বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অর্থনীতি সচল: শ্লথ ব্যাংকের আয়ের চাকা

  •    
  • ৪ আগস্ট, ২০২২ ০৮:৪১

তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ ব্যাংকের আয় আগের বছরের তুলনায় বাড়লেও প্রবৃদ্ধির হার অনেকটাই কম। আবার দুটি ব্যাংক এই প্রান্তিকে লোকসান দিয়েছে, যেগুলো আগের বছর বেশ খানিকটা মুনাফায় ছিল। সব মিলিয়ে ৩৩টি ব্যাংকের মধ্যে ১৮টির আয় বেড়েছে। ২টির আয় রয়েছে আগের বছরের সমান। আর আয় কমেছে ১৩টি ব্যাংকের।

করোনা নিয়ন্ত্রণে আসার পর অর্থনীতির চাকা সচল হওয়ার পর বেসরকারি ঋণপ্রবাহেও ফিরেছে গতি। সেই সঙ্গে বেড়েছে আমদানি-রপ্তানি, বেড়েছে রেমিট্যান্স-প্রবাহ, ডলার বাণিজ্য থেকেও বেশ ভালো আয় আসার কথা।

তবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো তাদের অর্ধবার্ষিকে আয়ের যে হিসাব দিয়েছে, তাতে ব্যাংকগুলোর ফুলে-ফেঁপে ওঠার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।

গত বছর করোনার বিধিনিষেধের মধ্যেও ব্যাংকগুলো প্রায় প্রতি প্রান্তিকেই আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি ভালো আয় করলেও এবার তাদের প্রবৃদ্ধি কমেছে।

তালিকাভুক্ত বেশির ভাগ ব্যাংকের আয় আগের বছরের তুলনায় বাড়লেও প্রবৃদ্ধির হার অনেকটাই কম। আবার দুটি ব্যাংক এই প্রান্তিকে লোকসান দিয়েছে, যেগুলো আগের বছর বেশ খানিকটা মুনাফায় ছিল।

সব মিলিয়ে ৩৩টি ব্যাংকের মধ্যে ১৮টির আয় বেড়েছে। ২টির আয় রয়েছে আগের বছরের সমান। আর আয় কমেছে ১৩টি ব্যাংকের।

শতাংশের হিসাবে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত আয় কমেছে আইএফআইসি, স্ট্যান্ডার্ড, ওয়ান, ইউনিয়ন, এনআরবিসি ও রূপালী ব্যাংকের।

বছরের পর বছর ধরে লোকসানে থাকা আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক তার বৃত্ত ভেঙে বের হয়ে এসেছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামিক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও যমুনা ব্যাংক আকর্ষণীয় প্রবৃদ্ধি করেছে। তবে বাকিগুলোর প্রবৃদ্ধি খুব একটা বেশি নয়।

সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মাসরুর আরেফিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ব্যাংকের মুনাফার হার সামান্য কমার কারণ হিসেবে তিনটি বিষয় উল্লেখ করা যায়। ১. ভবিষ্যতে কী হতে যাচ্ছে এই অনিশ্চয়তার কথা মাথায় রেখে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন ধরে রাখার প্রবণতা রয়েছে। ২. ডিপোজিট কস্ট বেড়ে গেছে, সেটাও আয় কমার একটা কারণ। ৩. আর ব্যাংকগুলোর সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন- ব্রোকারেজ হাউস, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো হয়তো আয় করতে পারেনি ভালো। যার কারণে ব্যাংকের সমন্বিত আয় কমেছে। তারপরও খুব বেশি কমেছে বলে মনে হয় না। প্রায় ২০টির মতো ব্যাংক ভালো আয়ে রয়েছে সম্ভবত।’

আমানতের সুদ ও ঋণের সুদহারের মধ্যে পার্থক্য বা মার্জিন কমা ব্যাংকের আয় কমার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন। তিনি ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং সিইও।

তিনি বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে আমাদের যে নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন সেটা অনেক কমে গেছে। ব্যাংকিং খাতের বড় আয় যেখান থেকে, ব্যাংক ইন্টারেস্ট মার্জিন, সেটা অনেক কমে গেছে বেশির ভাগ ব্যাংকের। এটাই প্রধান কারণ। আরেকটা কারণ হতে পারে, তা হলো অনেক ব্যাংকের ব্যাক ডেট প্রভিশন বেড়েছে।‘

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ মনে করেন, প্রবৃদ্ধি ভালো না হলেও ব্যাংক খাতের যে আয়, সেটি অন্য খাতের তুলনায় ভালো।

তিনি বলেন, ‘এই প্রান্তিকে খুব বেশি ভালো হয়তো করেনি। তবে গত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি ব্যাংকগুলো ভালো মুনাফা করে। লভ্যাংশও দেয় ভালো । কিন্তু এগুলোর দাম কম।’

তিনি বলেন, ‘হাতে গোনা কয়েকটা ব্যাংক ছাড়া বেশির ভাগ ব্যাংকই প্রতি বছর ভালো মুনাফা করছে। অনেক টাকা আয় করে বলেই কর্মীদের ভালো বেতন দেয়। তারপরও যদি ব্যাংক ওই তুলনায় অল্প ‍মুনাফাও করে এবং বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয় সেটাও অন্য অনেক শেয়ারের চেয়ে ভালো।’

অর্ধবার্ষিকে শেয়ার প্রতি সবচেয়ে বেশি ৩ টাকা ৫৮ পয়সা আয় করেছে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩ টাকা ৪ পয়সা আয় করেছে যমুনা ব্যাংক।

তৃতীয় স্থানে থাকা শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ২ টাকা ৩৯ পয়সা, চতুর্থ স্থানে থাকা পূবালী ব্যাংক ২ টাকা ৩৬ পয়সা, পঞ্চম স্থানে থাকা উত্তরা ব্যাংক ২ টাকা ২৮ পয়সা, ষষ্ঠ স্থানে থাকা ট্রাস্ট ব্যাংক ২ টাকা ২২ পয়সা এবং সপ্তম স্থানে থাকা ইস্টার্ন ব্যাংক শেয়ারপ্রতি ২ টাকা ২১ পয়সা আয় করেছে।

এ ছাড়া শেয়ারপ্রতি দেড় টাকার বেশি আয় করেছে প্রাইম, ইসলামী, প্রিমিয়ার ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক।

ব্র্যাক ও ঢাকা ব্যাংকের আয় শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৩০ পয়সা থেকে দেড় টাকার ভেতরে।

শেয়ারপ্রতি ১ টাকার বেশি আয় করেছে ঢাকা এক্সিম এবং আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকও। অর্ধবার্ষিকে বাকি সব ব্যাংকের আয় শেয়ারপ্রতি ১ টাকার কম।

অন্যদিকে একমাত্র ব্যাংক হিসেবে লোকসানে আছে এনবিএল। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ব্যাংকটির পাশাপাশি লোকসান করেছে এনআরবিসি।

সবচেয়ে ভালো করেছে যারা

এই তালিকায় তুলনামূলক হিসাবে নিঃসন্দেহে সবার চেয়ে এগিয়ে আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক। ওরিয়েন্টাল ব্যাংক থাকাকালে ঋণ কেলেঙ্কারিতে ডুবে যাওয়ার পর প্রথমবারের মতো অর্ধবার্ষিক হিসাব ইতিবাচক দেখা গেছে।

এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১৫ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে লোকসান ছিল ১৭ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ পয়সা, আগের বছর একই সময়ে প্রতি শেয়ারের বিপরীতে লোকসান ছিল ৩২ পয়সা।

এই হিসাবে অর্ধবার্ষিকীতে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় বেড়েছে ৩৪ পয়সা।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক

এই ব্যাংকটির আয়ও ‍দুই প্রান্তিকেই বেড়েছে।

এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩৪ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ২০ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৮৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৯ পয়সা।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৭৭ শতাংশ।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক

কয়েক বছর চাপে থাকলেও চলতি বছর ব্যাংকটি চাপ থেকে বেরিয়ে আসার আভাস দিচ্ছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৭৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৯ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯৬ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক

এই ব্যাংকটি আয়ে চমক দেখিয়েছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৪৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৩৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৬৪ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৪৫ দশমিক ৭৩ শতাংশ।

উত্তরা ব্যাংক

এই ব্যাংকটিও দারুণ সময় কাটাচ্ছে।

চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯২ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৫৭ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৪৫ দশমিক ২২ শতাংশ।

এবি ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২৪ পয়সা যা গত বছর একই সময় ছিল ১৬ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৪২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৩১ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ।

পূবালী ব্যাংক

আয়ের প্রবৃদ্ধিতে দুই বছর ধরেই চমক দেখাচ্ছে এই ব্যাংকটি।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ১৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮২ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৩৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৮০ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩১ দশমিক ১১ শতাংশ।

এক্সিম ব্যাংক

এই ব্যাংকটির আয় দুই প্রান্তিকেই বেড়েছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৮৯ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ৮২ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ১৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮৭ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩১ দশমিক ০৩ শতাংশ।

যমুনা ব্যাংক

এই ব্যাংকটির আয়ও দুই প্রান্তিকেই বেড়েছে।

এর মধ্যে এপ্রিলে থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৩২ পয়সা আয় হয়েছে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৬৪ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ২৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

ঢাকা ব্যাংক

এই ব্যাংকটির আয় দুই প্রান্তিকেই আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে। এর মধ্যে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে আয় হয়েছে ৫৭ পয়সা করে, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৮ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ১৩ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ০৪ শতাংশ।

ব্যাংক এশিয়া

এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে এই ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৯৪ পয়সা, যা গত বছর একই সময় ছিল ৭০ পয়সা।

দ্বিতীয় প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় ২ টাকা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৭৫ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ।

মার্কেন্টাইল ব্যাংক

এই ব্যাংকটি কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে আয় বাড়িয়ে চলছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৩২ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৯৬ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ২৬ শতাংশ।

ডাচ্-বাংলা ব্যাংক

এই ব্যাংকটির আয়ও দুই প্রান্তিকেই বেড়েছে।

এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৯৭ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৯৫ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ৫৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩ টাকা ২৫ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ।

প্রিমিয়ার ব্যাংক

ব্যাংকটি তার আয় বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে, যদিও চলতি বছর প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কম।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৯৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯৩ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪৪ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ।

সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় সামান্য কমলেও ছয় মাসের সমন্বিত আয় বেড়েছে ব্যাংকটির।

চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৬ পয়সা।

তবে দুই প্রান্তিক মিলিয়ে অর্থাৎ বছরের প্রথম ছয় মাসের আয় আগের বছরের তুলনায় ১ পয়সা বেড়েছে। ছয় মাসের সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৩২ পয়সা, গত বছরের একই সময়ে ছিল ৩১ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ২২ শতাংশ।

ইসলামী ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে কিছুটা কমলেও প্রথম প্রান্তিকে কিছুটা বাড়ার সুবাদে অর্ধবার্ষিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি আয় করেছে ব্যাংকটি।

এর মধ্যে জুনে সমাপ্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৫৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৬১ পয়সা।

এই প্রান্তিকে প্রতি শেয়ারে ৩ পয়সা কমলেও দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৮ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ০ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

ট্রাস্ট ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে ভাটা পড়লেও দুই প্রান্তিক মিলিয়ে আয় কিছুটা বাড়াতে পেরেছে এই ব্যাংকটি।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ২৮ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ২০ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধিও ইসলামীর মতো ০ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৬৮ পয়সা, যা গত বছর একই সময় ছিল ৯০ পয়সা।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে কমলেও প্রথম প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধির কারণে ছয় মাসে আয় কিছুটা বেড়েছে। এই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ১৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ টাকা ১৬ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে ব্যাংকটির আয়ের প্রবৃদ্ধি ০ দশমিক ৮৬ শতাংশ।

সবচেয়ে খারাপ করেছে যারা

এই তালিকায় সবার ওপরে প্রথম প্রজন্মের বেসরকারি ব্যাংক এনবিএল।

এক দশক আগেও দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যাংকটির একটির এখন করুণ দশা। প্রথম প্রান্তিকে হতাশার পর দ্বিতীয় প্রান্তিকে হতাশা আরও বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৩৬ পয়সা। গত বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ১৬ পয়সা।

প্রথম প্রান্তিকে লোকসান ছিল এর অর্ধেক, শেয়ারপ্রতি ১৮ পয়সা।

অর্থাৎ দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৫৪ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এই আয় ছিল ২৮ পয়সা।

অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় শেয়ারপ্রতি ৮২ পয়সা আয় কমেছে ব্যাংকটির।

আইএফআইসি ব্যাংক

এই ব্যাংকের দুই প্রান্তিকেই আয় কমেছে।

এর মধ্যে এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪৫ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে অর্ধবার্ষিকে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৫২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮৭ পয়সা।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৪০ দশমিক ২২ শতাংশ।

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক

গত কয়েক বছর ধরে চাপে থাকা এই ব্যাংকটির আয়ে এবারও ভাটা পড়েছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ২ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২৩ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৩৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

ওয়ান ব্যাংক

গত বছর আয় কমার ধারাবাহিকতা চলতি বছরও দেখা যাচ্ছে এই ব্যাংকটির ক্ষেত্রে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৫৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬৭ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৯৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৪৬ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৩২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

ইউনিয়ন ব্যাংক

এই ব্যাংকটির আয় দুই প্রান্তিকেই কমেছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৪৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬২ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৮৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ১২ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ২৯ দশমিক ০৩ শতাংশ।

এনআরবিসি

দ্বিতীয় প্রান্তিকে লোকসান দেয়া দ্বিতীয় ব্যাংক এটি। এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে শেয়ারপ্রতি সাড়ে ৬ পয়সা লোকসান হয়েছে।

ফলে প্রথম প্রান্তিক শেষে আয় যতটা ছিল, ছয় মাস শেষের হিসাব থেকে কমে গেছে সেখান থেকে।

জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৭৬ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে এই আয় ছিল শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৩ পয়সা।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ২৬ দশমিক ২১ শতাংশ।

রূপালী ব্যাংক

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকটি হতাশ করেই চলেছে। এই ব্যাংকটির আয় চলতি বছর শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি কমেছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২২ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৯ পয়সা।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ২৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ।

ব্র্যাক ব্যাংক

এই ব্যাংকটির আয় দুই প্রান্তিকেই কমেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৭০ পয়সা, যা গত বছর একই সময় ছিল ৯০ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে সমন্বিত আয় হয়েছে শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ৪৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৭২ পয়সা।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ১৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

প্রাইম ব্যাংক

দারুণ দ্বিতীয় প্রান্তিক কাটিয়েও প্রথম প্রান্তিকের কারণে ব্যাংকটির আয় আগের বছরের তুলনায় কমেছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় ৭২ পয়সা। গত বছর একই সময়ে সমন্বিত ইপিএস হয়েছিল ৪২ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৬১ পয়সা। গত বছরও প্রথম দুই প্রান্তিকে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস ১ টাকা ৭৯ পয়সা ছিল।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ১০ দশমিক ০৫ শতাংশ।

এসআইবিএল

এই ব্যাংকটি দ্বিতীয় প্রান্তিকে বেশ ভালো করলেও প্রথম প্রান্তিকে আয়ে ভাটার কারণে অর্ধবার্ষিকে আয় কমেছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৩৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২১ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৪৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৫৩ পয়সা।

অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

সিটি ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাড়লেও প্রথম প্রান্তিকে কমে যাওয়ার কারণে ব্যাংকটির আয় কিছুটা কমেছে।

এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ২১ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ১৯ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ।

ইউসিবি

এই ব্যাংকটির আয় দ্বিতীয় প্রান্তিকে বাড়লেও অর্ধবার্ষিকে কিছুটা কমেছে।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৬৮ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৬০ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ৯৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৯৮ পয়সা।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ।

ইবিএল

প্রথম প্রান্তিকে বাড়লেও দ্বিতীয় প্রান্তিকে কম হওয়ায় এই ব্যাংকটির আয় কিছুটা কমেছে।

এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা, যা আগের বছর ছিল ১ টাকা ৩১ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২১ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ২ টাকা ২৮ পয়সা।

অর্থাৎ অর্ধবার্ষিকে এই ব্যাংকটির আয় কমেছে ৩ দশমিক ০৭ শতাংশ।

সমান আয় দুই ব্যাংকের

সাউথইস্ট ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ব্যাংকটির আয়েও ভাটা পড়েছে। তবে প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির সুবাদে আয় কমেনি।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ২৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ১ টাকা ৩৪ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ৫৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল সমান।

এনসিসি ব্যাংক

দ্বিতীয় প্রান্তিকে কিছুটা কমলেও দুই প্রান্তিক মিলিয়ে সমান আয় করেছে এই ব্যাংকটি।

দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারের বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে ৭৪ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৮২ পয়সা।

দুই প্রান্তিক মিলিয়ে শেয়ারপ্রতি আয় দাঁড়িয়েছে ১ টাকা ৩৩ পয়সা, যা আগের বছরও ছিল একই পরিমাণ।

এ বিভাগের আরো খবর