পুঁজিবাজারে এক সপ্তাহ টানা দরপতনের পর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিটি শেয়ারে যে সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয়েছে, সেটি আপাতত তুলে নেয়ার কোনো চিন্তা নেই। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস অব্যাহত থাকবে।
বিভিন্ন ফোরামে কমিশনের ফ্লোর প্রাইস নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে জানতে পারার পর বৃহস্পতিবার বিএসইসির অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজে এ সংক্রান্ত পোস্ট দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় গত ২৮ জুলাই ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে। যা ৩১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়ে বর্তমানেও রয়েছে।’
এতে বলা হয়, ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে নেয়া হবে বলে নানা মহল থেকে গুজব ছড়ানো হচ্ছে যা কমিশন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
কমিশন গুজব সৃষ্টিকারীদের শনাক্ত করছে এবং অতি দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানানো হয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার পর পুঁজিবাজারে ধস ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস দেয়া হয়। পরে বাজার ঊর্ধ্বগতিতে ফিরলে ধাপে ধাপে তা তুলে দেয়া হয়।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রুশ হামলার পর বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিতে টালমাটাল পরিস্থিতিতে দেশের পুঁজিবাজারে যে ধস নামে, সেটি ঠেকাতে গত ২৮ জুলাই দ্বিতীয় বার দেয়া হয় ফ্লোর প্রাইস।
৩১ জুলাই থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। একই সপ্তাহে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও একটি সুখবর আসে। ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা ক্রয়মূল্যে গণনা হবে বলে সার্কুলার দিয়ে জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক। গত এক যুগ ধরে এই দাবি জানিয়ে আসছিল বিএসইসি।
এর ফলে শেয়ার কেনার পর সেটির দর বেড়ে গিয়ে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা অতিক্রম করার কোনো ঝুঁকি রইল না।
এই দুটি খবরে গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ৩৩১ পয়েন্ট সূচকের উত্থান এবং লেনদেন বেড়ে আড়াই গুণ হয়ে গেলেও চলতি সপ্তাহে পুরো বিপরীত চিত্র। প্রতিদিন লেনদেন আগের দিনের চেয়ে কমতে কমতে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসের তুলনায় শেষ কর্মদিবসে হয়েছে অর্ধেক। আর চার দিনে সূচকে কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। ফ্লোর প্রাইস থেকে বেড়ে গিয়ে যে শেয়ারগুলো ঊর্ধ্বগামি ছিল, সেগুলোর পর আবার ফ্লোরে ফিরছে।