লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) নতুন দর ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এলপিজির দাম প্রতি কেজিতে কমেছে ৩ টাকা। এ হিসাবে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম কমল ৩৫ টাকা। একইভাবে দাম কমেছে অটোগ্যাসেরও।
আন্তর্জাতিক বাজারে দর কমায় দেশের বাজারেও এই জ্বালানির দাম কমানো হয়েছে। তবে ডলারের উচ্চ মূল্যের কারণে আন্তর্জাতিক বাজারের অনুপাতে দাম কমার পুরো সুফল মিলছে না।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে প্রতি কেজি এলপিজির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০১ টাকা ৬২ পয়সা, যা জুলাই মাসে ছিল ১০৪ টাকা ৫২ পয়সা। এ হিসাবে এখন ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম পড়বে ১ হাজার ২১৯ টাকা, যা জুলাই মাসে ছিল ১ হাজার ২৫৪ টাকা। আর জুন মাসে ছিল ১ হাজার ২৪২ টাকা। মে মাসে ছিল ১ হাজার ৩৩৫ টাকা।
এদিকে আগস্ট মাসের জন্য অটোগ্যাসের দাম লিটারপ্রতি ৫৬ টাকা ৮৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে কমিশন, যা জুলাই মাসে ছিল ৫৮ টাকা ৪৬ পয়সা।
মঙ্গলবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে সংবাদ সম্মেলন করে এলপিজি ও অটোগ্যাসের নতুন দর ঘোষণা করেন বিইআরসি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল। এ সময় কমিশনের সদস্য মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী, মোহাম্মদ আবু ফারুক, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, কামরুজ্জামান ও সচিব খলিলুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে জুলাইয়ে বেসরকারি পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর-মূসকসহ প্রতি কেজি এলপি গ্যাসের দাম ১০৪ টাকা ৫২ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। আর ১২ কেজি সিলিন্ডারের এলপিজির মূসকসহ সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য দাঁড়ায় ১ হাজার ২৫৪ টাকা।
অন্যদিকে অটো-গ্যাসের দাম জুলাই থেকে কমেছে মূসকসহ প্রতি লিটারে ১৫ পয়সা।
টানা কয়েক মাস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর মে মাস থেকে কমতে থাকে এলপি গ্যাসের দাম। ওই মাসে এলপি গ্যাসের দর ছিল (১২ কেজি) ১ হাজার ৩৩৫ টাকা এবং অটোগ্যাস প্রতি লিটার ৬২ টাকা ২১ পয়সা।
ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক অভিযান শুরুর প্রভাবে এলপি গ্যাসের দর এপ্রিলে (১২ কেজি) গিয়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৪৩৯ টাকা।
এপ্রিল মাসে (সৌদি আরামকো) সর্বোচ্চ দর ওঠে প্রতি টন প্রপেন ৯৪০ ও বিউটেন ৯৬০ ডলার। ২০১৪ সালের পর আর কখনও এত বেশি দরে এই পণ্য বেচাকেনা হয়নি।
মে মাসে কমে যথাক্রমে টনপ্রতি দাম দাঁড়ায় ৮৫০ ও ৮৬০ ডলার। চলতি মাসে গড় মূল্য ৬৬৩ ডলার ৫০ সেন্টে নেমে এসেছে। তবে ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দরের কারণে দাম কমার হারে সুবিধা পাচ্ছেন না ভোক্তারা।
গত বছরের ১২ এপ্রিলের আগে পর্যন্ত এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়, আমদানিনির্ভর এই জ্বালানির দাম নির্ধারণে সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তি হিসেবে ধরা হবে। সৌদির দর ওঠা-নামা করলে ভিত্তিমূল্যও ওঠা-নামা করবে। অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত থাকবে। ঘোষণার পর থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দর ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি।