বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

দেশের সব কনটেইনার ডিপো অগ্নিঝুঁকিতে: সিপিডি

  •    
  • ২০ জুলাই, ২০২২ ২২:৫৯

সিপিডি বলেছে, বর্তমানে যে পরিমাণ রাসায়নিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে তা রক্ষণাবেক্ষণ ও অগ্নিনিরাপত্তায় রয়েছে। এক্ষেত্রে রাসায়নিক ডিপোগুলো বেশি অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর।

দেশের সব কনটেইনার ডিপো ও বন্দর অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি। সংস্থাটি বলেছে, রাসায়নিক পণ্য রপ্তানি ও অগ্নিদুর্ঘটনা রোধে যথাযথ সক্ষমতা নেই।

সিপিডি বলেছে, বিপজ্জনক রাসায়নিকের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় হাইড্রোজেন পার অক্সাইড। এই রাসায়নিক হ্যান্ডলিংয়ে দুর্বলতার কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম টার্মিনাল ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড ও ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এই দুর্ঘটনায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

বুধবার রাজধানীর ধানমণ্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘রাসায়নিক ও বিপজ্জনক পণ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে শিল্প নিরাপত্তা: চট্টগ্রামের ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) দুর্ঘটনার অভিজ্ঞতা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিমত তুলে ধরে সিপিডি।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।

সিপিডি বলছে, দেশ যত উন্নয়নের দিকে যাবে রাসায়নিকের ব্যবহার তত বাড়বে। তবে বর্তমানে যে পরিমাণ রাসায়নিক পণ্য রপ্তানি হচ্ছে তা রক্ষণাবেক্ষণ ও অগ্নিনিরাপত্তায় অনেক ঘাটতি রয়েছে। এক্ষেত্রে তারা রাসায়নিক ডিপোগুলো থেকে বেশি অগ্নিঝুঁকি দেখছে বন্দরগুলোতে। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর।

সিপিডির তথ্য অনুযায়ী, দেশে যতগুলো কনটেইনার ডিপো রয়েছে তা দিয়ে মোট রপ্তানির মাত্র ১৯ শতাংশ রাসায়নিক রপ্তানি হয়। বাকি ৮১ শতাংশ রপ্তানি হয় বন্দরগুলো দিয়ে।

এজন্য বন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমিক নিরাপত্তা ও অগ্নিনিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।

সংবাদ সম্মেলনে খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে রাসায়নিকজনিত অগ্নিকাণ্ড কম ছিল। মূলত ২০১০ সালের পর তা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বেড়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে অগ্নিনিরাপত্তা বাড়েনি। সীতাকুণ্ডের ঘটনা তার বড় উদাহরণ। দুর্ঘটনার পর আমরা জানতে পারলাম সংশ্লিষ্টদের চরম দায়িত্বহীনতার কথা। এমনকি ফায়ার সার্ভিস কর্মীরাও জানতেন না ডিপোতে কী ধরনের পণ্য মজুদ রয়েছে। এই না-জানার কারণে ওই দুর্ঘটনায় ১২ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মীও মারা গেছেন।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশে ক্রমাগত শিল্পায়নের পাশাপাশি রাসায়নিকের ব্যবহারও বাড়ছে। বিভিন্ন কারখানায় কাঁচামাল হিসাবে রাসায়নিকও ব্যবহার হচ্ছে। শিল্পায়নের এই উন্নতি রাসায়নিক দুর্ঘটনা বাড়াতে পারে। রাসায়নিক উৎপাদন, সংরক্ষণ ও পরিবহনে কঠোর নজরদারি ও বিদ্যমান আইন সংস্কারের পরামর্শ দেন তিনি।

সংস্থাটির তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী দেশে রাসায়নিক তৈরির ২৫১টি কোম্পানি রয়েছে। এসব কোম্পানিতে ৩৩ হাজার ৬৬০জন কর্মী কাজ করছে। এসব কারখানায় কর্মীদের যে ধরনের অগ্নিনিরাপত্তা থাকার কথা তা নেই।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘সীতাকুন্ডের ঘটনা প্রমাণ করে যে আমাদের ফায়ার সার্ভিসের রাসায়নিক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা নেই বললেই চলে।’

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ের চাহিদার কারণে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে শিল্পায়নের কেন্দ্র হয়ে উঠবে। বাংলাদেশও ইতোমধ্যে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন ধরনের অঞ্চল গড়ে তুলেছে। এগুলো শিল্পায়নে বড় ভূমিকা রাখবে।’

সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে বিস্ফোরণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ডিপোর ২৭টি কনটেইনারে বিপজ্জনক রাসায়নিক হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ছিল। সেগুলোর মধ্যে ১৫টি বিস্ফোরিত হয়েছে। রাসায়নিকের তথ্য না জানা এবং সে ধরনের প্রস্তুতি না থাকায় সেখানে ১২ জন অগ্নিনির্বাপক কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।’

জনবসতির বাইরে রাসায়নিক হ্যান্ডেলিংয়ের ব্যবস্থা করা, রাসায়নিক সম্পৃক্ত সব মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়, ডিপোতে পর্যাপ্ত অগ্নিনিরাপত্তা সরঞ্জাম রাখা, রাসায়নিক থাকা ডিপোকে রেড ক্যাটাগরিতে চিহ্নিত করাসহ বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেছে সিপিডি।

এ বিভাগের আরো খবর