বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গ্যাস অনুসন্ধান ও কয়লাবিদ্যুৎ বাড়ানোর পরামর্শ

  •    
  • ৪ আগস্ট, ২০২২ ২০:৪৮

গত এক যুগে দেশে বিদ্যুৎ খাতে অভাবনীয় উন্নতি হলেও ইউক্রেন যুদ্ধে দেশ আবার এক যুগ আগের লোডশেডিংয়ে ফিরে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির উচ্চমূল্যের কারণে জ্বালানিটি আমদানি করা হবে না- এমন সিদ্ধান্তের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্যের কারণে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখাও এর কারণ।

জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহের সক্ষমতা অর্জনে এখন থেকেই সরকারকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শীর্ষ ব্যবসায়ী-উদ্যোক্তা এবং খাতসংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় জ্বালানি নিয়ে শঙ্কিত হওয়ার নানা বাস্তবতার সামনে চলে এসেছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র সমাধান হলো নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানো।

এ জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় গ্যাস উত্তোলন বাড়াতে যত দ্রুত সম্ভব সাগরে গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করতে বলেছেন তারা। একই সঙ্গে দেশের স্থলভাগে যেসব জায়গায় গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে অনুসন্ধান অব্যাহত রাখার তাগিদ এসেছে।

তেলনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদনের বদলে কম খরচে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন কেউ কেউ। এ জন্য বড়পুকুরিয়াসহ দেশে অন্যান্য খনি থেকে কয়লা উৎপাদন বাড়াতে বলেছেন তারা।

সক্ষমতার আরেক ধাপ উন্নতি ঘটাতে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনেও জোর এবং গ্যাসনির্ভর শিল্প-কারখানাগুলোর বিষয়ে এখন থেকেই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নেয়ার তাগিদ উঠে এসেছে।

'টেকসই উন্নয়নের জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা' বিষয়ে বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক সেমিনারে এমন পরামর্শ উঠে আসে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার্স অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) রাজধানীর মতিঝিলে সংগঠনের কার্যালয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

গত এক যুগে দেশে বিদ্যুৎ খাতে অভাবনীয় উন্নতি হলেও ইউক্রেন যুদ্ধে দেশ আবার এক যুগ আগের লোডশেডিংয়ে ফিরে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এলএনজির উচ্চমূল্যের কারণে জ্বালানিটি আমদানি করা হবে না- এমন সিদ্ধান্তের পাশাপাশি জ্বালানি তেলের উচ্চমূল্যের কারণে ডিজেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ রাখাও এর কারণ।

এই পরিস্থিতিতে জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টি আবার সামনে এসেছে, যেটি কয়েক বছর ধরে আলোচনায় ছিল না।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। প্যানেল আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ভূতত্ত্ববিদ বদরুল ইমাম, বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন- বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, ব্যবসায়ীদের সংগঠন এমসিসিআই সভাপতি সাইফুল ইসলাম, এনার্জিপ্যাকের চেয়ারম্যান রশিদ এবং জ্বালানিবিষয়ক পত্রিকা এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘জ্বালানির ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। বর্তমানে শিল্পের উৎপাদন খরচ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। টিকে থাকা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

‘কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনে যেতে হবে। সারা পৃথিবীতে, বিশেষ করে আমেরিকা ও ভারতে ব্যাপকভাবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। পরিবেশের দোহাই দিয়ে লাভ নেই।’

তিনি বলেন, ‘বাসাবাড়ির মতো শিল্পেও লোডশেডিং হচ্ছে। কিন্তু রপ্তানির সঙ্গে শিল্পকে প্রাধান্য দিতে হবে। উৎপাদন কমে গেলে রপ্তানি কমে যাবে। রপ্তানি কমে গেলে বৈদেশিক মুদ্রায় চাপ পড়বে।’

গ্যাসের মজুত বাড়াতে বাপেক্সকে শক্তিশালী করা, সমুদ্রে গ্যাস আহরণ বাড়ানো, বায়ু ও জলবিদ্যুতে মনোযোগী হওয়ারও তাগিদ দেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

মূল প্রবন্ধে বুয়েট অধ্যাপক ইজাজ হোসেন বলেন, ‘২০১৬-১৭ অর্থবছর থেকে দেশে গ্যাসের উৎপাদন ক্রমাগত কমে আসছে। বর্তমানে গ্যাসের উৎপাদন ২ হাজার ৩০০ এমএমসিএফটি। এটি অভ্যন্তরীণ চাহিদার ৪০ শতাংশ। ২০৩০ সালের মধ্যে যদি চাহিদার অন্তত ৫০ শতাংশ যদি উৎপাদন করা না যায়, তাহলে দেশে জ্বালানি চাহিদা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যাবে।’

তিনি কয়লা উত্তোলন বৃদ্ধি ও সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়ানোর সুপারিশ করেন।

ভূতত্ত্ববিদ বদরুল ইমাম বলেন, ‘আমরা গত ১০ বছরে সাগরের কোনো সুবিধাই কাজে লাগাতে পারিনি। অথচ এই সময়ে মিয়ানমার সাগরের গ্যাস উত্তোলন করে তা অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে উদ্বৃত্ত গ্যাস রপ্তানি করছে।’

দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দেশে সংকট জ্বালানি নিয়ে। বিদ্যুতে সংকট নেই। যত দ্রুত সম্ভব দেশকে লোডশেডিং মুক্ত করতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর