেপার মিলের। শেয়ারটি সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬৬ টাকা ৩০ পয়সায়। আগের দিনে লেনদেন হয়েছিল ৬০ টাকা ৩০ পয়সায়।
আমান কটন তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেড়ে শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৩ টাকায়।
৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ দর বাড়া কনফিডেন্স সিমেন্ট রয়েছে তালিকার তৃতীয় স্থানে। সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ১০৭ টাকা ৪০ পয়সায়।
আগের দিনে ক্লোজিং প্রাইস ছিল ৯৮ টাকা ১০ পয়সা।
এ ছাড়া দর বৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে-কেয়া কসমেটিকস, ওরিয়ন ইনফিউশন, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, শাহজিবাজার পাওয়ার, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন, পেনিনসুলা এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স।
দর পতনের শীর্ষ ১০
দরপতনের শীর্ষে রয়েছে ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন। শেয়ারটির দর ৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে সর্বশেষ ৩৮ টাকা ৮০ পয়সায় লেনদেন হয়।
সোনারগাঁও টেক্সটাইলের দর পতনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। শেয়ারটির দর ৫ টাকা ৮০ পয়সা বা ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ কমেছে। শেয়ারটির ক্লোজিং প্রাইস দাঁড়িয়েছে ৬০ টাকা ২০ পয়সায়।
তৃতীয় সর্বোচ্চ দর হারিয়েছে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ। ৬ দশমিক ৭২ শতাংশ কমে শেয়ারটি সর্বশেষ ২২ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়।
এ ছাড়া দর কমার শীর্ষ দশে ছিল ঢাকা ডায়িং, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ, মনোস্পুল, তশরিফা ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাপেক্স ফুডস, পেপার প্রোসেসিং ও লোকসানি ইউনিয়ন ক্যাপিটাল।