অন্যাবশক বাতি না জ্বালানো, বৈদ্যুতিক পাখা, এসি ও গাড়ির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার বন্ধসহ ১৪ দফা নির্দেশনা দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআর ও এর অধীন সব দপ্তরকে মঙ্গলবার এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের চলমান ব্যয় সংকোচনের অংশ হিসেবে সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধন মেনে চলতে এ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআরের এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান।
এনবিআর এক আদেশে বলেছে, চলমান বৈশ্বিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ এবং জ্বালানি খাতে ২০ শতাংশ খরচ সাশ্রয়ে এই মিতব্যয়িতা চর্চার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
খরচ কমাতে দাপ্তরিক কাজে কাগজসহ সরঞ্জামাদির সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মিতব্যয়িতা নিশ্চিত করার কথাও বলেছে এনবিআর।
এনবিআর বলেছে, কাগজের খরচ কমাতে উভয় পৃষ্ঠায় প্রিন্ট করতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় প্রিন্ট পরিহার করতে হবে।
বর্তমানে এনবিআরের অধীনে ভ্যাট, কাস্টমস ও আয়করসহ সারা দেশে মাঠ পর্যায়ে প্রায় সাত শতাধিক অফিস রয়েছে। আর জনবল ৬ হাজারের বেশি।
নির্দেশনাগুলোর মধ্যে অন্যতম- অফিস কক্ষে অবস্থান না করলে কক্ষের বৈদ্যুতিক পাখা, বাতি, এসি, টেলিভিশন ইত্যাদি বন্ধ নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়া রয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহারে সর্বোচ্চ মিতব্যয়িতা নিশ্চিত করা; অফিস কক্ষ, অফিস করিডর, সম্মেলনকক্ষসহ অন্যান্য স্থানে অনাবশ্যক বাতি না জ্বালানো; এসির তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে না রাখা; অপ্রয়োজনীয় আলোকসজ্জা পরিহার করা; গাড়ির জ্বালানি খরচ কমানোর জন্য গাড়িতে এসির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা; গাড়ির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার পরিহার করা ও গাড়ির জ্বালানি বাবদ খরচ বিদ্যমান খরচ থেকে ২০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যে অফিস প্রধানের নিয়মিত তদারকি করা।
সব সভা যতদূর সম্ভব অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এনবিআরের কর্মচারীদের অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশে ভ্রমণ নিরুৎসাহিত করা ও দাপ্তরিক কাজে কাগজসহ সরঞ্জামাদির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
এদিকে একই দিনে অপর এক নির্দেশনায় দেশের সব ব্যাংককে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির খরচ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে ব্যাংকগুলোকে সাশ্রয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলোকে চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত পেট্রল, ডিজেল, অকটেন, গ্যাস, লুব্রিকেন্ট বাবদ বরাদ্দ করা অর্থের খরচ ১০ শতাংশ কমাতে হবে।
আর আগামী বছরের প্রথম ৬ মাসে (জানুয়ারি-জুন) কমাতে হবে আরও ১০ শতাংশ খরচ। তাতে জ্বালানি বাবদ আগামী এক বছরে ব্যাংকগুলোকে ২০ শতাংশ খরচ কমাতে হবে।
একইভাবে সাশ্রয়ী হতে হবে বিদ্যুৎ খরচের ক্ষেত্রেও। আগামী এক বছরে প্রতিটি ব্যাংককে এ খাতে খরচ কমিয়ে আনতে হবে ২৫ শতাংশ। চলতি বছরের বাকি ছয় মাস ও আগামী বছরের প্রথম ছয় মাসে আনুপাতিক হারে (অর্থাৎ সাড়ে ১২ শতাংশ করে) এ খরচ কমাতে হবে। জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খরচ কমিয়ে ব্যাংকগুলো যে অর্থ সাশ্রয় করবে, তা অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না বলেও নির্দেশনায় জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও জানিয়েছে, এ দুই খাতে খরচ কমানোসংক্রান্ত তথ্য ও দলিলপত্র ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল ব্যাংক পরিদর্শনে গিয়ে এ-সংক্রান্ত তথ্য ও দলিলপত্র দেখতে চাইলে তা সরবরাহ করতে হবে।