পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে চারটি উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন-বিএমবিএ। বাজার যখন ক্রমে নিচে নামছিল, সে সময় যারা শেয়ার বিক্রি করে বিও হিসাব খালি করে ফেলেছিল, তাদেরকে আবার শেয়ার কেনায় উৎসাহ দেবে তারা। ব্যক্তির পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগও নেয়া হবে।
পুঁজিবাজার পতন ঠেকাতে ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ার পর সূচক ও লেনদেনে ঊর্ধ্বগতির মধ্যে মঙ্গলবার বিকেলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সঙ্গে বিএমবিএর বৈঠকে এসব কথা জানানো হয়।
বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে আগের দিন বিএসইসি বৈঠক করে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মোর্চা বিপিএলসির সঙ্গে। সেখানে বিএসইসি কমিশনার জানান, বিপিএলসির সদস্যরা ঘোষণা দিয়ে নিজ কোম্পানির শেয়ার কিনলে তাদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হবে।
বিএমবিএর সঙ্গে বৈঠক শেষে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে চারটি সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এগুলো পুঁজিবাজারে তারল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজারকে গতিশীল করবে বলে বিশ্বাস করে দুই পক্ষ।
বিএমবিএ প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতি সায়েদুর রহমান ও অন্যরা বৈঠকে অংশ নেন।
বিএসইসির পক্ষে ছিলেন কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমদ, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম এবং এমএসআই বিভাগের কমকর্তারা। সভায় বর্তমান বাজার পরিস্থিতি ও বাজার মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকার ওপর আলোচনা করা হয়। উঠে আসে পুঁজিবাজারে তারল্য বৃদ্ধি, বিনিয়োগকারীদের আস্থা তৈরি ও অন্যান্য বিষয়।
যে চার সিদ্ধান্ত
১. বিগত সময়ে শেয়ার বিক্রির ফলে অনেক বিনিয়োগকারীর হিসাবে অলস তহবিল পড়ে আছে, যারা বর্তমানে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। সেসব বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে পুঁজিবাজারে আবার বিনিয়োগের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
২. মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর গ্রাহক সংখ্যা অনেক বড়। তাদের মধ্যে অনেক অনেক নিষ্ক্রিয় হিসাব আছে যাদের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ এবং উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে মার্চেন্ট ব্যাংক ও পোর্টফোলিও ম্যানেজারের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
৩. বিগত সময়ে কিছু সংখ্যক মার্চেন্ট ব্যাংক ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার নিজস্ব পোর্টফোলিও হিসাব থেকে কিছুটা বিক্রয় চাপ ছিল। ফলে তাদের হিসাবে বর্তমানে কিছুটা বিনিয়োগযোগ্য তহবিল রয়েছে। এ থেকে প্রত্যেক মার্চেন্ট ব্যাংকারদের নিজস্ব পোর্টফোলিওতে অন্ততপক্ষে ১০ শতাংশ নতুন বিনিয়োগ পুঁজিবাজারে আনতে হবে।
৪. পুঁজিবাজারে সাধারণ বিনিয়োগকারীর তুলনায় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যা অনেক কম। এ সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে স্থিতিশীলতা আনয়নে মার্চেন্ট ব্যাংক ও পোর্টফোলিও ম্যানেজাররা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে দায়িত্ব দিতে হবে এবং বিনিয়োগকারীকে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করে বাজারে আনতে হবে। যা বাজারের বিনিয়োগ বাড়াতে এবং একইসঙ্গে বাজারের স্থিতিশীলতা আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।