পুঁজিবাজারের অস্থিরতা রোধে বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ডিলার অ্যাকাউন্টের বিনিয়োগের ওপর নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসি।
এসব অ্যাকাউন্টের টাকা কোথায়, কী পরিমাণ বিনিয়োগ করা আছে তা রোববার থেকে পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোর ডিলার অ্যাকাউন্টের টাকাগুলো আমাদের খোঁজ নিতে হচ্ছে যে, এরা কোথায় বিনিয়োগ করে বসে আছে?’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক সময় দেখি তারা মাঝে মাঝে ইনঅ্যাক্টিভ থাকে। এ জন্য দেখছি যে, তারা ক্যাপিটাল মার্কেট না অন্য মার্কেটে বিনিয়োগ করছে। এটাই আমরা একটু ওয়াচ করব।’
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে দেশের পুঁজিবাজার। ব্যয় সংকোচ ও সাশ্রয়ে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ভালোভাবে গ্রহণ করতে পারেননি বিনিয়োগকারীরা।
দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এমন শঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে সেল প্রেসার বাড়াচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। যার কারণে স্থিতিশীল আসছে না পুঁজিবাজারে।
বিএসইসি সূত্র বলছে, উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের লক্ষে গত বৃহস্পতিবার বিএসইসি কার্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে ৩২ জন অ্যাসেট ম্যানেজারের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকে সেল প্রেসার না বাড়িয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে অ্যাসেট ম্যানেজারদের বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারেও অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলাপ করেছি। তাদের বলেছি, প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি ট্রেড হচ্ছে। আপনারা সেল অর্ডার দিয়ে রাখছেন এক থেকে দেড় হাজার কোটি। তাহলে বাজার কীভাবে ঠিক হবে? আপনারা দুই-চারটা দিন ধৈর্য ধরেন। এমনিতেই বাই প্রেসার উঠে যাবে। এত সেল প্রেসার দিয়ে রাখলে কি আমরা হ্যান্ডেল করতে পারি?’
অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘সাত দিন সেল প্রেসার কম দিলেই বাজার ঠিক হয়ে যাবে। এটা তো ডে ট্রেডারের বাজার না। লং টার্ম ইনভেস্টমেন্টের জায়গা। কিন্তু এটা হতে দেয়া হচ্ছে না। ডেইলি সেল প্রেসার বাড়িয়ে প্যানিক করে।’
বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত হয়ে সেল প্রেসার না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘পুঁজিবাজারের নিজেদের কোনো সমস্যা নেই। অর্থনৈতিক অস্থিরতায় প্যানিকড হয়ে সেল প্রেসার বাড়ানোর জন্যই এমন হয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে সেল প্রেসার না বাড়ালে এক সপ্তাহের মধ্যেই ঠিক হবে যাবে।’