বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে তিন উপায় দেখছেন অর্থনীতিবিদরা

  •    
  • ১৭ আগস্ট, ২০২২ ১৮:২৩

মঙ্গলবার একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল্যস্ফীতি কীভাবে প্রশমন করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কৌশল খুঁজতে বলেছেন। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এটি করতে হলে তিনটি পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। 

বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় মূল্যস্ফীতি প্রশমনে সরকারকে তিন পদক্ষেপ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এগুলো হলো: বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, ব্যাংক খাতের ঋণের সুদ হারের নির্ধারিত সীমা তুলে দেয়া এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘নীতি সুদ হার’ বাড়ানো।

এসব পদক্ষেপ নিলে মূল্যস্ফীতি সহনীয় হবে এবং সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল হবে বলে মত দেন তারা।

বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও মূল্যস্ফীতির জ্বরে কাঁপছে। আর মূল্যস্ফীতির যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ।

বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি দেশের ভেতরেও এর দাম সমন্বয় করেছে সরকার। এর অভিঘাতে পণ্যমূল্য আরও বাড়ায় সীমিত ও নির্ধারিত আয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।

মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ যে কষ্টে আছে, তার প্রতিফলন উঠে এসেছে সরকারপ্রধানের বক্তব্যেও।

মঙ্গলবার একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট হচ্ছে। কীভাবে মূলস্ফীতি প্রশমন করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কৌশল খুঁজতে হবে।’

বাংলাদেশের পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, জুলাই মাস শেষে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। গ্রামে এই হার শহরের তুলনায় বেশি।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, দেশে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি আরও বেশি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি ও সানেম দাবি করেছে দেশে মূল্যস্ফীতির হার বিদ্যমান হারের চেয়ে দ্বিগুণ। শুধু বাংলাদেশেই নয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বেই মূল্যস্ফীতির সূচক উর্ধ্বমুখী।

বৈশ্বিক সংকটের কারণে বর্তমানে দেশে ডলারের তীব্র সংকট চলছে। এক ডলার কিনতে এখন খরচ করতে হচ্ছে একশ টাকার ওপরে। অর্থাৎ স্থানীয় টাকার মান কমছে আর ডলার রকেট গতিতে ছুটছে। ডলার নিয়ে এমন সংকট আগে কখনই দেখা যায়নি দেশে। ফলে ডলারের সঙ্গে টাকার বিনিময় হারে অস্থিরতা চলছে।

বিনিময় হার বাজারের উপরে ছেড়ে দেয়ার পরামর্শ দিয়ে অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে হলে বিনিময় হার স্থিতিশীল করা আবশ্যক।

বর্তমান পরিস্থিতিতে সংকট মোকাবিলায় প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ প্রায় সব দেশেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ‘নীতি সুদ’ হার বাড়িয়ে মুদ্রা সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক চুপ করে বসে আছে কেন, এ প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, মূল্যস্ফীতি সহনীয় করার আরেকটি উপায় হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘নীতি সুদ’ হার বাড়ানো।

বেসরকারি বিনিয়োগে খরার কারণে ব্যাংক খাতে বিপুল পরিমাণ উদ্বৃত্ত তারল্য রয়েছে। ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ বেঁধে দেয়ার পরও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। অর্থনীতিবিদরা জানান, সরকার যে উদ্দেশ্যে ব্যাংক খাতে ঋণ ও আমানতের সুদ হার ৯/৬ বেঁধে দিয়েছে, তা সফল হয়নি। তাই ঋণের সুদ হার ‘বাজার ভিত্তিক’ করার পরামর্শ দেন তারা।

যোগাযোগ করা হলে তত্ত্বাবাধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা খুব সহজ নয়। এখন যে মূল্যস্ফীতি হচ্ছে, তা বৈশ্বিক কারণে। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববাজারে কিছু স্বস্তির আভাস। জ্বালানি তেলের দাম কমছে। খাদ্যশস্যের দামও কমতে শুরু করেছে। এ ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে আশা করা হচ্ছে আগামী দুই মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে।’

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক কর্মকর্তা ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পিআরআই-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সুদহার বাড়ালে টাকা আরও দামি হবে। তখন ডলারের চাহিদা কমে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভারতসহ প্রায় সব দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদ হার বাড়িয়ে বাজার থেকে মুদ্রা তুলে নিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে হবে।’

খ্যাতনামা এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, ব্যয়ের ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধনে সরকার যে সব পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো ঠিকই আছে। সিদ্ধান্তগুলো ঠিকমতো বাস্তবায়ন হচ্ছে কি-না সে বিষয়ে নিয়মিত তদারকি করতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর