বাংলাদেশের শেয়ারবাজার বিশ্বমানের ডিজিটালাইজ করতে ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন পাওয়া গেছে। আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে দেশের শেয়ারবাজারের চেহারা পাল্টে যাবে। ওই সময় পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে ২৪ ঘণ্টাই লেনদেন করা যাবে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম এসব কথা বলেছেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশের শেয়ারবাজারকে বিশ্বমানের ডিজিটালাইজ করতে এ বছরের শেষের দিকে বা আগামী বছরের শুরুর দিকে সুইস ও ইউরোপিয়ান কনসালট্যান্টদের সহায়তায় কাজ শুরু হবে। এতে করে আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে দেশের শেয়ারবাজারের চেহারা পাল্টে যাবে।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ২০২১-২২ অর্থবছরে শীর্ষ ব্রোকারদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। এতে সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেয়ার পর সিএসই পর্ষদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম যে ডিএসইর সঙ্গে লেনদেনের এতো পার্থক্য কেন। যেখানে (চট্টগ্রাম) এতো ব্যবসা-বাণিজ্য হয়, সেখানে তো এতো কম লেনদেন হওয়ার কথা না। আমি তাদেরকে লেনদেন বাড়াতে হবে বলে জানিয়েছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আজ যারা পুরস্কৃত হলেন তাদেরকে অভিনন্দন। এই পুরস্কারের ব্যবস্থা যেখানে আছে, সেখানে প্রতিযোগিতা আছে। আর প্রতিযোগিতা যেখানে থাকে সেখানে উন্নয়ন হবেই। যেখানে প্রতিযোগিতা নেই সেখানে কখনো ভালো বাজার হয় না।
‘আজ সিএসই যাদেরকে পুরস্কৃত করে উৎসাহিত করল তারা আগামীতে আরও ভালো করতে চাইবেন এবং অবস্থা ধরে রাখতে চাইবেন। অন্যদিকে যারা পাননি, তারা আগামীতে পাওয়ার চেষ্টা করবেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর ক্যাপিটাল মার্কেটের প্রতি যত্নবান উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘উনি দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের মধ্যেই শেয়ারবাজারের ১০ বছরের বিনিয়োগ সীমার সমস্যা সমাধান করে দিয়েছেন। ক্যাপিটাল মার্কেট ও মানি মার্কেট একসঙ্গে কাজ না করলে দেশের অর্থনীতির মূল লক্ষ্য যে পূরণ হবে না সেটা উনি বুঝতে পেরেছেন।’
চট্টগ্রামে আসার আগে গভর্নরের সঙ্গে আলাপ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ সীমা থেকে বন্ডকে বাদ দিতে হবে। আপনি ইক্যুইটি মার্কেটে একটি কোম্পানিকে ২০ কোটি, ৫০ কোটি বা ১০০ কোটি টাকা দিতে পারবেন। কিন্তু একটি ভালো টাইলস, টেক্সটাইল, সিমেন্ট ফ্যাক্টরি করতে গেলে ৫০০ কোটি থেকে এক হাজার কোটি টাকা দরকার হয়।
‘ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এটা করলে কয়েকটি কিস্তি দিতে না পারলেই উভয় প্রতিষ্ঠান বিপদে পড়বে। এ সমস্যা কাটিয়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন বন্ডের মাধ্যমে করার বিষয়ে গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এখন বন্ড কিনতে গেলে আবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগ সীমার সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এজন্য যেসব বন্ড গ্যারান্টেড ও অ্যাসেট ব্যাকড থাকবে, সেগুলো বিনিয়োগ সীমার বাইরে নেয়া হবে। যেসব ঝুঁকিপূর্ণ বন্ড আছে, সেগুলো হয়তো বিনিয়োগ সীমার মধ্যে থাকবে।’
গত কমিশন সভায় অল্টারনেটিভ ট্রেডিং বোর্ড (এটিবি) রুলস পাস করা হয়েছে উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখানে সরকারি ট্রেজারি বন্ডগুলো লেনদেন হবে। সে সুবাদে বাজারে ৫০ বা ৫৮ বিলিয়ন ডলার যোগ হবে। সুতরাং আজ যারা জিডিপির তুলনায় বাজার মূলধন ১৫ বা ১৮ শতাংশ বলেন, সেটা চলতি মাসেই চলে যাবে ২০-৩০ শতাংশে।’