বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

১৪ টাকা কমেই মিলছে সয়াবিন

  •    
  • ২২ জুলাই, ২০২২ ১২:২৩

কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী ওমর ফারুক বলেন, ‘প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল আমরা ১৮৫ টাকায় বিক্রি করছি। এ ছাড়া ২ লিটার ৩৭০ টাকা, ৩ লিটার ৫৫৫ টাকা এবং ৫ লিটারের বোতল ৯১০ টাকায় বিক্রি করছি।’

সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৪ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হয়েছে। নির্ধারিত মূল্যেই তেল কিনতে পারছেন ক্রেতারা।

বিক্রেতাদের অনেকে বলছেন, আরও আগে থেকেই তারা নতুন নির্ধারণ করা দামে তেল বিক্রি করছেন।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকায় দেশেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা কমানো হয়। লিটারে ৬ টাকা কমানো হয় পাম অয়েলের দামও।

বাজারে ভোক্তা পর্যায়ে বৃহস্পতিবার থেকেই হ্রাসকৃত মূল্য কার্যকর হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনের নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম মোল্লা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন দাম অনুযায়ী এখন থেকে দেশে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৮৫ টাকায় এবং খোলা সয়াবিন বিক্রি হবে ১৬৬ টাকায়। একইভাবে পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হবে ৯১০ টাকায়। এ ছাড়া তিন লিটার সয়াবিন ৫৫৫ টাকা এবং ২ লিটার ৩৭০ টাকায় বিক্রি হবে। পাম অয়েলের প্রতি লিটার বিক্রি হবে ১৫২ টাকায়।

শুক্রবার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন।

কারওয়ান বাজারের আল্লাহর দান জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী ওমর ফারুক বলেন, ‘প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল আমরা ১৮৫ টাকায় বিক্রি করছি। এ ছাড়া ২ লিটার ৩৭০ টাকা, ৩ লিটার ৫৫৫ টাকা এবং ৫ লিটারের বোতল ৯১০ টাকায় বিক্রি করছি।’

তিনি বলেন, ‘শুধু গতকাল থেকে নয়, গত কয়েক দিন থেকেই আমরা লিটারপ্রতি ১৪ টাকা কমিয়ে কাস্টমারদের তেল দিচ্ছি।’

শাহ মিরান স্টোরের মামুন বলেন, ‘অল্প কিছু তেল বিক্রি করি। তার পরেও প্রতি পাঁচ লিটারের বোতল ৯১০ টাকায় বিক্রির কথা বলা হলেও আমি বিক্রি করছি ৯০০ টাকায়।’

নতুন নির্ধারণ করা দামের চেয়েও কিছুটা কমে তেল বিক্রি করছেন বলে দাবি করেন হাজি স্টোরের কামাল গাজী। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন থেকেই কম দামে তেল বিক্রি করছি; বরং নির্ধারিত দামের চেয়ে আরও দুই-এক টাকা কমেই দিচ্ছি।’

নতুন নির্ধারিত দামের চেয়েও কয়েক টাকা কমে তেল বিক্রির দাবি করেন আলম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নূর আলম। তিনি বলেন, ‘নতুন তেল না আনলেও যে তেল আছে, ওইটারই রেট কমিয়ে বিক্রি করছি।’

ক্রেতা জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘৫ লিটার তেলে ৯১০ টাকা রাখল। দাম কমালেও আমি বলব, আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় সেভাবে কমায়নি। তেলের দাম যে স্তরে উঠেছিল, সেখান থেকে প্রায় ৪০ শতাংশ দাম কমে গেছে, কিন্তু আমাদের বাজারে কমানো হয়েছে ৭ শতাংশ। তাহলে এটা কি কমানো বলে?’

ফ্রেশ তেলের ডিলার মিলু স্টোরের বিপ্লব চন্দ্র পাল বলেন, ‘আমরা পাইকারিভাবে প্রতি পাঁচ লিটারের বোতল ৮৯০ টাকা, তিন লিটারের ৫৪৩ টাকা, দুই লিটারের ৩৬২ টাকা এবং এক লিটারের বোতল ১৮১ টাকায় বিক্রি করছি। আবার কখনও কখনও এর চেয়ে দুই-এক টাকা কমেই দিচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘এই তেল খুচরা বিক্রেতারা বিক্রি করবেন যথাক্রমে ৯১০, ৫৫৫, ৩৭০ ও ১৮৫ টাকায়।’

বিপ্লব বলেন, ‘মালের সরবরাহ রয়েছে। যেদিন থেকে কমেছে, সেদিনই মালের গাড়ি চলে এসেছে। আমরা কম দামেই মাল সরবরাহ করছি। কোনো সংকট নেই।’

সিটি গ্রুপের সান তেলের ডিলার বিসমিল্লাহ স্টোরের মঞ্জুর বলেন, ‘আমরা পাঁচ লিটারের বোতল ৮৮০ টাকা ও এক লিটারের বোতল ১৮০ টাকায় বিক্রি করছি।’

নতুন দামে তেলের সরবরাহ রয়েছে বলে জানান এই পাইকারি বিক্রেতা।

এদিকে নতুন দাম কার্যকর হচ্ছে কি না তা যাচাইয়ে বাজারে অভিযান চালাবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন সংস্থাটির মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।

তিনি জানান, ভোক্তা পর্যায়ে যাতে দ্রুত নতুন দামের সুফল মেলে, সে লক্ষ্যে অভিযান চালাবে অধিদপ্তর। এই অভিযানে কোম্পানিগুলো নতুন দামে তেল সরবরাহ করছে কি না এবং বিক্রেতারা সেটি রাখছে কি না, তা দেখা হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদ পরীক্ষা করা হবে।

গত ২৬ জুন দেশে ভোজ্যতেলের দাম কমানো হয়। ওই সময় প্রতি লিটার সয়াবিনে ৬ টাকা কমানো হয়। সে অনুযায়ী বোতলজাত প্রতি লিটার সয়াবিনের দাম নির্ধারণ করা হয় ১৯৯ টাকা। খোলা সয়াবিনের দাম ঠিক করা হয় ১৮০ টাকা। আর আগের দাম ১৫৮ টাকায় পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছিল।

এর আগে রোববার ভোজ্যতেলের দাম কমানোর সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। তিনি বলেন, ‘দেশে ভোজ্যতেলের দাম আরেক দফা কমছে।’

আন্তর্জাতিক বাজার দরের প্রেক্ষাপটে দেশে দাম কমার এই হারের যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে বাণিজ্য সচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের দামে অস্থিরতা না থাকলে এবার দাম কমানোর রেশিও আরও বাড়তে পারত। আগে এক ডলারে যে টাকা পাওয়া যেত, এখন তার চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে। এর প্রভাব তেলের দামেও পড়েছে। ফলে চাইলেও দাম আরও কমানো সম্ভব হয়নি।’

তপন কান্তি ঘোষ দাবি করেন, তেলের দাম কমা-বাড়া একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমার এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে আগামীতে দেশে ভোজ্যতেলের দাম আরও কমানো হবে।

সয়াবিন আমদানি হয়ে থাকে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মতো দূরের দেশগুলো থেকে। ওইসব বাজার থেকে তেল আনতে ৪০ থেকে ৫০ দিন সময় লাগে। ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে তার প্রভাব পড়তে দেরি হয়। আবার দেশে যখন কমে আসে তার সুফল পেতে না পেতেই দেখা যায় আন্তর্জাতিক বাজারে আবার বেড়ে গেছে।

অপরদিকে পাম অয়েল আমদানি হয় ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে। পাম অয়েল দেশে আসতে সময় কম লাগলেও বিশ্ববাজারে এতদিন সয়াবিনের উচ্চ মূল্যের কারণে তেলটির চাহিদা বেড়ে গিয়েছিল। ইন্দোনেশিয়া রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর আন্তর্জাতিক বাজারে পাম তেলের দামও কমে আসে, তবে সে তুলনায় দেশে দাম কমেছে কম হারেই।

এ বিভাগের আরো খবর