সঠিক নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজার নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই মূলধন সরবরাহের উৎস হয়ে উঠতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পদ্মা ব্রিজ অ্যান্ড অপরচুনিটিজ ফর বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট’ শীর্ষক সেমিনারে সম্মানিত অতিথির (গেস্ট অব অনার) বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারটির আয়োজন করে গ্রিন ডেল্টা ক্যাপিটাল লিমিটেড। এতে সহায়তা করেছে গ্রিন ডেল্টা ইনস্যুরেন্স ও গ্রিন ডেল্টা সিকিউরিটিজ।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সেলিম উল্লাহ।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা ব্রিজ হয়ে গেছে। এখনই সময় এটি ব্যবহার করে এর সুবিধাগুলো গ্রহণ করা।’
‘এখন আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শুধু ক্যাপিটাল মার্কেট বা মানি মার্কেট নয়, আমাদের অর্থনীতির সব অংশীদারকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘পদ্মার ওই পারে যে জনগোষ্ঠী, তা আমাদের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ প্রায়। যেটি এত দিন সরাসরি সড়কপথে যোগাযোগের বাইরে ছিল। এখন পদ্মা সেতুর কারণে রাজধানীর সঙ্গে ওই অঞ্চলের যোগাযোগ সহজ হওয়ার ফলে অনেক কিছুই ঘটছে।’
উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারের তিনটি কোম্পানি ব্যবসায়িকভাবে ভালো না করাই ওটিসি মার্কেটে লেনদেন করছে। চায়নিজ ইনভেস্টররা এগুলো অধিগ্রহণ করতে চান। কেন তারা এটি গ্রহণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করছে তা জানতে চাইলে তারা জানিয়েছেন, তারা তিনটি কারণে কিনতে চান। লোকাল মার্কেট ফিসারিজ ইন্ডাস্ট্রিজ, স্যামন মাছ এবং চিংড়ির বিজনেস।’
‘এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ওই সব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা অর্থ ফিরে পাবেন। এভাবে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলছে।’
পদ্মা সেতু বাস্তবায়নের ফলে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এর জন্য কর্মসংস্থান ও অবকাঠামো উন্নয়নে অর্থের জোগান পুঁজিবাজার থেকে হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দেশের পুঁজিবাজারের অগ্রগতি সম্পর্কে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘আমাদের প্রথম সুকুক বন্ড ইতোমধ্যে ট্রেড হচ্ছে। আশা করছি, আগামী মাসের মধ্যে চিটাগাং স্টক এক্সচেঞ্জ কমোডিটি এক্সচেঞ্জের কার্যক্রম শুরু করতে পারবে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন গ্রিন ডেল্টা ক্যাপিটাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান নাসির এ চৌধুরী।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রফিকুল ইসলাম সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর অনুষ্ঠিত হয় প্যানেল আলোচনা। প্যানেল মডারেটর হিসেবে ছিলেন একাত্তর মিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক।
প্যানেল আলোচক হিসেবে অংশ নেন চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আমিন ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানের শেষে ভোট অব থ্যাংকস দেন গ্রিন ডেল্টা ইনস্যুরেন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফারজানা চৌধুরী।