দেশে জ্বালানি তেলের দাম আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। এক লাফে ডিজেল ও কেরোসিনে বাড়ানো হয়েছে লিটারে ৩৪ টাকা। নতুন করে ডিজেল ও কেরোসিন এখন ভোক্তাকে কিনতে হবে ১১৪ টাকা করে।
অন্য দিকে অকটেনে প্রতি লিটারে বাড়ানো হয়েছে ৪৬ টাকা। এখন প্রতি লিটার অকটেন ১৩৫ এবং পেট্রোল ৪৪ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৩০ টাকা লিটার। এই হিসাবে ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ আর অকটেন-পেট্রোলে বেড়েছে ৫১ শতাংশ।
বৈশ্বিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়া এমন সিদ্ধান্তের কথা জানায় সরকার। জ্বালানি তেলের নতুন এই দাম কার্যকর হবে শুক্রবার রাতেই।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এক প্রজ্ঞাপন দিয়ে নতুন দাম কার্যকরের কথা জানায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়।
২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিলের পর গত বছরের ৩ নভেম্বর দেশে জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করে সরকার। সে সময় ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানো হয় লিটারে ১৫ টাকা করে। তখন দাম বেড়ে হয় ৮০ টাকা লিটার।
এক বিজ্ঞপ্তিতে দাম বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানায়, শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে ডিপোর ৪০ কিলোমিটারের ভিতর ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য হবে ডিজেল ও কেরোসিন ১১৪ টাকা লিটার, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোল ১৩০ টাকা লিটার।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা এডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে।
‘২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনর্বিবেচনা করা হবে।’
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পাশের দেশ ভারতে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে। গত ২২ মে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য ছিল লিটার ৯২ দশমিক ৭৬ রুপি এবং পেট্রোল লিটার ১০৬ দশমিক ০৩ রুপি। যা এখনও কার্যকর।
সে হিসাবে বাংলাদেশি টাকায় দেশটিতে এসব জ্বালানির দাম যথাক্রমে ১১৪ দশমিক ০৯ টাকা এবং ১৩০ দশমিক ৪২ টাকা।
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রির ক্ষেত্রে ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে, আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।’