পুঁজিবাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগের প্রক্রিয়া আরও একটু সহজ করল বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্বে পরিবর্তন আসার পর পুঁজিবাজারবান্ধব নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণের আলোচনার মধ্যে এই কাজটি করা হলো।
বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রবাসীদের জন্য ব্যাংক হিসাব খোলা সহজ করে সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক খাতের গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) পরিচালক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠি বাংলাদেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলেও ব্যাংক হিসাব খোলার জটিলতা দীর্ঘদিন ধরে প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করে আসছিল। যে কারণে প্রবাসীরা ইচ্ছা সত্ত্বেও বিনিয়োগ করতে পারছিলেন না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রবাসীদের ব্যাংক হিসাব খোলার ক্ষেত্রে কাগজপত্র বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসের সত্যায়নের শর্ত আরোপ করা হয়ে থাকে। কিন্তু বিএফআইইউর কোনো নির্দেশনায় এই শর্তের কথা উল্লেখ নেই। তাই প্রবাসীদের ব্যাংক হিসাব খোলার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দূতাবাস থেকে সত্যায়নের দরকার নেই।
এই সিদ্ধান্ত অবলিম্বে কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে সার্কুলারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নির্দেশনার মাধ্যমে প্রবাসীদের দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ সহজ হয়েছে বলে মনে করছেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। কারণ হিসেবে তারা জানান, ব্যাংক হিসাব খোলার জটিলতার কারণে অনেকেই বিনিয়োগ করতে পারছিলেন না।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম বলেন, ‘প্রবাসীদেরকে দেশের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ইতোমধ্যে রোড শো করে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারপরেও ব্যাংক হিসাব খোলার জটিলতার কারণে প্রবাসীদের বিনিয়োগ আসছিল না। ওই জটিলতা বাংলাদেশ ব্যাংক গতকালকের নির্দেশনার মাধ্যমে দূর করে দিয়েছে। এতে করে পুঁজিবাজারে প্রবাসীদের বিনিয়োগ বাড়বে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আবদুর রউফ তালুকদারের নিয়োগের পর পুঁজিবাজারসংক্রান্ত নীতিতে পরিবর্তনের আভাস দেখা যাচ্ছে। বিএসইসির দীর্ঘদিনের সুপারিশ অনুযায়ী বাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের হিসাব বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে নির্ধারণের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দেশের আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
বর্তমানে বাজারমূল্য অথবা ক্রয়মূল্যের মধ্যে যেটি বেশি, সেটি ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা বা এক্সপোজার লিমিট ধরা হয়। এটিকে পুঁজিবাজারে দীর্ঘমেয়াদি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি বাধা হিসেবে ধরা হয়।
এর পাশাপাশি বন্ডে বিনিয়োগকেও ব্যাংকের বিনিয়োগসীমার বাইরে রাখার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মত জানতে চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ফজলে কবিরের গভর্নর থাকাকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিএসইসির এই দুটি সুপারিশের বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
এর আগে ১৯ বছর পর এক কর্মকর্তার দপ্তর পাল্টানো হয়, যাকে বাংলাদেশ ব্যাংকের পুঁজিবাজার বিষয়ক রক্ষণশীল নীতির জন্য দায়ী করা হয়ে আসছিল।