জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির যে প্রতিযোগিতা, তাতে যোগ হয়েছে ডিম। দেশের বাজারে প্রথমবারের মতো প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৫০ টাকা ছাড়িয়েছে।
ডিমের দাম বাড়ার কারণে কদর বেড়েছে ভাঙা ডিমের। অর্ধেক দামে বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে জানা গেছে, চড়া দামের কারণে অনেকে ডিম কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। আবার স্বল্প আয়ের অনেক ক্রেতা কম দামে কিনছেন ভাঙা ডিম।
ডিমের খোসা খুব বেশি শক্ত নয় বলে খুব অল্প চাপে ভেঙে যায়। ডিমের কিছু অংশ ভেঙে গেলেও তার পুরোটা নষ্ট হয়ে যায় না। উপযোগিতা থাকলেও বাজারদরে এসব ডিম নিতে চান না ক্রেতারা। ফলে অনেক সস্তায় বিক্রি হয় ভাঙা ডিম।
বিক্রেতারা জানান, ভালো ডিম প্রতিটি ১২ থেকে ১৩ টাকায় বিক্রি হলেও ভাঙা ডিম বিক্রি হয় অর্ধেকেরও কম দামে। ডিমের দাম বাড়ায় বিক্রি কিছুটা বেড়েছে ভাঙা ডিমের। তবে ক্রেতাদের আগ্রহ কম থাকে সব সময়ই।
কারওয়ান বাজারের ডিম বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাঙা ডিম খুব বেশি বিক্রি হয় না। সামান্য ভাঙলে বা চ্যাপ্টা হলেই তা বাজারের অর্ধেক দাম বিক্রি করতে হয়। হয়তো খোসা ভেঙে গেছে, কিন্তু ভেতরের আবরণ ঠিক আছে, তারপরও সেটা ৫ টাকার নিচে বিক্রি করতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘ডিমের দাম বাড়ার পরে অনেকেই ভাঙা ডিম কিনছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘হয়তো কারও একদিনে অনেক ডিমের প্রয়োজন, তখন তারা সস্তায় এসব ডিম কিনতে চান।’
শরিফুল বলেন, ‘দাম বেড়ে যাওয়ায় ডিম আনা-নেয়ার ক্ষেত্রে সবাই সতর্ক থাকছেন। হাস্যকর মনে হলেও এটি সত্যি যে ডিম ভাঙার পরিমাণ কম গেছে। ভাঙা ডিম জমছেই না।’
আরেক বিক্রেতা টিপু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাঙা ডিম ২ থেকে ৫ টাকা বিক্রি করা যায়। যদি সামান্য চ্যাপ্টা হয়, তাহলে সেই ডিম ৫ টাকায় বিক্রি করা যায়। কিন্তু ডিমের খোসা ভেঙে গেলে সেটা সর্বোচ্চ ২ বা ৩ টাকায় বিক্রি হয়। এসব ডিম অনেক সময় বাসায় নিয়ে যাই, আর সেটা সম্ভব না হলে ফেলে দিই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডিমের দাম বাড়ার পর ভাঙা ডিমের বিক্রি বেড়েছে তেমনটা বলা যায় না। আসলে ভাঙা ডিমের চাহিদা খুব বেশি নাই। তবে দাম বাড়ার পরে আগের তুলনায় কিছুটা বিক্রি বেশি হয়েছে।’
তিনি যোগ করেন, ‘আগে ভাঙা ডিম পড়ে থাকত। আমরা যেচে পড়ে বিক্রির চেষ্টা করতাম। দাম বাড়ার পর এখন ভাঙা ডিম দেখে অনেকেই দর জিজ্ঞাসা করছেন। ৫ টাকা পিস দাম চাইলে দরদাম করে নিচ্ছেন অনেকে।’
ডিম কিনতে আসা সুলায়মানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘ডিমের খোসা সামান্য ভেঙে গেলেও সেগুলো ব্যবহার করা যায়। ভেতরে কিছুই হয় না। আবার দামও কম। অনেক সময় পুডিং বা নুডলস জাতীয় খাবার রান্না করতে গেলে অনেক ডিম লাগে, তখন অনেক সময় সস্তায় এসব ডিম কিনে নেয় অনেকেই। আমি নিজেও একবার কিনেছি।’
বুধবার পর্যন্ত রাজধানীর বাজারে প্রতি ডজন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় অর্থাৎ প্রতি পিস প্রায় ১৩ টাকায় বিক্রি হয়েছে। শুক্রবার প্রতি ডজনে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে ডিম।