বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সব রেকর্ড ছাড়িয়ে স্বর্ণের ভরি ৮৪ হাজার ৩৩১ টাকা

  •    
  • ৬ আগস্ট, ২০২২ ২২:২৮

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি এবং স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কয়েক দিন পর পর দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ।

অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে দেশের বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণের ভরি ৮৪ হাজার ৩৩১ টাকায় উঠেছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই মূল্যবান এই ধাতুটির দাম এত উচ্চতায় উঠেনি বলে জানিয়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় গত মে মাসে স্বর্ণের ভরি বাড়তে বাড়তে ৮২ হাজার ৪৬৬ টাকায় উঠেছিল। এরপর বিশ্ববাজারে দাম কমায় তা ৭৫ হাজার টাকার নিচে নেমে এসেছিল।

মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে শনিবার ভরিতে ১ হাজার ৯৮৩ টাকা বাড়ানোয় স্বর্ণের দর অতীতের সব দামকে টপকে গেলো।

রোববার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের প্রতি ভরি স্বর্ণ কিনতে লাগবে ৮৪ হাজার ৩৩১ টাকা। শনিবার পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৮২ হাজার ২৪৭ টাকা। দাম বেড়েছে প্রায় দুই হাজার টাকা।

অন্যান্য মানের স্বর্ণের দামও প্রায় একই হারে বাড়ানো হয়েছে। রোববার থেকে নতুন দর কার্য‌কর হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি-বাজুস।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি এবং স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধির কারণে কয়েক দিন পর পর দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ।

নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছুই করার নাই রে ভাই। একদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি মুহূর্তে দাম বাড়ছে। অন্যদিকে আমাদের স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম বেড়েই চলেছে। ডলারের দাম বেশি। সব মিলিয়ে আমরা দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছি।’

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় টানা তিন দফা দাম কমানোর পর গত ২৬ জুলাই প্রতি ভরি সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৩৪১ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। দুই দিনের ব্যবধানে ২৮ জুলাই আরও ২ হাজার ৭৪১ টাকা বাড়ানো হয়। ৩ আগস্ট ভরিতে আরও ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়ানো হয়। সবশেষ শনিবার বাড়ানো হয়েছে ১ হাজার ৯৮৩ টাকা।

সব মিলিয়ে ১১ দিনের ব্যবধানে প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭ হাজার ১১৫ টাকা বাড়ল।

এর আগে ১৭ জুলাই সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমানো হয়েছিল। তার আগে ৬ জুলাই একই পরিমাণ কমানো হয়।

এরপর ২৬ জুলাই থেকে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ছে।

দফায় দফায় স্বর্ণের দাম কেনো বাড়ানো হচ্ছে- জানতে চাইলে এম এ হান্নান আজাদ বলেন, ‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে গোল্ডের দাম সমন্বয় করেছি। যখন দাম বেড়েছে, তখন বাড়িয়েছি। আবার যখন কমেছে, তখন কমিয়েছি। এখন আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে আমাদের স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর বা ১০০ শতাংশ খাটি স্বর্ণ) দামও হু হু করে বাড়ছে। সব কিছু হিসাব নিকাশ করে আমাদের দাম বাড়াতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘তেজাবি স্বর্ণ আমদানি করা হয় না। এটি দেশেই পাওয়া যায়। এই স্বর্ণ একেবারে পিওর বা ১০০ শতাংশ খাঁটি। আমাদের তাঁতীবাজারের ব্যবসায়ীরা সারা দেশ থেকে পুরোনো স্বর্ণ কিনে সেগুলো মেশিনে দিয়ে খাদ বাদ দিয়ে যে স্বর্ণ আলাদা করে, সেটাকেই পিওর বা ১০০ শতাংশ খাঁটি স্বর্ণ বলে। এটাকে আমরা তেজাবি স্বর্ণ বলি।’

‘এই স্বর্ণের দামই গত কয়েক দিনে বেশ বেড়েছে। সে কারণেই আমরা দাম বাড়িয়েছি।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত ৮ মার্চ দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৭৯ হাজার ৩১৫ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। তার চার দিন আগে ৪ মার্চ বাড়ানো হয়েছিল ভরিতে ৩ হাজার ২৬৫ টাকা।

এরপর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমতে শুরু করায় ১৫ মার্চ দেশের বাজারে ভরিতে ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। ২১ মার্চ কমানো হয় ভরিতে আরও ১ হাজার ৫০ টাকা।

কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় ১১ এপ্রিল সবচেয়ে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়িয়ে ৭৮ হাজার ৮৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস।

এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় ২৫ এপ্রিল প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমানো হয়। ১০ মে একই পরিমাণ কমানো হয়েছিল।

দুই দফায় ভরিতে ২ হাজার ৩৩২ টাকা কমানোর পর ১৭ মে ১ হাজার ৭৫০ টাকা বাড়ানো হয়।

চার দিনের ব্যবধানে ২১ মে সেই স্বর্ণের দাম এক ধাক্কায় ভরিতে ৪ হাজার ১৯৯ টাকা বাড়িয়ে দেয় বাজুস। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে স্বর্ণের দাম উঠে যায় ৮২ হাজার ৪৬৬ টাকায়।

বিশ্ববাজারে দাম কমায় ২৬ মে সেই স্বর্ণের দাম ভরিতে ২ হাজার ৯১৬ টাকা কমিয়ে ৭৯ হাজার ৫৪৮ টাকায় নামিয়ে আনা হয়। প্রায় দেড় মাস পর ৬ জুলাই আরও ১ হাজার ১৬৬ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস।

বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর কথা বললেও বাজুসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আন্তর্জাতিক বাজারের কথা কিছু বলা হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শনিবার বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণসংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

‘রোববার থেকে এই নতুন দর কার্য‌কর হবে।’

বিশ্ববাজারে শনিবার রাত সাড়ে ১০টায় প্রতি আউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম, ২.৬৫ ভরি) স্বর্ণের দাম ছিল ১ হাজার ৭৭৪ ডলার ৯৬ সেন্ট। এর আগে ৩ আগস্ট রাতে যখন স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়, তখন প্রতি আউন্সের দাম ছিল ১ হাজার ৭৫৭ ডলার ৭২ সেন্ট।

মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বাড়তে বাড়তে ২ হাজার ৬০ ডলারে উঠেছিল।

১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামে এক ভরি।

রোববার থেকে সবচেয়ে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণ ৮৪ হাজার ৩৩১ টাকায় বিক্রি হবে। শনিবার পর্যন্ত এই মানের স্বর্ণ ৮২ হাজার ৩৪৭ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বেড়েছে প্রায় ২ হাজার টাকা।

২১ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৮৬৬ টাকা বেড়ে ৮০ হাজার ৪৮২ টাকা হয়েছে। এই তিন দিন ৭৮ হাজার ৬১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে এই মানের স্বর্ণ।

১৮ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫৭৫ টাকা বেড়ে হয়েছে ৬৮ হাজার ৯৯৩ টাকা। শনিবার পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৪১৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আর সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা বেড়ে হয়েছে ৫৬ হাজার ৯৭৯ টাকা। এই কয় দিন এই মানের স্বর্ণ ৫৫ হাজার ৬৯৬ টাকা ভরিতে বিক্রি হয়েছে।

রুপার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগের দামেই বিক্রি হবে এই ধাতু।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সকল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত না জানানো পর্যন্ত বাজুসের বেঁধে দেয়া দামে স্বর্ণ বিক্রি করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর