মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ডলার সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।
বুধবার শেরে বাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আইএমএফের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি দল পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দেসহ সংশ্লিষ্টরা। এটি মূলত আইএমএফের আর্টিকেল ফোর মিশনের দল।
দলটি বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, ইআরডি ইত্যাদি সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
শামসুল আলম বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। সেক্ষেত্রে যে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন আমরা তা সংস্থাটির কাছে তুলে ধরেছি। আইএমএফও সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
কোন খাতে সহায়তা চেয়েছেন- এমন প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আইএমএফ বাজেট সাপোর্ট দেবে। বাজেটের টাকা যে কোনো খাতে খরচ করা যায়। তবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও মানবসম্পদ উন্নয়নের বিষয়ে আমরা সহায়তা চেয়েছি।
‘কতটুকু সহায়তা চাই তা সচরাচর জানতে চায় আইএমএফ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমরা সার্বিক বিষয়ে তাদের বলেছি। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে ব্যাখ্যা করেছি। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রকল্প বাস্তবায়নে অগ্রগতি নিয়ে বলেছি। বিশেষ করে মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের অর্থের প্রয়োজন।’
আইএমএফ ডলার সংকটের কারণ জানতে চেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডলার সংকট বেশিদিন থাকবে না। কারণ গত বছর তিন লাখ শ্রমিক বিদেশে গিয়েছিল। এবার সেটা বেড়ে ৯ লাখ হয়েছে। প্রবাসীরা ডলার পাঠাতে শুরু করলে এই সমস্যা থাকবে না। কয়েক মাসের মধ্যেই তারা রেমিট্যান্স পাঠাবে। তখন সংকট কেটে যাবে।
‘বিলাসবহুল পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছি। ফলে ডলারের সংকট কমে যাবে। আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমে আসছে। আমাদের শিল্প ও সেবা খাত ভালো করেছে। রাশিয়া থেকে গম আমদানির প্রতিবন্ধকতাও থাকবে না।’
আইএমএফ রাজস্ব আয় বাড়াতে বলেছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, করের আওতা বাড়াতে তাগিদ দিয়েছে সংস্থাটি।
আইএমএফের শর্ত প্রসঙ্গে ড. শামসুল আলম বলেন, আইএমএফ শর্ত দিচ্ছে না। তারা শর্তের বিষয়ে উদারতা দেখিয়েছে। সংস্থাটি রাজস্ব আয় বাড়াতে বলেছে। করের আওতা বাড়ানোরও তাগিদ দিয়েছে। আমাদের প্রচুর তহবিল প্রয়োজন।’