বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ফ্লোর প্রাইসে প্রথম ‘বড় পতন’

  •    
  • ৮ আগস্ট, ২০২২ ১৫:১৫

আমাদের বাজারে দেখা যায় ১ থেকে ২ টাকা বাড়লেই শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা গ্রহণের প্রবণতা রয়েছে। সেখানে কয়েকদিনের বৃদ্ধিতে আজ প্রফিট টেকিং খুবই স্বাভাবিক: আহমেদ রশীদ লালী

পুঁজিবাজারে প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিম্ন দর বা ফ্লোর প্রাইস কার্যকরের পর প্রথমবারের মতো বড় দরপতন দেখল পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির চাপ বাজার সামলে নিতে পারলেও দ্বিতীয় কর্মদিবসে তা পারল না।

বেশি সংখ্যক সিকিউরিটিজের দরপতনের কারণে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক কমেছে ৪৫ পয়েন্ট।

টানা পতনরোধে গত ৩১ জুলাই থেকে ফ্লোর প্রাইস কার্যকর করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। এ ছাড়াও দীর্ঘ দিনের অমীমাংসিত ইস্যু ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা বা এক্সপোজার লিমিট ক্রয়মূল্যে গণনা নিয়ে এক যুগের দাবিও পূরণ হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জনিয়েছে, এই বিনিয়োগসীমা গণনা করা হবে শেয়ারের ক্রয়মূল্যে।

এই দুই সুখবরে দারুণ এক সপ্তাহ পার করা পুঁজিবাজারে নতুন ইস্যু জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি। গত শুক্রবার ডিজেল লিটারে ৩৪ টাকা আর পেট্রল ৪৪ ও অকটেন ৪৬ টাকা বাড়ানোর পর অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

উৎকণ্ঠার মধ্যে রোববার পুঁজিবাজারে দিনভর উঠানামার পর ৮ পয়েন্টের দরপতন কিছুটা স্বস্তিই দেয়। লেনদেন টানা চার কর্মদিবসে এক হাজার কোটি টাকার বেশি থাকাটাও ছিল স্বস্তির আরেক কারণ।

ভাবা হয়েছিল তেল ইস্যুতে পুঁজিবাজারে হয়ত তেমন প্রভাব পড়বে না। তবে তা ভুল প্রমাণ হয় পরদিনই।

সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত সূচক অনেকটাই বেড়ে লেনদেন হলেও এর পরের সাড়ে তিন ঘণ্টায় পড়ে যায়। এর মধ্যে শেষ ৩৫ মিনিটের পতন ছিল বেশি। এই সময়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইতে সাধারণ সূচকের পতন হয় ২৭ পয়েন্ট।

আগের সপ্তাহে ৩৩১ পয়েন্ট সূচক বাড়ার পর চলতি সপ্তাহের দুই দিনে কমল ৫৩ পয়েন্ট।

সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে অনেকটাই। আগের দিন এক হাজার ১১৭ কোটি ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকার শেয়ার হাতবদল হলেও সেটি কমে হয়েছে ১ হাজার ৮৩ কোটি ৪৬ লাখ ৭ হাজার টাকা।

গত ২ আগস্ট লেনদেন হাজার কোটি টাকার ঘর ছাড়ানোর পর এটিই সর্বনিম্ন লেনদেন।

সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেনের চিত্র

লেনদেন হওয়া কোম্পানির শেয়ারের যতগুলোর দাম বেড়েছে, কমেছে তার দ্বিগুণের বেশি।

১০৩টির দাম বাড়ার বিপরীতে কমেছে ২১১টির। আগের দামেই লেনদেন হয়েছে ৬৬টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের।

রোববার পুঁজিবাজারের পতনকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি নয় বরং স্বাভাবিক দর সংশোধন হিসেবে দেখছেন ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সাবেক সভাপতি আহমেদ রশীদ লালী।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘টানা কয়েক দিন বাজার ঊর্ধ্বমুখী ছিল। যার কারণে আজ কিছুটা প্রফিট টেকিং হয়েছে। ফলে সূচক কমেছে, লেনদেন কিন্তু হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।’

তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের বাজারে দেখা যায় ১ থেকে ২ টাকা বাড়লেই শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা গ্রহণের প্রবণতা রয়েছে। সেখানে কয়েকদিনের বৃদ্ধিতে আজ প্রফিট টেকিং খুবই স্বাভাবিক।’

দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ৯ দশমিক ৭৮ শতাংশ দর বেড়েছে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের। ২৮ জুলাই থেকে দরবৃদ্ধি শুরু হয়। মাঝখানে এক দিন কমলেও পর পর দুই দিন উত্থানের মধ্য দিয়ে সোমবার সর্বশেষ শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৪ টাকা ৯০ পয়সায়।

এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ দর বৃদ্ধির তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ২৮ জুলাইয়ে ২৪ টাকা ৩০ পয়সায় প্রতিটি শেয়ার লেনদেনের পর থেকেই দর বাড়ছে।

সোমবার ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ বেড়ে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৯ টাকা ২০ পয়সায়।

নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিডি থাই ফুড দর বৃদ্ধির তৃতীয় স্থানে রয়েছে। কোম্পানির দর বাড়ছে ২৮ জুলাই থেকেই। ওই দিন শেয়ারের দাম ছিল ৩৪ টাকা ৫০ পয়সা।

আজ ৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেড়ে প্রতিটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪১ টাকা ১০ পয়সায়।

এ ছাড়া শীর্ষে দশে জায়গা করে নিয়েছে গোল্ডেন সান লিমিটেড, সি পার্ল বিচ, শাশা ডেনিমস, হা-ওয়েল টেক্সটাইল, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, তৌফিকা ফুডস অ্যান্ড লাভেলো আইসক্রিম ও একমি পেস্টিসাইডস।

দর পতনের শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি দর কমেছে অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের। ৬ দশমিক ৮৬ শতাংশ দর কমে সর্বশেষ শেয়ারটি লেনদেন হয়েছে ১৩২ টাকা ৯০ পয়সায়।

৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ দর কমেছে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফাস ফাইন্যান্সের। ১৯ জুলাই থেকে দর বাড়ছে কোম্পানিটির। ওই দিন ৫ টাকায় লেনদেন হওয়া প্রতিটি শেয়ার সোমবার সর্বশেষ হাতবদল হয়েছে ৬ টাকা ৩০ পয়সা। রোববার ছিল ৬ টাকা ৭০ পয়সায়।

দর পতনের তৃতীয় স্থানে থাকা আরেক লোকসানি কোম্পানি ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ারও সর্বশেষ ৬ টাকা ৩০ পয়সায় লেনদেন হয়েছে। আগের দিনের চেয়ে দর কমেছে ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ।

২০ জুলাই ৫ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হওয়ার পর ধারাবাহিকভাবে দর বৃদ্ধির পরে দুই কর্মদিবস দর কমল।

এ ছাড়া তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে থাকা ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, ইসলামিক ফাইন্যান্স, রিজেন্ট টেক্সটাইল, লোকসানি ইউনিয়ন ক্যাপিটাল ও সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।

সূচক কমাল যারা

সবচেয়ে বেশি ৬ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট সূচক কমেছে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দরপতনে। কোম্পানিটির দর কমেছে ১ দশমিক ৩ শতাংশ।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ৩৫ পয়েন্ট কমিয়েছে বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানির শেয়ারের দাম কমেছে ২ দশমিক ৩১ শতাংশ।

অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজের দর ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমার কারণে সূচক কমেছে ৩ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট।

এ ছাড়া আইসিবি, বেক্সিমকো ফার্মা, ওয়ালটন হাইটেক, স্কয়ার ফার্মা, গ্রামীণফোন, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের দরপতনে সূচক কমেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২৮ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট।

সূচক বাড়াল যারা

সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ০৫ পয়েন্ট সূচক বাড়িয়েছে বেক্সিমকো গ্রিন সুকুক বন্ড। বন্ডটির দর ২ দশমিক ৩ শতাংশ দর বেড়েছে।

সি পার্ল বিচের দর ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ বাড়ায় সূচক বেড়েছে শূন্য দশমিক ৭ পয়েন্ট।

সোনালী পেপার সূচকে যোগ করেছে শূন্য দশমিক ৫৬ পয়েন্ট। কোম্পানির দর বেড়েছে ১ দশমিক ৫ শতাংশ।

এছাড়া ইবনেসিনা, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল, কপারটেক, বিডি থাই ফুড, একমি পেস্টিসাইডস ও শাশা ডেনিমস সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে।

সব মিলিয়ে এই ১০টি কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৯ পয়েন্ট।

এ বিভাগের আরো খবর